শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১৮ আগস্ট, ২০২১, ১২:১৬ দুপুর
আপডেট : ১৮ আগস্ট, ২০২১, ১২:১৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] সিরাজগঞ্জে বর্ষা ঘিরে নৌকা বেচা-কেনার হিড়িক

সোহাগ হাসান: [২] যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপু উপজেলার কৈজুরী হাটে নৌকা বেচা-কেনা জমে উঠেছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতায় মুখর হয়ে ওঠে এই নৌকার হাট। সেই সঙ্গে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কাঠ মিস্ত্রীরা। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নিম্নাঞ্চল হিসেবে পরিচিত শাহজাদপুরের কেজুরী হাটে রেকর্ড সংখ্যক নৌকা বেচা-কেনা হয়ে থাকে। বর্ষাকালে এই উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবে যাওয়ায় ভেঙ্গে পরে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

[৩] প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার যমুনা নদী তীরবর্তী শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী মাদ্রাসা মাঠে বসে নৌকার হাট। এখানে ছোট, বড় ও মাঝারি নৌকা সাজিয়ে বসে থাকেন বিক্রেতারা। নৌকা ও লগি বৈঠা ক্রয় করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসেন ক্রেতারা। ৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা মূল্যের নৌকা বেচাকেনা হচ্ছে এ হাটে। নিত্য নতুন নৌকা তৈরি করে বেচাকেনা হয় এ হাটে।

[৪] শাহজাদপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার পূর্ব দিকে যমুনা নদীর তীরে কৈজুরীতে নৌকার পসরা সাজিয়ে হাট বসছে। এই হাটে বিক্রির জন্য প্রায় কয়েক শতাধিক ডিঙ্গি নৌকা আনা হয়।

[৫] চর-কৈজুরী থেকে হাটে আসা নৌকা ক্রেতা সালাম জানান, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়ির চারপাশে পানিতে থই থই করছে। এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে যেতে নৌকাই একমাত্র বাহন। আগেই নৌকা কেনা লাগতো সময়ের অভাবে দেরি হয়েছে।

[৬] একই গ্রামের ব্যবসায়ী মনি ব্যাপারী জানান, শুধু বর্ষা মৌসুমে নৌকা বিক্রি ভালো হয়। বছরের অন্য সময় ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। নৌকার ব্যবসা এখন অনেকটাই মৌসুমী ব্যবসা হয়ে পড়েছে।

[৭] নৌকা বিক্রেতা কোরবান আলী জানান, নৌকা বিক্রি তাদের পৈত্রিক ব্যবসা। বাড়িতেই তাদের কারখানা রয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ থেকেই কিশোর বয়সে বাবার সঙ্গে নৌকা বিক্রি করতে তিনি কৈজুরী হাটে আসতেন। তখন ১০ হাত লম্বা একটি ডিঙি নৌকা ৬শ থেকে ৭শ টাকায় বিক্রি হতো। এখন সেই নৌকা বিক্রি হচ্ছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকায়। বর্ষায় আগের দিনে ডিঙি নৌকার কদর বেশি ছিল। এখন সড়ক পথে যাতায়াত বেড়ে যাওয়ায় নৌকার কদর কমে গেছে। আগে সারা বছর নৌকার চাহিদা থাকত। তাই বিক্রি ভালো হত। বর্তমানে ব্যবসা খুবই মন্দা। মিস্ত্রির মজুরি অনেক বেশি। পৈত্রিক ব্যবসা ছাড়তেও পারছি না। লাভ কম হলেও ব্যবসা ধরে রেখেছি।

[৮] কাঠ মিস্ত্রি কমল সূত্রধর জানান, সপ্তাহে তাদের কারখানা থেকে ৫-৬টি নৌকা হাটে নিয়ে বিক্রি করা হয়। বর্তমানে লোহা ও কাঠের দাম বেড়ে যাওয়ায় নৌকা তৈরিতে খরচ বেড়েছে। নৌকার আকার ও প্রকারভেদে ৬ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। তবে লাভের অংশ আগের থেকে কমে গেছে। সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্রেতারা নৌকা সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখেন। এছাড়াও প্রায় সারা সপ্তাহ জুড়েই কম-বেশি বিক্রি হয় নৌকা।

[৯] ডায়া বাজারের নৌকা তৈরির কারখানার মালিক আসলাম শেখ জানান, কাঠ মিস্ত্রিদের মজুরি ও কাঠের দাম বেড়ে যাওয়ায় নৌকার দাম বেড়েছে। প্রতিটি ডিঙি নৌকার জন্য একজন মিস্ত্রিকে ৭০০ টাকা মজুরি দিতে হচ্ছে। তারপরও এ বছর আগাম নৌকার অডার্র ভালোই পাওয়া যাচ্ছে।

[১০] কৈজুরী হাটের ইজারাদার জানান, পাবনার বেড়া, শৈলজানার চর এবং শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী, চর-কৈজুরী, পাঁচিল, জামিরতা, গুদিবাড়ি রতন দিয়া, ধীতপুর থেকে বহু মহাজন ডিঙি নৌকা বিক্রির জন্য এ হাটে নিয়ে আসে।

[১১] কৈজুরী ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম জানান, প্রতি শুক্রবার এই নৌকার হাট বসে। হাটে বিক্রির জন্য শতাধিক ডিঙি নৌকা আনা হয়। নদীর নাব্য সংকটের কারণে বর্ষার পরপরই নদী পথ হারিয়ে যাচ্ছে। এ সমস্যা দ্রুত সমাধান করা দরকার। সম্পাদনা: হ্যাপি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়