শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৬ আগস্ট, ২০২১, ০৭:০২ বিকাল
আপডেট : ১৬ আগস্ট, ২০২১, ০৭:০৩ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ড. মোহাম্মদ হুসাইন : চীনের তৈরি জেএফ-১৭ যুদ্ধ বিমান কিনে বিপাকে পাকিস্তান

ড. মোহাম্মদ হুসাইন : চায়না ডিজাইনের পাকিস্তান বিমান বাহিনীর জেএফ-১৭ থান্ডার যুদ্ধ বিমান ত্রুটিপূর্ণ ইঞ্চিন নিয়ে এর কার্যক্ষমতা ও সক্ষমতা হারিয়ে জবুথবু অবস্থায় পড়ে আছে।
জেএফ-১৭ “থান্ডার”স্বল্প খরচ, অল্প ওজন এবং সব ধরনের আবহাওয়ায় চলতে সক্ষম যুদ্ধ বিমান, পাকিস্তান অ্যারোনটিক্যাল কমপ্লেক্স এবং চেংদু এয়াক্রাপফ ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন মিলে এই যুদ্ধ বিমান তৈরি করেছে। প্রতিটি জেএফ-১৭ এর উৎপাদন খরচ প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অতীতে প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পরে রাশিয়ার সাথে প্রতিরক্ষা খাতে চীনের যেসকল সহযোগিতামুলক উদ্যোগ ছিল এই যুদ্ধ বিমানটি হল তারই একটি পরম্পরা। ফলে বিমানের কাঠামো চীনের, বিমানের ফর্মূলা জ্ঞান পশ্চিমা এবং এর ইঞ্জিন রাশিয়ান ক্লিমোভ আরডি ৯৩।
১৯৯৯ সালে চীন ও পাকিস্তান জেএফ-১৭ যৌথভাবে উৎপাদনের জন্য চুক্তি সই করে। তখন বলা হয়েছিল এই যুদ্ধ বিমান এসইউ-৩০ এমকেআই, মিগ-২৯ ও মিরেজ-২০০০ এর সাথে তুলনাযোগ্য।
বাস্তবতা হল চীনারা এই যুদ্ধ বিমান নিয়ে গর্বভরে যে দাবি করেছিল পাকিস্তান বিমান বাহিনী (পিএএফ) বিরক্তিসহ দেখতে পাচ্ছে এটা তার ধারেকাছের কিছুও নয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এয়ারক্রাফটের ইঞ্জিন যার ট্রাবল বা ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। চালু হওয়ার পর থেকে এক ইঞ্জিনের মাধ্যমে ওড়া এয়ারক্রাফটটি বার বার নষ্ট হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে, এর ওপর খুব কমই নির্ভর করা যায়।
বিপুল সংখ্যক ইঞ্জিনের ইঞ্জিন গাইড ভেন বা ইঞ্জিন পাখা, নিষ্কাশন নজেল এবং ফ্রেম স্টেবিলাইজারে ফাটল তৈরি হয়েছে।
খুবই নিম্নমানের সার্ভিস ও মেইনটেন্যান্স সক্ষমতা বিমান বাহিনীল সদস্যদের ঝুঁকিতে ফেলেছে। নিম্নমানের সার্ভিস এবং উচ্চ মাত্রার মেরামত বা সংস্কার খরচের জন্য তারা চীনের কাছে সিরিয়াস উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বস্তুত, বিপর্যয়কর ইঞ্জিন সমস্যা জেএফ ১৭ এর সমস্যা কে আরো জটিল করে তুলেছে, কারণ চীনে এর স্পেয়ার যন্ত্রাংশ পাওয়া খুবই কঠিন এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া থেকে অন্যান্য সহযোগিতা পাওয়া যায় না। জানা গেছে যে, রাশিয়ার ইঞ্জিনের রিপ্লেস বা প্রতিস্থাপন করতে চীন নতুন ইঞ্জিন-গুইচৌ ডাব্লিউএস-১৩ তাইসান উন্নয়ন শুরু করেছে, কিন্তু এর পরিপূর্ণ উন্নয়ন এখনও হয়নি অর্থাৎ এখনও তৈরি হয়নি। কিন্তু বেশিরভাগ সম্ভাবনা হল ত্রুটিযুক্ত রাশিয়ার ইঞ্জিন মেরামত বা সংস্কারে সম্পদ খরচের চেয়ে চীন নতুন ইঞ্জিন তৈরিতে বেশী আগ্রহী বা ইচ্ছুক।
আরডি ৯৩ বিমান ইঞ্জিনের বিরুদ্ধে বিদ্যমান সমালোচনাগুলোর একটি হল আকাশে এর কালো ধোঁয়া ছাড়ার প্রবণতা যা একে শত্রু পাইলটের সহজ টার্গেটে পরিণত করে। এ কারণে কাছাকাছি বিমান যুদ্ধের সময় এটা জেএফ ১৭ এর পাইলটকে অসুবিধায় ফেলে দেয়।
বিমান বাহিনী আরো যে সমস্যাটি পেয়েছে তা হল জ্বালানী অক্ষম ইঞ্জিনের কারণে যুদ্ধ বিমানটির লইটার (টার্গেটে আঘাত হানার সময়কার অবস্থা) সময় বা টার্গেটে নির্ভূল হওয়ার ক্ষমতা এবং দীর্ঘ সময় যুদ্ধ বিমান টহলের মিশন ক্ষমতা কম। পাকিস্তানের বিমানবাহিনী নতুন এফএডিইসি আরডি-৩৩ ইঞ্জিন দিয়ে থান্ডারের ইঞ্জিন প্রতিস্থাপনের চিন্তাভাবনা করার এটা একটা কারণ। এ সংক্রান্ত কোন সিদ্ধান্ত এখনও নেয়া হয়নি।
এভাবে, ভারতীয় বিমান বাহিনীর শ্রেষ্ঠত্বের মুখে জেএফ ১৭ স্কোয়াড্রন উচ্চমাত্রার সার্ভিস অক্ষমতা, বার বার ইঞ্জিন ত্রুটি এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের স্বল্পমাত্রার সরবরাহের কারণে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর জন্য একটা দায় বা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লেখক: দিল্লির জহুরলাল নেহেরু বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।
মেইল: [email protected].

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়