মুরাদ হাসান, মারুফ হাসান: [২] কুড়িগ্রাম থেকে শাহনাজ পারভীন জানান, উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে প্লাবিত হয়ে পড়েছে ধরলা অববাহিকায় নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে গেছে এসব এলাকার রোপা আমন ক্ষেতসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত।
[৩] রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি আরও ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে ফরিদপুর সদরের তিনটি ইউনিয়নের ৪১টি গ্রামের ৬ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বাড়তে থাকায় এসব এলাকায় ভাঙনও দেখা দিয়েছে।
[৪] জেলা প্রতিনিধি সোহাগ হাসান জানান, সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহররক্ষা বাঁধ পয়েন্টের গেজ মিটার (পানি পরিমাপক) আব্দুল লতিফ ও কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টের ওমর ফারুক জানান, যমুনা নদীর পানি শহররক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার মাত্র ৬ সেন্টিমিটার ও কাজিপুরে ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
[৫] জেলা প্রতিনিধি জাহিদ চন্দন জানান, মানিকগঞ্জে শিবালয় উপজেলার যমুনা নদীর আরিচা পয়েন্টের পানি বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আরিচা পয়েন্টের পানির স্তর পরিমাপক মো. ফারুক হোসেন বলেন, যমুনা নদীর আরিচা পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করছে পানি।
[৬] এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও পদ্মা নদ- নদীগুলোর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও শরিয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। পাশাপাশি আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ পয়েন্ট এবং ধলেশ্বরী নদীর এলাসিন পয়েন্টের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। তবে তিস্তা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে। কমতে পারে গঙ্গা ও সুরমা-কুশিয়ারা নদীগুলোর পানি, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।
[৭] এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর কম সক্রিয় ও উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে দুর্বল অবস্থায় আছে। এসবের প্রভাবে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ী ভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি ধরণের ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
[৮] এদিকে নদী বন্দরগুলোর জন্য এক সতর্কবার্তায় বলা হয়, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, বগুড়া, বরিশাল, কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলগুলোর উপর দিকে দক্ষিণ -দক্ষিণ পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী ভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এজন্য এসব এলাকার বন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :