আর রাজী: আফগানিস্তান আমাকে সেই পুরানো কথাগুলোই মনে করিয়ে দিলো : [১] একটি অপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার আরও বড় অপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার আসার পথ প্রশস্ত করে। [২] গণতন্ত্র নিশ্চিত না করে একের পর এক অবকাঠামো নির্মাণ কোনো সরকারকে রক্ষা করে না বরং দেশের ভবিষ্যতকে হুমকিগ্রস্ত করে তোলে। [৩] ছলে-বলে-কলে-কৌশলে নির্বাচনে জেতা সরকার বিপদে পড়লে জনগণ ও সেনাবাহিনী নির্বিকার থাকে আর ক্ষমতাসীনদের খুন হওয়া বা পালিয়ে যাওয়া দেখতে থাকে। [৪] নিজের মুরোদ না থাকলে বিদেশি শক্তি, বিদেশি বুদ্ধি, বিদেশি বিশেষজ্ঞ, বিদেশি বন্ধু; ঘোড়ার আন্ডা ছাড়া আর কিছুই উপহার দিতে পারে না।
[৫] চুরি-চামারি করে ভোটে জেতা সরকার-প্রধান জনগণের নিরাপত্তার ধার ধারে না। সে নিজে দেদার চুরি করে আর যেকোনো সময় পালানোর জন্য হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখে। [৬] কারচুপির নির্বাচনে তৈরি সরকারের বশংবদরা অনিবার্যভাবে চোর হয়, দুর্নীতি করে কিন্তু বিপদে দেশ ছেড়ে পালাতে পারে না। আবার সাধারণ ক্ষমাকেও তারা বিশ্বাস করতে পারে না। [৭] রাষ্ট্র বিপদগ্রস্ত হলে বিমানের উড়ে পালানোর সুযোগও সে দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কপালে জোটে না। [৮] রাষ্ট্র শাসনের অধিকার তারাই পায় যারা তা পাওয়ার জন্য আন্তরিক চেষ্টা করে। আর ক্ষমতা থেকে বিদায়ের বেলাটা তাদের জন্য অবশ্যম্ভাবীভাবে কুৎসিৎ হয় যারা অগণতান্ত্রিকভাবে রাষ্ট্রশাসন করে। [৯] যতো বুদ্ধিমান আর শক্তিমানই হোক না কেন, ইতিহাস কোনো স্বৈরাচারকেই ক্ষমা করে না।
[১০] অপ্রতিনিধিত্বশীল সরকারের কোনো কথাই জনগণ আদতে বিশ্বাস করে না। [১১] সমাজের মধ্যবিত্ত শ্রেণী রাজনীতি সচেতন ও রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকলে রাষ্ট্র বিপদগ্রস্ত হইতে বাধ্য। [১২] রাষ্ট্রের বাহিনীগুলো ‘বিজয় নিশ্চিত’ এ কথা না জানলে কখনই জয়ী হতে পারে না বরং বিপদ দেখলে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। [১৩] নিয়মিত বেতন পাওয়া সেনাবাহিনীর সদস্যদের জানের মায়া অনিয়মিত বেতন পাওয়া বা না পাওয়াদের চেয়ে অনেক অনেক বেশি থাকে। জানের মায়া যার যতো বেশি তার যুদ্ধ জয়ের সম্ভাবনা ততো কম। লেখক : সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
আপনার মতামত লিখুন :