শিরোনাম
◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে ◈ সেনা গোয়েন্দাসংস্থার বিরুদ্ধে ৬ পাক বিচারপতির ভয় দেখানোর অভিযোগ ◈ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিরা সাদা পতাকা উড়াচ্ছিল, তাদের বূলডোজার দিয়ে মাটি চাপা দিল ইসরায়েলী সেনারা ◈ ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দ্রুত আরোপ করুন: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ ◈ যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত ◈ বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ ও মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র: ম্যাথিউ মিলার ◈ ঈদের পর কমপক্ষে ২৩ ডিসি’র রদবদল হতে পারে ◈ ৫ থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে কর্মদিবস একদিন ◈ চাঁদপুরে পিকআপ ভ্যান ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত

প্রকাশিত : ১০ আগস্ট, ২০২১, ০৯:২৯ সকাল
আপডেট : ১০ আগস্ট, ২০২১, ০৯:২৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জাফরুল্লাহ চৌধুরী: দারিদ্র হ্রাসে স্বাস্থ্যবীমা

জাফরুল্লাহ চৌধুরী: বাংলাদেশে চিকিৎসায় অত্যধিক ব্যয়, ভুল চিকিৎসা এবং দারিদ্র

বাংলাদেশে চিকিৎসা খাতে ব্যক্তিগত ব্যয় (Out of Pocket Expenses – OOP) এশিয়ার মধ্যে সর্বাধিক। চিকিৎসা সেবা সংগ্রহে অত্যধিক ব্যয়ের মূল কারণ হচ্ছে সরকারী আনুকুল্যে ওষুধের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি, রোগ নির্ণয় ও শৈল চিকিৎসায় কল্পনাতীত অতিরিক্ত চার্জ ও অপচিকিৎসা।

শৈল্য চিকিৎসায় কতগুন বেশী চার্জ করা হয়, সে সম্পর্কে দু’একটি উদাহরণ দিচ্ছি। বয়োবৃদ্ধদের ছানি কেটে চোখে নতুন লেন্স বসাতে(IOL)   সর্বসাকুল্যে খরচ ২০০০ (দুই হাজার) টাকার অনধিক। ফেকো পদ্ধতিতে ছানি কাটার অপারেশন করলে খরচ দ্বিগুন হয়। ফেকো পদ্ধতিতে অপারেশন করলে রোগীর সময় সাশ্রয় হয়। বয়োবৃদ্ধদের এত সময় সাশ্রয়ের প্রয়োজন কতটুকু তা বিবেচ্য হওয়া উচিত। বিভিন্ন ক্লিনিকে IOL   এর জন্য ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা ও ততোধিক এবং ফেকো অপারেশনের জন্য ১০০,০০০-১৫০,০০০ (এক লাখ থেকে দেড় লাখ) টাকা চার্জ করা হয়। কতিপয় চক্ষু চিকিৎসক ভাওতা দিয়ে ৫০,০০০ টাকায় প্রদাহ নিবারক ইনজেকশনও বিক্রি করে থাকেন ওষুধ প্রস্তুত কারক কোম্পানীর অনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে। এরূপ অতিরিক্ত চার্জ দিনে দুপুরে ডাকাতি তুল্য নয় কি? শিক্ষিত জনসাধারন ও মিডিয়া কর্মীরা এরূপ অত্যধিক অস্বাভাবিক চার্জ সম্পর্কে প্রায়শ: কোন প্রশ্ন তোলেন না। অর্থোপেডিকস, কার্ডিয়াক ও নিউরোসার্জন, ইউরোলজিষ্টরা অপারেশনের জন্য এক থেকে পাঁচলাখ টাকা চার্জ করে থাকেন।

১৯৯৪ সনে বিআইডিএস (বাংলাদেশ ইনসটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট ষ্টাডিজের গবেষক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান ব্যাপক গবেষণার মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন যে, বাংলাদেশের দরিদ্রতা হ্রাস না পাবার তিনটি কারণের মধ্যে দ্বিতীয় মূখ্য কারণ হচ্ছে ভুল চিকিৎসা, অপচিকিৎসা,

ট্রাস্টি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র
চিকিৎসায় অত্যধিক ব্যয়, অপ্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং সময় মত চিকিৎসকের পরামর্শ বঞ্চিত হওয়া। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সরকারের অমানবিক ব্যবহার দরিদ্রতা নিরসন না হবার অপর দুই কারন বলে তিনি উল্লেখ করেছিলেন ১।

বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন ও সময়মত চিকিৎসা না পাওয়া ও চিকিৎসা সেবা সংগ্রহে অত্যধিক ব্যয়কে দরিদ্র পরিবারের ক্রম অবনতির জন্য দায়ী করেছেন ২।

বিশ^ব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডা. জিম ইয়ং কিং বৈশ্বিক বৈষাম্য ও অসামঞ্জস্যতা এবং দরিদ্র পরিবারদের স্বাস্থ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়াকে দরিদ্রতার মূখ্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তার আলোড়ন সৃষ্টিকারী ‘Dying for Growth: Global Inequality and Health for the Poor’ বইতে ৩।

উল্লেখ্য যে, দেড় শত বৎসর পূর্বে ১৮৪২ সনে প্রায় একই তথ্য প্রকাশ করেছিলেন লন্ডন ওয়েষ্ট মিনিষ্টার মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের প্রকৌশলী স্যার এডউইন চ্যাডউইক (Sir Edwin Chadwick) বিলেতের মহামারী প্রেক্ষিতে লিখিত রিপোর্টে। তিনি লিখেছিলেন দূষিত পরিবেশ ও দূষিত পানি সরবরাহ, গলিত বর্জ্য ও রাস্তার নালা নর্দমার পাইপ বন্ধ হয়ে যাবার কারণে রোগ সৃষ্টি হয় এবং রোগ ও রোগ চিকিৎসায় অতিরিক্ত ব্যয় দরিদ্রতার মূল কারণ ৪।

সরকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসকের অনুপস্থিতি সর্বজন জ্ঞাত বিষয়। ৩ জুলাই ২০১৩ তারিখে তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক এ এফ এম রুহুল হক বলেছিলেন হাসপাতালে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি স্বাস্থ্য সেবার বড় সমস্যা ৫, ৬ ৭ বৎসরেও সে অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। এটা সরকারের চরম ব্যর্থতা। হাসপাতালে সরকারী ওষুধ কোম্পানী ইডিসিএলের প্রস্তুত ভাল ওষুধ মজুত থাকা সত্ত্বে¡ও হাসপাতালে দু’চারজন চিকিৎসক যারা পালা করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকেন, তারা রোগীকে হাসপাতালের ওষুধ না দিয়ে অতিরিক্ত মূল্যে বাহির থেকে ওষুধ কিনে নেবার জন্য প্রেসক্রিপশন দেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, হাসপাতালের অভ্যন্তরে বিবিধ ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের ভীড় ও চিকিৎসকদের সাথে লেনদেনের বিষয় সর্বজন বিধিত। তাই রেজিষ্টার্ড বিশেষজ্ঞ ও ভুয়া বিশেষজ্ঞের ব্যবস্থাপত্রে ভয়ানক মিল পাওয়া যায়। প্রায়শ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভুয়া চিকিৎসক ও ভুয়া পীরের সংবাদ প্রকাশ পাচ্ছে। রেজিষ্টার্ড চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের কর্মস্থলে অনুপস্থিতির সুযোগে হাতুড়ে ডাক্তাররা কেবল গ্রামগঞ্জে নয়, এমন কি বড় বড় শহরেও সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে ভুয়া ডিগ্রী উল্লেখ করে অনেকে বিশেষজ্ঞ সেজেও চিকিৎসা দেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (BMDC) কোন কার্যকর ভূমিকা পরিলক্ষিত হয় না।

সামাজিক বীমা সৃষ্টির কাহিনী

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একশত বৎসর পূর্বে ১৮৭১ সনে জার্মান রাজনীতিবিদ ওটো ভন বিসমার্ক বহু অঞ্চলে বিভক্ত জার্মানীকে একত্রিত করে শক্তিশালী রাষ্ট্র পরিণত করেন এবং জার্মান নাগরিকদের দেশ ত্যাগ প্রতিহত করার নিমিত্তে একে একে বিভিন্ন প্রকার সামাজিক বীমার প্রচলন করেন। দরিদ্র পরিবারকে নি:খরচায় স্বাস্থ্য সুবিধা দেবার জন্য জার্মানীতে ওটো ভন বিসমার্ক প্রথম সার্বজনীন স্বাস্থ্যবীমার প্রচলন করেন। তিনি ১৮৮৩ সনে অসুস্থ নাগরিকদের চিকিৎসা সেবা প্রদান আইন চালু করেন। পরের বছর দূর্ঘটনা বীমা ক্ষতিপুরন আইন এবং ১৮৮৯ সনে বয়োবৃদ্ধদের সেবা বীমা আইন প্রচলন করেন। অটো ভন বিসমার্ক ৩০ জুলাই ১৮৯৮ সনে মৃত্যুবরন করেন।

বিসমার্কের সামাজিক বীমার অনুকরনে ১৮৮৮ সনে অষ্ট্রিয়া, ১৮৯১ সনে হাঙ্গেরী, ১৯০১ সনে লুক্সেমবার্গ, ১৯০৯ সনে নরওয়ে ও ১৯১১ সনে সুইজারল্যান্ডে সামাজিক বীমার প্রচলন শুরু হয়। বৃটেনে ১৯১৯ সনে বোর্ড অব ট্রেডের সভাপতি উইনসটন চার্চিলের নেতৃত্বে প্রথম বেকার বীমা চালু হয়। ৬ নভেম্বর ১৯৪৬ সনে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস আইন অনুমোদিত হয় এবং ৫ জুলাই ১৯৪৮ তারিখে বৃটেনের সকল নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী এনুরিল বিভানের নেতৃত্বে জাতীয় স্বাস্থ্যবীমার মাধ্যমে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস চালু হয় সকল শ্রেণীর চিকিৎসকদের বিরোধিতা সত্ত্বেও।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে স্থানীয় পর্যায়ে সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবীমা প্রচলনের উদ্যোগ নেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দরিদ্রদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা মেডিকেইডর প্রচলন হয় ১৯৬৫ সনে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকগণ মেডিকেএইডের ভয়ানক বিরোধিতা করেন- মেডিকেএইডকে তারা ‘‘কমিউনিষ্ট ষড়যন্ত্র’’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্বাস্থ্যবীমা মূলত: প্রাইভেট ইনসুরেন্স কোম্পানী নিয়ন্ত্রিত বিধায় প্রিমিয়াম খুব বেশী। অপর পক্ষে কানাডা, বৃটেন ও ইউরোপের প্রায় দেশে জাতীয় স্বাস্থ্যবীমা সরকার নিয়ন্ত্রিত বলে কম খরচে উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা রয়েছে। সাধারনত: সকল সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তা ও কর্মীদের বেতন থেকে ১-২% স্বাস্থ্যবীমার জন্য কেটে রাখা হয়। তাদের দেয় প্রিমিয়ামের সাথে সরকার সমপরিমান প্রিমিয়াম যোগ করেন। নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, সুইডেন ও ডেনমার্কে স্বাস্থ্যবীমার জন্য ৫% কাটা হয় এবং সরকার থেকে সমপরিমান প্রিমিয়াম যোগ করেন। সেখানে জাতীয় স্বাস্থ্যবীমার পরিধি অনেক বেশী বিস্তৃত। উন্নত দেশসমূহে বাসস্থান ও বেকার ভাতা এবং বয়োবৃদ্ধদের সেবা সামাজিক স্বাস্থ্যবীমার অন্তভুক্ত।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১৯৭৩ সনে সাভারের গ্রামে স্থানীয় ভাবে প্রতি পরিবারের মাসিক দুই টাকায় স্থানীয় স্বাস্থ্যবীমার প্রচলন করে। ধনী, দরিদ্র সকল পরিবারের একই প্রিমিয়াম জনগন ভালো ভাবে গ্রহন করেনি। ধনীরা অতিরিক্ত প্রিমিয়াম দিয়ে অধিকতর সুবিধা দাবী করতে থাকে এবং দরিদ্ররা কম প্রিমিয়াম যুক্তিসংগত মনে করতেন। পরবর্তীতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র সামাজিক শ্রেণী ভিত্তিক স্বাস্থ্যবীমার প্রচলন করে- (১) অতি দরিদ্র, (২) দরিদ্র, (৩) নিম্ন মধ্যবিত্ত, (৪) মধ্যবিত্ত, (৫) উচ্চ মধ্যবিত্ত এবং (৬) ধনী।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্থানীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্যবীমার সফলতা সীমিত। দরিদ্র পরিবারগন ৬০% স্বাস্থ্যবীমা গ্রহন করেছেন। মধ্যবিত্তরা ১৫% এর অনধিক এবং ধনীরা আরও কম। ফলে এ স্বাস্থ্যবীমা পদ্ধতি স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে পারেনি। দরিদ্র পরিবাররা সামান্য প্রিমিয়াম দিয়ে থাকেন। যাদের গণ স্বাস্থ্যবীমা আছে তাদের পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে তারা সময় ক্ষেপন না করে দ্রুত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করেন। ফলে তাদের স্বাস্থ্য অপেক্ষাকৃত উন্নত। এদের শিশুমৃত্যু, মাতৃমৃত্যু ও বয়োবৃদ্ধের মৃত্যুহার কম।

নিম্ন আয়ের শ্রমজীবি পরিবারের বিশেষ গণ স্বাস্থ্যবীমা

গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে রিকশা ও ভ্যান চালক, ফেরিওয়ালা, ফুটপাতের ছোট দোকানদার পরিবারের জন্য জুন ২০২১ সন থেকে মাসিক ২০০ টাকা প্রিমিয়ামে বিশেষ গণ স্বাস্থ্যবীমা চালু করেছে। বিশেষ গণ স্বাস্থ্যবীমা গ্রহনকারী পরিবারের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। ১০,০০০ শ্রমজীবি পরিবার বিশেষ স্বাস্থ্যবীমা গ্রহন করলে প্রকল্পটি প্রায় স্বয়ং সম্পূর্ণ হবে। নতুবা এই প্রকল্পকে আর্থিক সহায়তা ও ভর্তুকী দিয়ে চালু রাখতে হবে।

শ্রমজীবি পরিবার বিশেষ গণ স্বাস্থ্যবীমা অন্তভুক্ত হলে কতকগুলো বিশেষ সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন। বিশেষ গণ স্বাস্থ্যবীমা গ্রহিতা পরিবারে রিকশা চালক/ ভ্যান চালক/ ফেরিওয়ালা/ ফুটপাতের ছোট দোকানদার ও তাদের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও বয়োবৃদ্ধ পিতা-মাতা বিশেষ গণ স্বাস্থ্যবীমার অন্তর্ভুক্ত হন। তাদেরকে NID কার্ডের ন্যায় গলায় ঝুলানো পরিচয়পত্র এবং একটি বিশেষ গণ স্বাস্থ্যবীমা বই দেয়া হয়। তাদেরকে ধূমপান ও পান সেবন থেকে নিবৃত্ত থাকার এবং ছেলে মেয়েদের নিয়মিত স্কুলে পাঠানোর জন্য প্রচেষ্টা চালানো হয়।

অর্থ সঞ্চয় করে চালকগণ যেন বাহনের মালিক হতে পারেন সেজন্য গণস্বাস্থ্য ক্রেডিট সমবায়ে টাকা জমা রাখার ব্যবস্থা আছে। দৈনিক ৫০ টাকা জমা করে একজন রিকশা চালক ৬ মাসে একটি রিকশার মালিক হবার জন্য তার জমানো ৯০০০ টাকা এবং ব্যাংক থেকে ১৫,০০০ টাকা ধার নিয়ে রিকশা/ ভ্যান কিনতে পারবেন। পরবর্তীতে রিকশা চালক এক বৎসরে ব্যাংকের ধার পরিশোধ করবেন। নিজে রিকশা/ ভ্যান মালিক হওয়ায় তাকে গ্যারেজ মালিককে রিকশার ভাড়া বাবদ প্রতিদিন রিকশা ভাড়া বাবদ ১০০ টাকা দিতে হয় না। বাহনের মালিক হওয়ায় রিকশা চালানো অত্যন্ত কায়িক পরিশ্রমের কাজ। তাকে শক্তি অর্জনের জন্য দিনে কয়েকবার খেতে হয়। রিকশা চালক, হকার ও ছোট দোকানদার প্রতিদিন একটা নির্ধারিত চাঁদা পুলিশ ও স্থানীয় মাস্তানদের দিতে হয়। ধূমপান ও পান সেবনে তাদের অনেক ব্যয় হয়। পরিবারের পুষ্টির উন্নতি হয়। ঋণ পরিশোধের পরও দৈনিক ১০০.০০ টাকা সঞ্চয় অব্যাহত রাখে যাতে ভবিষ্যতে তাদের সন্তানরা গণ বিশ^বিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ পায়।

বিশেষ গণ স্বাস্থ্যবীমার প্রাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা সমূহ
১. বিনা ফি ও অতিরিক্ত চার্জ ব্যতিরেকে ১৫ প্রকার স্বাস্থ্য সুবিধা
* গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ২৪ ঘন্টা স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকের পরামর্শ, * গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে সিট ভাড়া ছাড়া ভর্তি সুবিধা * হাসপাতালে ভর্তি রোগীকে অক্সিজেনের চার্জ দিতে হয় না * হাসপাতালে বহি: ও অন্তবিভাগে নি:খরচায় সুপেয় পরিশোধিত পানি পেয়ে থাকেন। বাহির থেকে বোতলের পানি আনতে হয়না * চক্ষু, কান, দাঁত পরীক্ষা * ওজন নেয়া ও রক্তচাপ নির্ণয় * হাত ও পায়ের নখ কাটা * ইমার্জেন্সী বিভাগে আগুনে পোড়া ও দুর্ঘটনা রোগীর পরামর্শ ও চিকিৎসা * মাসিক নিয়মিত করণ (Menstrual Regulation) ছাড়া অন্য সকল পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির সুবিধা * শিশুদের মুসলমানী (Circumcision)* গর্ভবর্তীদের প্রসবপূর্ব ও প্রসব পরবর্তী সেবা * ফ্রি রক্ত পরিসঞ্চালন (Blood Transfusion) সুবিধা কিন্তু রক্তের ব্যাগের মূল্য দিতে হয় * সপ্তাহে দুইদিন স্থানীয় পর্যায়ে শিশু, গর্ভবতী ও বয়োবৃদ্ধ ক্লিনিকে ফ্রি পরামর্শ।

অল্প খরচে প্রয়োজনীয় বহু পরীক্ষা ও চিকিৎসা সুবিধা
* ১০ টাকায় বহুমূত্র রোগের (Random Blood Sugar) পরীক্ষা, * ব্যথা নিরাময়ের জন্য প্রতিবার ফিজিওথেরাপি সেবা বাবদ চার্জ হয় মাত্র ২৫ টাকা * ২৫ টাকায় পাবেন পায়খানা ও প্রসাব পরীক্ষা * রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা এবং রক্তের ক্রশ ম্যাচিং এর জন্যও ২৫ টাকা চার্জ করা হয় * ৫০ (পঞ্চাশ) টাকায় পাবেন রক্তের সাধারন পরীক্ষা সমূহ, ইএসআর, প্লেটলেট, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু পরীক্ষা।

* ১০০ টাকায় পাবেন বিশেষজ্ঞ পরামর্শ * ইসিজি পরীক্ষা * হৃদরোগ নির্ণয়ের ট্রপোনিন ও রিউমাটয়েড ফ্যাক্টর পরীক্ষা * মাসিক নিয়মিতকরণ (Menstrual Regulation)  করাতে পারবেন মাত্র ১০০.০০ (একশত) টাকায় * ২০০ টাকায় আলট্রাসনোগ্রাফী ও ইকোকার্ডিওলজী পরীক্ষা * লিভার ফাংসন টেষ্ট সমূহ * বিকল কিডনীর পরীক্ষা সমূহ * সিরাম ইলেট্রলাইটস পরীক্ষা * লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা * মাইক্রোবায়োলজী * হিষ্টোপ্যাথলজীর প্রতি পরীক্ষার জন্য প্রতিবার চার্জ হবে ২৫০.০০ (দুইশত পঞ্চাশ) টাকা।

৫. X-ray পরীক্ষা হবে ৪০০.০০ টাকায়, ৭০০.০০ টাকায় কোভিড-১৯ (RT-PCR) পরীক্ষা।

৬. অন্যান্য সকল পরীক্ষা সরকার নির্ধারিত দরের ৫০% ডিসকাউন্টে পাবেন।
৭. ২০% ডিসকাউন্টে পুষ্টিকর খাদ্য ‘মিনাভিট’ কমপ্লেক্স সিরাপ ও সকল ওষুধ কিনতে পারবেন।

৮. গর্ভবতীর সেবা ও প্রসব ৫০০.০০ টাকায়, ৩০০০.০০ (তিন হাজার) টাকায় সিজারিয়ান অপারেশন সুবিধা এবং ৪০০০ টাকায় পাবেন গর্ভথলি বেড়িয়ে যাওয়া (Prolapse Uterus) নিরাময় অপারেশন।

১০. বিনা সিট ভাড়ায় ICU ও করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি এবং ৫০% ডিসকাউন্টে রোগী পরীক্ষা ও চিকিৎসা সুবিধা।

১১. ৫০০.০০ (পাঁচশত) টাকায় প্রতিবার বিকল কিডনী রোগের চিকিৎসা হেমোডায়ালাইসিস করাতে পারবেন। তবে আর্টিওভেনাস ফিষ্টুলা করাতে ৪০০০.০০ (চার হাজার) টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে।

১২. ১০০০.০০ (এক হাজার) টাকায় ছানি কেটে নতুন লেন্স (IOL) বসানো হয় এবং ৩০০০.০০ (তিন হাজার) টাকায় চোখের ফেকো অপারেশন সুবিধা।

১৩. ৫০০০.০০ (পাঁচ হাজার) টাকায় সকল ইমার্জেন্সী অপারেশন, ভাঙ্গা হাড় জোড়া লাগানো।

১৪. ১০,০০০.০০ (দশ হাজার) টাকায় বড় ভাঙ্গা হাড় জোড়ালাগানো এবং সন্ধি (Joint) বদলাতে হলে রোগীকে ইমপ্লান্ট খরচ বহন করতে হয়।

১৫. নিউরোসার্জারী, কার্ডিয়াক সার্জারী, প্রভৃতির খরচ ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা এবং কিডনী ট্রান্সপ্লান্ট একলাখ টাকায়।

১৬. বিশেষ গণ স্বাস্থ্যবীমার মাসিক প্রিমিয়াম ২০০.০০ (দুইশত) টাকা নিয়মিত পরিশোধ না করলে উল্লেখিত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন এবং সরকার নির্ধারিত নিয়মিত চার্জ হবে। তাতে রোগীর খরচ হবে কমপক্ষে ৪ গুন বেশী।

বিশেষ স্বাস্থ্যবীমার জন্য নির্ধারিত প্রয়োজনীয় জনবল

* ৪ জন প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত তরুণ চিকিৎসক, একজন দন্ত চিকিৎসক, একজন ফিজিওথেরাপিষ্ট, ১৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী, ডিপ্লোমা ফার্মাসিষ্ট/ ফিজিওথেরাপিষ্ট/ প্যাথলজী টেকনিশিয়ান, হিসাব রক্ষক, ও জনসংযোগ কর্মী, নিরাপত্তা প্রহরী এবং দুইজন ড্রাইভার।

২. ওষুধ, প্যাথলজী পরীক্ষা ও যানবাহনের জন্য একটি মাইক্রোবাস।

বিশেষ গণ স্বাস্থ্যবীমা প্রকল্পকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্য করনীয়-

১. নিম্ন আয়ের শ্রমজীবি ১০,০০০ (দশ হাজার) পরিবারদের এই প্রকল্পের অন্তভুক্ত করতে হবে। এ জন্য ব্যাপক স্থানীয় প্রচারনা ও সরকারের সাহায্য সহযোগিতা প্রয়োজন হবে।

২. সরকারী সাহায্যে/অনুদানে স্থানীয় পর্যায়ে শিশু, গর্ভবতী ও বয়োবৃদ্ধদের সাপ্তাহিক ক্লিনিকের জন্য ২৫০০ বর্গফুটের ক্লিনিকের ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন হবে। ইলেকট্রিসিটি, টয়লেট ও পানির ব্যবস্থা থাকতে হবে। ক্লিনিকে, ফার্মেসী, মৌলিক প্যাথলজী পরীক্ষা, এক্সিডেন্ট ও পোড়া রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকতে হবে। স্থানীয় জনগন, সমাজসেবী, রাজনৈতিক কর্মী ও ব্যবসায়ী মহলের সাহায্য ও অনুদান অত্যাবশ্যক।

৩. আগামী ৫ বৎসরে স্থানীয় ক্লিনিক সমূহ পরিনত হবে জেনারেল প্রাকটিশনার্স (GP) ক্লিনিকে। এজন্য স্থানীয় সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। প্রয়োজন মাফিক স্থানীয় ক্লিনিক থেকে রোগীদের প্রয়োজন মাফিক বড় সরকারী হাসপাতালে রেফার করা হবে। অবস্থাপন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীদের সাহায্য সহযোগিতায় ঢাকা শহরে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা সৃষ্টি হবে।

৫. মধ্যবিত্ত ও অবস্থাপন্নরা অতিরিক্ত পরামর্শ ফি’র বিনিময়ে ক্লিনিকের সকল সুবিধা পাবেন। সকলের সেবার কাজটি কঠিন নয়, তবে আপনার সহযোগিতা প্রয়োজন রয়েছে সফলতা অর্জনের জন্য।

সারাদেশে সামাজিক স্বাস্থ্যবীমার প্রচলনের জন্য প্রয়োজন হবে পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত জনবল এবং স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিরাপত্তা বেষ্টনী, গভীর নলকুপের সংস্কার ও সার্বক্ষনিক ইলেকট্রিসিটি।
দ্বিতীয়ত: সরকারী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা হাসপাতালে সার্বক্ষনিক চিকিৎসক, ডেন্টিষ্ট, ফিজিওথেরাপিষ্ট, ফার্মাসিষ্ট ও টেকনিশিয়ান নার্সদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এ সকল কর্মীর নিয়োগ হবে স্থানীয় পর্যায়ে, ঢাকা থেকে নয়। স্থানীয়ভাবে পরিবার নিয়ে ইউনিয়ন ও উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কমপক্ষে দুই বৎসর অবস্থান করে জনসাধারনকে চিকিৎসা সেবা না দিলে কোন চিকিৎসক/উচ্চ শিক্ষার সুবিধা পাবেন না। দুই বৎসর পর, রোগ নির্ণয় প্যাথলজী, এক্সরে, আলট্রাসনোগ্রাফী, এনাসথেসিয়া, ইন্টানাল মেডিসিন, কার্ডিওলজী, নেফ্রোলজী, অর্থোপের্ডিকস, জেনারেল সার্জারী, গাইনী অবসটেট্রিকস, নাক-কান-গলা, চক্ষু, শিশু ও নবজাতক, চর্মরোগ, মানসিক রোগ, মেডিকেল প্রশাসন প্রভৃতি বিষয়ে ৬ মাস কোর্স করে পরীক্ষা পাশ করে সাটিসফাইড বিশেষজ্ঞ হিসেবে উন্নীত হবেন। এসব পদধারীরা মাসিক ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অতিরিক্ত ভাতা পাবেন। মেডিকেল ও প্যারামেডিকেল ছাত্রদের ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষা দানের জন্য মাসিক ২৫০০০ টাকা অধ্যাপনা ভাতা পাবেন, বিনা ভাড়ায় বাসস্থান সুবিধাও পাবেন।

পরবর্তী ৭ বৎসরে এ সকল চিকিৎসকগন যাতে এমএস, এমডি, এমফিল, এফসিপিএস প্রভৃতি শিক্ষাও নিতে পারেন। তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। এ সকল ডিগ্রী ডিপ্লোমা প্রশিক্ষন পরীক্ষা দিয়ে অর্জন করলে তারা ‘‘বিশেষজ্ঞ’’ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং ন্যূনতম একলাখ টাকা বিশেষজ্ঞ ভাতা পাবেন, তারা সিনিয়র প্রভাষক, সহ অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক প্রভৃতি পদের সুবিধা দিলে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসকগন নিবেদিত ভাবে জনগনকে সেবা দিতে আগ্রহী হবেন।

ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রের নিরাপত্তা বেষ্টনী, গভীর নলকুপ ও ইলেকট্রিসিটির নিশ্চয়তা সমেত ন্যূনতম ১০টি পরিবার বাসস্থান, ছাত্রদের জন্য ডরমিটরী এবং ল্যাবরোটরী, বহি:বিভাগ, এক্সরে, আলট্রাসনো বিভাগ ৩০ শয্যার অন্তবিভাগ ও অপারেশন থিয়েটারের সম্প্রসারন এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত করার জন্য দশ কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। এর ফলে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র বিলেতের স্থানীয় আধুনিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে পরিনত হবে। ফলে চিকিৎসকরা এই পর্যায়ে সেবা দিয়ে আনন্দ পাবেন। বাংলাদেশে ওষুধের সমস্যা নেই। সিনিয়র বিশেষজ্ঞদের প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করে বিকালে ৩-৪ ঘন্টা প্রাইভেট প্রাকটিশ সুবিধা বিবেচনা করা যেতে পারে। প্রতিবৎসর মেডিকেল কলেজ সমূহে ২০,০০০ ছাত্র ভর্তি না করলে সামাজিক স্বাস্থ্যবীমা চালু করা সম্ভব হবে না। এ জন্য সারা দেশে ৫ লাখ চিকিৎসকের প্রয়োজন হবে।
স্মরণ রাখা প্রয়োজন যে, সামাজিক স্বাস্থ্যবীমা যুগের দাবী এবং আধুনিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাপনার অত্যাবশ্যক অঙ্গ।

তথ্য সূত্র:
১. হোসেন জিল্লুর রহমান, ‘ক্রাইসিস এন্ড ইনসিকিউরিটি ঃ দি আদার ফেইজ অব পোভার্টি ইন রিথিংকিং রুরাল প্রভার্টি’ সেজ, নিউদিল্লী ১৯৯৫

২) বিনায়ক সেন, ‘ড্রাইভার্স অব এসকেইফ এন্ড ডিসেন্ট ঃ চ্যালেঞ্জিং হাউজ হোল্ড প্রোভার্টি ইন রুরাল বাংলাদেশ’ ওয়ান্ড ডেভেলফমেন্ট রিপোর্ট ভলিউম ৩১, নম্বর-৩, এলসিভিয়র সায়েন্স, বৃটিশ যুক্তরাজ্য ২০০৩

৩. জিম ইয়ং কিম, জেভি মুলেন, এ আর উইন ও জে গারসম্যান, ডাইয়িং ফর গ্রোথ ঃ গ্লোভাল ইনইকুইলিটি এন্ড হেলথ ফর দি পুত্তর, কমন কারেজ প্রেস, মুনরো, মেইন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ২০০০

৪. স্যার এডউইন চ্যাডউইক, রিপোর্ট অন দি স্যানিটরী কন্ডিশন অব দি ল্যাবোরিং পপুলেশন অব গ্রেট বৃটেন, রয়েল কমিশন, লন্ডন ১৮৪২

৫. চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি স্বাস্থ্যসেবার বড় সমস্যা, দৈনিক সমকাল ঢাকা, ৪ জুলাই ২০১৩

৬. ডক্টরস ব্লেইম ম্যানেজমেন্ট, মিনিষ্টার ব্লেইম ডক্টরস, দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন, ৪ জুলাই ২০১৩

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়