সুজন কৈরী: [২] মানুষের জীবন রক্ষায় বহুল ব্যবহৃত মন্টিলুকাস্ট, ওমিপ্রাজল ও সেফিক্সিম গ্রুপের নকল ওষুধ তৈরি ও বিক্রির অভিযোগে ৮জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ফয়সাল মোবারক, নাসির, ওহিদুল, মামুন, রবিন, ইব্রাহিম, আবু নাঈম ও ফয়সাল।
[৩] গত ১২ আগস্ট ঢাকা, সাভার ও পিরোজপুরের নেছারাবাদ বিসিক শিল্প এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তদের গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের কোতয়ালী জোনাল টিম। তাদের কাছ থেকে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সেফ-৩ নামীয় নকল ওষুধ ১৬ বরক্স, ও সেকলো-২০ নামীয় নকল ওষুধ ১৬ বাক্স, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মনটেয়ার ১০ নামীয় নকল ওষুধ ২২ বাক্স, জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ন্যাপ্রোক্সেন প্লাস নামীয় নকল ওষুধ ৮০০ বাক্স, দি একমি ল্যাবরেটরিস লিমিটেডের মোনাস ১০ নামীয় নকল ওষুধ ৪০ বাক্স, নকল ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট, নকল ইনো, এন্টি-এসিডিটি ও স্যালাইন এবং ওষুধ তৈরির মেশিন ও বিপুল পরিমান ওষুধ তৈরির ডায়াস জব্দ করা হয়েছে।
[৪] সোমবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে আমাদের জনজীবন যখন বিপর্যস্ত তখন একটি অসাধু চক্র এ অতিমারীতে নকল ওষুধ বাজারজাত করছে। এ চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালায় গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। গ্রেপ্তার করা হয় প্রতারক চক্রের ৮ জনকে।
[৫] তিনি বলেন, এ চক্রের মূলহোতা গ্রেপ্তার ফয়সালের নামে সাভার ও ফিরোজপুরে দুটি কারখানা আছে। তিনি ভুয়া ড্রাগ লাইসেন্স নিয়ে লাইফ সেভিং এসব নকল ওষুধ তৈরি করেন। ফয়সাল মূলত আতিয়ার নামক এক কেমিষ্টের কাছ থেকে বাজারে ব্যাপক প্রচলিত নামীদামি ব্র্যান্ডের ওষুধের ফর্মূলা ও কম্পোজিশন নিয়ে মিটফোর্ডের কেমিক্যাল ব্যবসায়ী মুহিবের কাছ থেকে কেমিক্যাল সংগ্রহ করে তার কারখানায় এসব ওষুধ তৈরি করতেন। এসব নকল ওষুধ তৈরির পর মিটফোর্ডের কয়েকটি গ্রুপ এসব নকল ওষুধ বাজারজাত করতো চক্রটি।
[৬] হাফিজ আক্তার আরও বলেন, গ্রেপ্তার নাঈম এসব নকল ওষুধের জন্য সব প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়াল তৈরি করে দিতো। গ্রেপ্তার ফয়সাল, নাসির, ওহিদুল, মামুন, রবিন, ইব্রাহিম, আবু নাঈম, ফয়সাল ও তাদের সহযোগীরা তৈরি করা এসব নকল ওষুধ বাজার মূল্যের চেয়ে নামমাত্র মূল্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতেন। তারা ইউএসবি কুরিয়ার, এসএ পরিবহন, সুন্দরবন কুরিয়ারসহ বিভিন্ন কুরিয়ারের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব ওষুধ পাঠাতো।
[৭] তিনি বলেন, এসব ওষুধের ইনগ্রিডিয়েন্টসে মূলত এ্যাক্টিভ পার্টই থাকে না। এছাড়া মেইজ স্টার্চ অত্যান্ত নিম্ন গ্রেডের ব্যবহৃত হয়। এমনকি স্টেরয়েড ও ডাই ব্যবহৃত হতে পারে। নন ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রেডের এসব কেমিক্যাল সেবনের ফলে মানুষের কিডনি, লিভার, হৃদযন্ত্র এবং শ্বসনতন্ত্রে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
[৮] করোনাকালীন সময় মানুষ এসব নকল ওষুধ গ্রহণের কারণে স্বাভাবিক অর্থে সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে তারা আরও মৃত্যুর দিকে ধাবিত হবে। এ ধরণের কার্যক্রম হত্যাকান্ডের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়।
আপনার মতামত লিখুন :