শিরোনাম
◈ আবদুল্লাহ জাহাজে খাবার থাকলেও সংকট বিশুদ্ধ পানির ◈ কিছুটা কমেছে পেঁয়াজ ও সবজির দাম, বেড়েছে আলুর ◈ দেশের ৯২ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় কোনো ভাষা জানেন না, সময় এসেছে তৃতীয় ভাষার ◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র

প্রকাশিত : ১৯ আগস্ট, ২০২১, ০৪:২৮ সকাল
আপডেট : ১৯ আগস্ট, ২০২১, ০৪:২৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডেঙ্গু নিয়ে মহাবিপদ, মশক নিধনই প্রধান সমাধান: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

নিউজ ডেস্ক: করোনা মহামারীর ভয়াবহতম বিস্তারের মধ্যে বাড়তি উদ্বেগ হিসেবে এসেছে ডেঙ্গু জ্বর। বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশের মানুষ এমনিতেই দিশেহারা। এমন পরিস্থিতিতে নতুন মহাবিপদ ডেঙ্গু। দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আর নতুন রোগী পাওয়া গেছে ৩০৬ জন। এরমধ্যে ২৭৩ জন ঢাকার। চলতি বছরের ১৪ জুলাই প্রথম ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুর খবর আসে। এরপর গতকাল বুধবার নাগাদ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশে এ বছর চিকিত্সা নেওয়া ৬ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫ হাজার ৭৩৩ জন। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিত্সা প্রটোকল আপডেট করেছে বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন। আপডেট প্রটোকলের ব্যাপারে ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। ডেঙ্গুকে দৃশ্যমান শত্রু হিসেবে উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা বলেন, ডেঙ্গু মশাবাহিত একটি রোগ। ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে হলে এডিস মশা নিধন করতে হবে। মশার উত্পত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। এক্ষেত্রে অবহেলা করা হলে সামনে মহাবিপদ দেখা দেবে। ইত্তেফাক

বাংলাদেশে ২০১৯ সালে ডেঙ্গু সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। সেই বছর আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়ালেও ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেকটা কম ছিল। গত বছর ১ হাজার ৪০৫ জন রোগী হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিত্সা নেন। চলতি মাসেই ডেঙ্গুতে এর চেয়ে বেশি রোগী আক্রান্ত হওয়ায় জনস্বাস্থ্যের উপর চাপ বাড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর তুলনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অধিদফতরের মুখপাত্র ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গুর যে পরিস্থিতি তাতে অন্য যেকোনও সময়ের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি নয়, কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। এটি অত্যন্ত উদ্বেগের। আমরা মনে করি, এ বিষয় নিয়ে সম্মিলিতভাবে সিটি করপোরেশন, স্থানীয় সরকার এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগ যেভাবে কাজ করছে, এই কাজের গতি বাড়িয়ে দিলে খুব সহজেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব।’

বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা বলেন, ডেঙ্গু বাসায় থাকা এডিস মশার কামড়ে হয়। নগরীর চার পাশের ময়লা-আবর্জনার স্তূপ থাকা, নোংরা ড্রেন পরিষ্কার না করায় চলতি বর্ষা মৌসুমে মশার প্রজনন বেড়ে গেছে। অথচ নগরীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলে এবং মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করলেই মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

কিন্তু নগরী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যাদের দায়িত্ব তারা কি তাদের সেই কর্তব্যকাজ সঠিকভাবে করছে? সিটি করপোরেশনকে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন হতে হবে। জমাটবদ্ধ স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা হয়। তাই ঘরের আশপাশে পানি জমাটবদ্ধ অবস্থায় রাখা যাবে না। এডিস মশা ঘরের ভিতরেই থাকে। দিনের বেলায় কামড়ায়। এগুলো সবাই জানে, তাই সচেতন হলে এর প্রকোপ কমবে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণেও জ্বর যেমন হয়, ডেঙ্গুতেও তাই হয়। করোনা ভাইরাস আর ডেঙ্গুর জোড়া প্রকোপে ব্যাপক মৃত্যু ঠেকাতে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ও এডিস মশার বংশবিস্তার থামাতে জোর দিতে বলছেন তারা।

এ বছর বাংলাদেশে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বেশি হচ্ছে। চোখ, নাক ও ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ, বমি, পেটব্যথা, খাদ্যনালি, মূত্রনালিসহ বিভিন্ন জায়গায় রক্তক্ষরণের উপসর্গ নিয়েই ডেঙ্গুতে আক্রান্তরা হাসপাতালে বেশি আসছে। জ্বর, মাথাব্যথার উপসর্গ অপেক্ষাকৃত কমই পাওয়া যাচ্ছে। বেশিরভাগ রোগীরই রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা ২০ হাজারের কম পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণেই এবারের ডেঙ্গু অন্যবারের চেয়ে আলাদা বলে মনে হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিত্সক অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গু চিহ্নিত একটি রোগ। বর্তমানে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। এটা উদ্বেগজনক। বর্তমানে কারো সর্দি, কাশি ও জ্বর হলে ডেঙ্গু ও করোনা দুটোর পরীক্ষা এক সাথে করতে হবে। ডেঙ্গু হলে প্যারাসিটামল ছাড়া কোন ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া যাবে না। ডাক্তারের পরামর্শে চলতে হবে।

সোসাইটি অব মেডিসিনের সাধারণ সম্পাদক ও মুগদা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, এবার ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। রোগীর রক্তক্ষরণ হচ্ছে, প্লাটিলেট কমে যাচ্ছে। তাই সোসাইটি অব মেডিসিনের পক্ষ থেকে করোনা ও ডেঙ্গুর চিকিত্সা প্রটোকল আপডেট করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ১৩টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজের চিকিত্সকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী শনিবার থেকে ৭ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ চলবে। তিনি বলেন, এবার ডেঙ্গুতে তরুণদের মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। এডিস মশার উত্পত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। জমাট বাঁধা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশার জন্ম হয়। মশা নিধন করতে হবে। এক্ষেত্রে অবহেলা করলে সামনে মহাবিপদ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়