মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ [২] কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার এক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরোদ্ধে দশম শ্রেণির মেধাবি ছাত্রীকে ইভটিজিং করার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গত ১৪/০৮/২০২১ইং শ্রীকাইল কৃষ্ণ কুমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ শরিফুল ইসলাম ( সবুজ) এর বিরোদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন দশম শ্রেণি এক ছাত্রীর মা।
[৩] অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গতবছর শ্রীকাইল কে কে উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বাসায় গিয়ে বিজ্ঞান বিষয়ে প্রাইভেট পড়াতেন একই স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের সহকারি শিক্ষক শরিফুল ইসলাম। প্রথম দিন থেকেই ছাত্রীকে নানা ভাবে অশুভ শাররীক ইঙ্গিত প্রদর্শন করে যৌন হয়রানীর চেষ্টা ও ইভটিজিং করতেন। বিষয়টি ছাত্রী তার অভিভাবকদের জানান এবং তারা ঐ শিক্ষককে বাসায় এসে প্রাইভেট পড়াতে নিষেধ করেন। কিন্তু কিছুদিন পরে ঐ শিক্ষক পুনঃরায় ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করে ছাত্রীর পরিবারে ফোন করে অভিভাবককে বিরুক্ত করে।
[৪] গত নভেম্বর ২০২০ সালে উপজেলা পর্যায়ে বিজ্ঞান কূইজ প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণের লক্ষে স্কুলে প্রস্তুতিমূলক ক্লাসে ঐ ছাত্রী অভিযুক্ত শিক্ষকের ভাষা ও অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে ইভটিজং এর শিকার হয়। এমনকি স্কুলের এসাইনমেন্ট গ্রহণের সময় বিদ্যালয়ে ছাত্রী উপস্থিত হলে ,তার প্রতি কু-দৃষ্টিপাত করে বলে অভিভাবক জানান। উক্ত বিষয়টি নিয়ে প্রথমে এই শিক্ষকের বিরোদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ কামাল উদ্দিন সরকারের নিকট ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার ঐ সময় মৌখিক অভিযোগ করেছিলেন। তবে কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ঐ সময় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেছেন।
[৫] প্রায় এক বছর পূর্বে করা মৌখিক অভিযোগের পরেও অভিযুক্ত শিক্ষক নিজকে সংশোধন বা নিভৃত রাখতে পারেনি। সম্প্রতি তার ব্যবহৃত ফেইসবুক (Pai Sobuj) নামের আইডি উক্ত ছাত্রীর ছবি ব্যবহার করে মনগড়া পোস্ট করেন এবং কতিথ নাম দিয়ে ছাত্রী ও অভিভাবককে ইঙ্গিত করে বিভিন্ন বিতর্কিত পোস্ট দিয়েছেন। যার ফলে মেধাবি শিক্ষার্থী ও তার পরিবার মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। বিষয়টি শিক্ষার্থীর পরিবারের নজরে আসার পর পোস্টের স্ক্যান কপিসহ ১৪ আগস্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
[৬] শ্রীকাইল কে কে উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ কামাল উদ্দিন সরকার বলেন: গত ১৪ আগস্ট বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবকের নিকট থেকে সহকারী শিক্ষক মোঃ শরিফুল ইসলামের বিরোদ্ধে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানী চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমরা সভা করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরোদ্ধে ১৮ই আগস্ট শোকজ পত্র পাঠিয়েছি, সাত কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগের সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
[৭] অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষক মোঃ শরিফুল ইসলামের সাথে মুঠফোনে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, শোকজ পেয়েছেন এবং যথা সময়ে জবাব দিবেন। তাঁর বিরোদ্ধে অভিযোগ সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন।
[৮] ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে আরো জানাযায়, আভিযোগ দেওয়ার পর ও শোকজ নোটিশের পেয়ে উক্ত শিক্ষকের ফেইসবুক আইডি থেকে অভিযোগকারী পরিবারের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ পোস্ট ধারাবাহিক ভাবে করে যাচ্ছে। এই বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে যথাযত পদক্ষেপ না নিলে তারা আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানান।
আপনার মতামত লিখুন :