শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৭ আগস্ট, ২০২১, ১০:১৯ দুপুর
আপডেট : ২৭ আগস্ট, ২০২১, ০৭:২০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] কুমিল্লার দেবিদ্বারে ধর্ষণচেষ্টা মামলা তুলে না নেওয়ায় স্কুলছাত্রী ও তাঁর পরিবারকে প্রকাশ্যে লাঠিপেটার অভিযোগ (ভিডিও)

শাহিদুল ইসলাম: [২] কুমিল্লার দেবিদ্বারে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে আদালতে দায়ের করা মামলা তুলে না নেওয়ায় অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক কিশোরী (১৪) ও তাঁর মা জেসমিন আক্তার (৩৫), পিতা অটোরিক্সা চালক জামাল হোসেন (৪৫) কে টানা হেচড়া করে ঘর থেকে ধরে এনে সড়কে ফেলে প্রকাশ্যে দিবালোকে কিল, ঘূষি, লাথি ও লাঠিপিটা করে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ঘটনায় স্থানীয়দের সহযোগীতায় আহতদের উদ্ধারপূর্বক চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

[৩] গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলা সুলতানপুর ইউনিয়নের কুরছাপ পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটলেও বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চারদিকে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

[৪] বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) রাতে ভুক্তভোগী কুরছাপ উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া ওই কিশোরীর বাবা মোঃ জামাল হোসেন বাদী হয়ে কুরছাপ গ্রামের একই পরিবারের ৮জনকে অভিযুক্ত করে দেবিদ্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

[৫] অভিযুক্তরা হলেন, মোঃ নুরুল ইসলাম’র পুত্র মোঃ কাউছার (৩৫) ও মোঃ হাসান (২৫), মৃত; আলী হোসেন’র পুত্র মোঃ নুরুল ইসলাম (৬৫), মোঃ কামাল (৫৫) ও মোঃ সফিকুর রহমান (৬০), মোঃ কাউছারের স্ত্রী মোসাঃ নারগিছ (৩০), মোঃ হাসান’র স্ত্রী মোসাঃ আনিকা (২৫), মোঃ কামাল হোসেন’র স্ত্রী মোসাঃ কুলছুম (৪০)। মামলা নং-১৯. তারিখ-২৬/০৮/২০২১ইং।

[৬] সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ৩২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামী মো. হাসানের বড় ভাই কাউছার আহম্মেদ ভিক্টিম ওই কিশোরীর মাকে প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে লাঠিপিটা করছে। এসময় তাকে স্থানীয় কয়েকজন থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে ওই কিশোরীর মা অচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

[৭] মামলার বিবরণ এবং ভুক্তভোগী ওই কিশোরী ও তার মাতা জেসমিন আক্তার’র উপস্থিতিতে ভিক্টিমের বাবা মোঃ জামাল হোসেনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৪ মে বিকাল ৩টায় ওই কিশোরীকে একটি খালি ঘরে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায় হাসান। এ ঘটনা হাসানের চাচী কুলসুম আক্তার দেখে ফেললে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে জানাজানি হয়ে যায়। পরে অচেতন অবস্থায় স্থানীয় লোকজন এসে ওই কিশোরীকে ঘর থেকে উদ্ধার করেন। পরদিন ওই কিশোরীর বাবা মো. জামাল হোসেন কুমিল্লা আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয় হাসানের পরিবার। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর সহযোগিতায় মামলা তুলে নিতে ওই কিশোরীর পরিবারকে চাপ প্রয়োগসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকী দিতে থাকে। পরে গত ২০আগস্ট দুুপুরে হাসানের বড় ভাই কাউছার ওই কিশোরীর মাকে রাস্তায় পেয়ে প্রকাশ্যে লাঠিপিটা করে। নির্যাতনের এ ভিডিওটি বৃহস্পতিবার স্থানীয় এক যুবক ফেইসবুকে পোস্ট করলে মুহুর্তে তা ছড়িয়ে পড়ে। এতে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

[৮] অভিযুক্ত মোঃ হাসান জানান, আদালতে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলার ঘটনাটি ছিল মিথ্যা সাজানো। জামাল চাচার সাথে আমাদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ওরা এ মিথ্যা মামলা দায়ের করে আমাদের দূর্বল করতে চেয়েছিল। মিথ্যা মামলা তুলে না নেয়ায় রাগের মাথায় চাচির উপর হামলা করেছি।

[৯] এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আরিফুর রহমান জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়েছি। ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর বাবা মোঃ জামাল হোসেন দেবিদ্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। দোষীদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হবে। এঘটনার পূর্বে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলাটিরও তদন্ত চলছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়