শিরোনাম
◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ১২ আগস্ট, ২০২১, ০২:০৮ রাত
আপডেট : ১২ আগস্ট, ২০২১, ০২:০৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মামুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এবং বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ

অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মামুন: গত কয়েকদিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মান বাড়বেই বাড়বে। এর মধ্যে প্রথম সিদ্ধান্তটি হলো গবেষণাপত্র প্রকাশনা সংক্রান্ত। সিদ্ধান্ত হয়েছে শিক্ষকদের গবেষণা প্রবন্ধ আন্তর্জাতিক ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর পূর্ণ জার্নালে প্রকাশিত হলে গবেষকদের আর্থিক প্রণোদনা দেবে। এটি নিয়ে অনেকেই ভুল ধারণা পোষণ করছেন। অনেকেই ভেবে বসে আছেন যে প্রবন্ধ প্রকাশিত হলে শিক্ষকরা অনুদানের মতো টাকা পাবেন। বিষয়টা মোটেও সেইরকম না। কেবলমাত্র ওপেন এক্সেস ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর ওয়ালা জার্নালে প্রকাশ করতে গেলে যেই টাকা প্রকাশককে দিতে হয় সেইটা বিশ্ববিদ্যালয় দিবে। যদিও যতোটুকু জেনেছি বুয়েট শিক্ষকদের অনুদান দেয়। শিক্ষকদের প্রতি প্রকাশনার জন্য ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর অনুযায়ী একটি অনুদান দিলে শিক্ষকরা আরো বেশি করে গবেষণামুখী হতো এবং এটাই কাম্য ছিলো। যেটা করেছে সেটাও খারাপ না। উন্নতির পথে একটি ধাপতো বটেই। সেজন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।

দ্বিতীয় সিদ্ধান্তটি আরো যুগান্তকারী এবং একই সাথে সময়োপযোগী। সিদ্ধান্ত হয়েছে এখন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে বিদেশি শিক্ষক গবেষক কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী যারা বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন তাদে শিক্ষা ও গবেষণা কাজে সম্পৃক্ত করা যাবে। আমি আরও বেশি খুশি হতাম যদি ‘সাবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ না বলে সাবেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বলা হতো। বাংলাদেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা অনেকেই বিশ্বের নানা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক বা গবেষক হিসাবে কর্মরত আছেন তাদেরও সম্পৃক্ত করতে কার্পণ্য করা উচিত না। শুধু শিক্ষা ও গবেষণা না তাদের যদি আমরা নিয়োগ বোর্ডেও অন্তর্ভুক্ত করতে পারি সেটা আরো যুগান্তকারী হবে। নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হওয়ার জন্য যোগ্যতার বারটি আরো উচ্চতায় উঠানো উচিত। বর্তমানে তেমন কোনো বারই নেই ফলে যাকে খুশি তাকেই (অবশ্যই অধ্যাপক হতে হবে) বোর্ডের সদস্য করা যায়। শুধু তাই না শিক্ষক নিয়োগে অনেকগুলো ধাপ থাকা উচিত সেই ধাপগুলোর প্রতিটির মাধ্যমে নিয়োগ প্রার্থীর তালিকা ছোট করে ফাইনাল যেই তালিকা হবে সেটা হবে খুব ছোট। এই তালিকা থেকে যাকেই নিয়োগ দেওয়া হোক না কেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কারণ সেই তালিকার সবাই হবে যোগ্যতা সম্পন্ন।

ওপরের কয়েকটি সিদ্ধান্ত যদি রাজনীতির বাইরে গিয়ে সঠিকভাবে প্রয়োগ করা যায় তাহলে আমি নিশ্চিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মান উন্নত হবে। আরও একটি কথা সঠিক উন্নতমানের শিক্ষক পেতে হলে তাদের সম্মানির পরিমানের দিকেও নজর দেওয়া উচিত। কেউ যদি ৬ থেকে ১ বছরের জন্য আসতে চায় তাদের জন্য উন্নতমানের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থার জন্য একটি উন্নতমানের গেস্ট হাউজ তৈরি করা উচিত। বছর দুইয়েক আগে আমি ভেলোর ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে একটি কনফারেন্সে গিয়েছিলাম। সেখানকার গেস্ট হাউজ দেখে আমি থ। একদম প্রায় ৪ তারকা হোটেলের মতো থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা। সেখানে দেখেছি অনবরত বিদেশি শিক্ষক গবেষক আসছে যাচ্ছে। একটি বিশ্ববিদ্যালয় তেমনি হওয়া উচিত। আমাদের সেন্টার অফ এক্সসেলেন্স কিছু ব্যবস্থা আছে তবে সেটা মোটেও মানসম্পন্ন নয়। আশা করি কর্তৃপক্ষ এই বিষয়গুলোর দিকেও নজর দেবেন।

এই করোনা পরিস্থিতি আমাদের শিখিয়েছে যে মানুষ পৃথিবীর যেখানেই থাকুক না কেন কেবল একটি ক্লিক দূরে। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের মানুষকে আমরা আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত করতে পারবো। এই বিশ্বাসটা করোনা না আসলে বুঝতে পারতাম না। সারা পৃথিবী জুড়েই শিক্ষায় টেকনোলজির ব্যবহারে বিপ্লব ঘটে গেছে। এই সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতে হবে। তবে দ্বিধা আছে। এর মধ্যে রাজনীতি ঢুকে যায় কিনা। ঠিক যেমন অন্য অনেক ভালো সিদ্ধাতে রাজনীতি ঢুকে নষ্ট করা হয়েছে। লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়