শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্র সরে এলে বিশ্বরাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবে কে: বাইডেন ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ◈ মা হিসেবে পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়ে দেশের ইতিহাসে নাম লেখালেন অভিনেত্রী বাঁধন ◈ আরও তিন মামলায় জামিন পেলেন মামুনুল হক ◈ সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ ◈ তাপপ্রবাহে উচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিশুরা,  বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ ইউনিসেফের ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের 

প্রকাশিত : ১৯ আগস্ট, ২০২১, ০২:৩৮ রাত
আপডেট : ১৯ আগস্ট, ২০২১, ০২:৪৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রেজা আলী পাটোয়ারী: বাফার আফগানিস্তান নিয়ে না ভেবে আসুন নিজ দেশকে নিয়ে ভাবি

রেজা আলী পাটোয়ারী: প্রথমে কইলেন মার্কিনি’রা গেলো কেন? ডোনাল্ড কইলো আইয়া পড়মু। তারে বাহবা দিলেন। এখন বাইডেন তাই করতেছে। তার চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করছেন! আসেন, ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকাই। সবচেয়ে পরিকল্পনা মাফিক ব্রিটিশরা ভারত ছাইড়া গেছিলো। সময়ের এক বছর আগেই। এখানে আমাদের নেতাদেরও অদূর্রশিতা কাজ করেছে। দেড়শো বছরের শোষণ-বঞ্চনাজাত উদ্ভূত পরিস্থিতির বাইরেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী রিহ্যাভের দায়-দায়িত্ব ছিলো ব্রিটিশদের। তা এড়াতে পেরে তারা এক প্রকার হাফ ছেড়ে বেঁচে গিয়েছিলো। ‘লড়ঙ্গে লেঙ্গা’দের হাতে ভারতের এক অংশ তুলে দেওয়ার চেয়ে কি তালেবানদের হাতে আফগানিস্তান তুলে দেওয়া অধিকমাত্রায় গর্হিত কাজ? মার্কিন-ফরাসি-ব্রিট-স্পেনীস’রা যতো জায়গা থেকে পাত্তি গুটিয়েছে সবখানেই অনাচার ঘটেছে।

প্রশ্ন হলো ওই সব স্থানে-ক্ষেত্রে ভারতের মতো নেতৃত্ব ছিলো না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মার্কিনিদের আধিপত্য বেড়ে যায়। তাই পাকিস্তান সৃষ্টিতে মার্কিনিদের সরাসরি হাত না থাকলেও তা’ মার্কিন তথা চীনেরই কাজে লেগেছে। নতুন বাফার চাই। তাই তালেবান। রায়টজাত সমস্যা যাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিলো। যদিও হাজার বছরের ইতিহাসে দেখা যায় বহু পুরোনা সমস্যায় জর্জরিত ছিলো ভারত। তার মধ্যে প্রধান হলো অর্থনৈতিক। ভারত ভাগের ঘোষণা দেওয়ার আগেই ব্রিটদের প্রশাসন শিথিল হয়ে পড়েছিলো। আইন-শৃঙ্খলাতো বটেই। সেই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান ও ভারত যদি স্বয়ংসম্পূর্ণ না হয় যেখানে জিন্নাহ তথা আফ্রিদিদের মনোভাব অনুধাবন করা ছিলো দুঃসাধ্য ব্যাপার। তাদরে সদিচ্ছার ঘাটতিও ছিলো চোখে পড়ার মতো। সেই পরিস্থিতিতে যদি ঘোষণা আসে তবে সংখ্যালঘুরা যে কতল হবে সেটা কোনো রকেট সায়েন্স নয়। হয়েছেও তাই। হিসাব করলে দেখা যাবে যে, যে ক্যালকাটা কিলিংয়ের ওপর ভিত্তি করে এই ভাগ তার পরবর্তী সময়ে ভাগের পরে আরও বেশি পরিমাণে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এক দল লুটেরাদের একটা রাষ্ট্র দিয়ে দিলেই প্রতিবেশী হিসেবে সে সৎ আচরণ করবে সেই ধারণা সর্দারবাই প্যাটেল কোথায় পেয়েছিলেন? গান্ধীজি জওহরকে রাজিও করিয়েছিলেন যেন জিন্নাহকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নেয়। প্যাটেল বাগড়া দিয়েছিলেন। কার্যত জিন্নাহ আর প্যাটেলের অধীনেই ছিলো সকল শক্তিমত্তা। তবে শিবসেনারা সংগঠিত হতে পারেনি। যদি পাড়তো তা হতো আজকের বিজেপি। মুসলিম লীগের সঙ্গে সেয়ানে-সেয়ানে টক্কর হতো। তখন যদি পাকিস্তান হতোই তবে ভারতেও কোনো মুসলিম থাকতো না, পূর্ববঙ্গে তো কোনো হিন্দু নয়-ই।

শুধু দাসদের ওপর টেরিফ ইস্যুতে মার্কিনিরা গৃহযুদ্ধে সামিল ছিলো বহুকাল। এর চেয়েও বড়-প্রধান এবং একমাত্র কারণ ছিল দেশভাগ না হওয়া। প্রাণ বাঁচাতে তড়িঘড়ি করে যা মেনে নেওয়া হলো তাতে কি ভাগ হওয়ার আগের চেয়ে পরের হতাহতের সংখ্যা কম না বেশি! মাইগ্রেশনের সময় বাদ দিয়েও যদি হিসাব করি তবেতো নিত্যদিন লোকজন মরছেই। সর্বোপরি আছে ৩০ লাখ শহীদ ও লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রম। পাঞ্জব মাইনরিটি আর লুটেরা আফ্রিদীদের কাছে গোটা এক দেশ তুলে না দিলে এই পরিস্থিতির শিকার হতো না পূর্ববঙ্গ। জিন্নাহ তো ভাববেই না। নেহরু-প্যাটেলও নয়। কিন্তু কলকাতার দাদারাও যদি ভাবতেন এবং বাংলা ভাগ ঠেকাতেন তাহলে তা সম্ভবপর ছিলো। তারা করলেন কংগ্রেসের দালালি। আর কাউন্টার পার্ট করলো মুসলিম লীগ তথা জিন্নাহ। মওলানা আজাদের বাণী নিরবে কেঁদেছিলো! ‘ঘটি-বাঙ্গাল’ হালকা রসিকতা নয় কিন্তু। এর মূলে নিহিত আছে নিবিড়-নীরব তাচ্ছিল্যতা।

এই নাদানীপনাও বাংলা ভাগের অন্যতম কারণ! নেতাজীর উচ্চতায় যদি কোন বাঙ্গালি নেতা থাকতেন। নতুবা যদি বঙ্গবন্ধুর বয়স আর একটু বেশি থাকতো তবে হয়তোবা ইতিহাস ভিন্নভাবে লেখা হতো। সামাজ্যবাদ চক্র সবল অবস্থায় কোনোদিন নিজদের গুটিয়ে নেয় না। তা ভাববারও প্রশ্ন আসে না। স্বায়ত্বশাসন-স্বাধীনতা প্রদানকালে স্বক্ষমতা অর্জনের সুযোগ-সুবিধা থাকে না। তাই প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে একই পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে। মার্কনিরা আর আমরা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে এবং যুদ্ধ করে সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছি। কানাডা-অস্টেলিয়া-নিউজিল্যান্ড স্বক্ষমতা অর্জনের পরেই পুরোপুরি স্বাধীন হয়েছে যদিও টোকেন হিসেবে এখনো রাণীমাতার প্রতিনিধি মাথার উপরে আছে। মন্দের ভালো। কখনও কনস্টিউশন্যাল ক্রাইসিস হয় না, হবে না। বাকি কলোনিভুক্ত দেশ সবগুলোতেই সমস্যাসংকুল যা তার জন্মজাত। অনেকটা ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’! আমরা মার্কিনিদের মতো হতে পারতাম। কিন্তু হলাম না ঘরকা, না ঘাটকা। মুক্তিযুদ্ধ করে সার্বভৌমত্ব পেলাম কিন্তু ব্রিটিশ-পাকিদের কলোনিয়াল আমলা-আর্মিতন্ত্র রেখে দিলাম। তাই বাফার আফগানিস্তান নিয়ে না ভেবে আসুন নিজ দেশকে নিয়ে ভাবি। ফেসবুক থেকে

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়