মুজ্জাম্মিল হোসেন মঞ্জু: খুব ছোটবেলায় পরীমণি মাকে হারান। আরেকটু বড় হয়েই হারান বাবাকে। ফলে পিরোজপুরে দাদু শামসুল হক গাজীর কাছে বড় হন তিনি। পরীমণি মে মাসে ইনস্টাগ্রামে হাসপাতালে চিকিৎসারত দাদুর ছবি পোস্ট করেন। ৮ মে দাদুর লজেন্স খাওয়ার ছবি দিয়ে লিখেছেন, “দেখেন কেমন বাচ্চাদের মতন। ১০০ ঊর্ধ্ব বয়স তার। দু’দিন আগে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন হয়েছে। চারদিন তার মুখে খাওয়া বন্ধ রেখেছিলেন ডাক্তার। আজ তার জন্য ডাক্তার নিজেই এই উপহার নিয়ে আসেন। নানু তো মহা খুশি।” এই পোস্ট চিরন্তন মিষ্টি সম্পর্কের খোঁজ দেয়।
... শামসুল হক গাজী সাংবাদিকদের বলেন, “সে নিজের সারাটা জীবন মানুষকে দান করেছে। কিন্তু এখন সে পরিস্থিতির শিকার। নিজের একটা ফ্ল্যাট করে নাই... কিছু করে নাই। এফডিসি-তে প্রত্যেক বছর ইদে পশু কোরবানি করে গরিব-দুঃখীদের জন্য। নিজের জন্য সে নিজে কিছুই করে নেই।”
২০১৬ থেকে পরীমণি এফডিসি-র (বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন) সঙ্গে যুক্ত অস্বচ্ছল মানুষদের খাদ্য দান করে থাকেন। এ বছর করোনার কারণে মানুষ আগের থেকে অনেক বেশি আর্থিক অনটনে ভুগেছেন। তাই পরীমণি আগের তুলনায় এ বার আরও বেশি করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। লকডাউনের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি নিজে এলেন কেন, এই প্রশ্নের উত্তরে পরীমণি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “এটাই তো ইদের খুশি। এই মানুষজনেরা আমার পরিবারের মানুষ। এফডিসি আমার দ্বিতীয় পরিবার। তাঁরা চাইছিলেন আমি নিজের হাতে বিতরণ করি, তাই সবার খুশির জন্য, নিজের খুশির জন্য আমি এসেছি।”
গত জুন মাসে পরীমণি কয়েকজন প্রভাবশালী মানুষের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনেন। তার পর থেকেই তাঁর জীবন যাপন এবং বিত্ত নিয়ে কটূক্তি শুরু হয়। ৩০ জুন পরীমণি ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘আমার মাত্র একটি হ্যারিয়ার গাড়ি। যেটি ব্যাংক লোনে চলছে। এবং আমি একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে থাকি। আমি আমার আয়ের হিসেব সরকারের কাছে অবশ্যই প্রদান করি। আমি নিয়মিত কর দিই। আমার কোনও ১০ কোটি টাকার বাড়ি বা ৫/৪/৩ কোটি (যেমনটা আপনারা বানালেন আর কী) টাকার গাড়িও নেই। মিথ্যা বা গুজব ছড়ানোর জন্য আপনারা কতটুকু জয়ী হলেন ভেবে দেখবেন প্লিজ।’
[ কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকায় ১২ই আগস্ট প্রকাশিত একটি রিপোর্টের অংশ ]
আপনার মতামত লিখুন :