শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ০৫ আগস্ট, ২০২১, ০৪:৪৮ সকাল
আপডেট : ০৫ আগস্ট, ২০২১, ০৪:৪৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এগিয়ে নিতে নানা উদ্যোগ, তবুও র‌্যাঙ্কিংয়ে দিন দিন পেছাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নিউজ ডেস্ক: বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশসেরা হলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দিন দিন পিছিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা কোয়াককোয়ারেলি সাইমন্ডস (কিউএস) র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ঢাবির অবস্থান ৮০১-১০০০ এর মধ্যে। গত তিনবছর ধরে এই স্তরের অবস্থান ঢাবির। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান আরও এগিয়ে নিতে সম্প্রতি নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গবেষণায় অনুদান, পিএইচডি ও এমফিল প্রোগ্রামে স্কলারশিপ চালু, বিদেশী শিক্ষকদের খন্ডকালীন শিক্ষকতার সুযোগ দেয়াসহ নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। জনকণ্ঠ

সংস্থাগুলো কয়েকটি মানদন্ডের ভিত্তিতে বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কিং তৈরি করে থাকে। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা ও উদ্ভাবন, কর্মক্ষেত্রে স্নাতকদের কর্মক্ষমতা, আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্ক, গবেষণা প্রবন্ধের সাইটেশন, পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষকদের সংখ্যা, আন্তর্জাতিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনুপাত, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী বিনিময়ের তথ্যের ভিত্তিতে এই তালিকা তৈরি করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অধিকতর উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমে যুক্ত আছে অসংখ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী। বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ঢাবির এসব প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আগামী ৮ আগস্টের মধ্যে এসব প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিজেদের নাম, কর্মস্থলে তাদের স্তর বা পদবী, কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা ইনস্টিটিউটে কর্মরত রয়েছেন সেটির নাম ও ঠিকানা এবং ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ই-মেইল বা ফোন নাম্বার সংযুক্ত করে এক্সেল ফরম্যাটে ই-মেইল ঠিকানায় ([email protected]) প্রেরণ করতে হবে।

এদিকে আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের উৎসাহিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। একটি গবেষণা প্রবন্ধ কোন ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর সম্বলিত আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশ করতে গেলে পাবলিকেশন্স প্রসেসিং ফি দিতে হয়। অনেক শিক্ষক ও গবেষক এই ফি দিতে না পেরে গবেষণা প্রকাশ করতে পারে না। কর্তৃপক্ষ শিক্ষক বা গবেষকের হয়ে এই ফি পরিশোধের জন্য নীতিমালা তৈরি করেছে। একজন শিক্ষক এটি বছরে সর্বোচ্চ দুই হাজার ডলার ও দুইবার গ্রহণ করতে পারবেন।

সর্বশেষ গত ৯ জুন কিউএস বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৮০১-১০০০ এরমধ্যে। ২০১২ সালে এই সংস্থার তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৬০১ এর স্তরে ছিল। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে ৭০১ এর স্তরে, ২০১৯ সালে ৮০১-১০০০ স্তরে এসে দাঁড়ায়। কিউএস র‌্যাঙ্কিং ছাড়াও অন্যান্য সংস্থাগুলোর তালিকাতেও সন্তোষজনক অবস্থানে নাই ঢাবি। প্রসঙ্গত, কিউএস র‌্যাঙ্কিং এ ৫০০তম এর পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সুনির্দিষ্ট অবস্থান প্রকাশ করা হয় না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিং এ অগ্রগতির জন্য আরও অনেককিছু করতে হবে। এখন আমরা শুরু করেছি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ‘আউটলুক অব দ্য ইউনিভার্সিটি’ বাড়াতে গবেষণা কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে, উন্নত বিশ্বে কর্মরত শিক্ষক-গবেষকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। ঢাবির শতবর্ষ উপলক্ষে আমাদের লক্ষ্য হলো ডিগ্রী প্রদানের পাশাপাশি নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করে তা দেশের সমৃদ্ধিতে কাজে লাগানো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা কাজ তখনই বাড়ে যখন পিএইচডি প্রোগ্রাম বেশি হয়। শতবর্ষ উপলক্ষে গবেষণা খাতে আর্থিক বরাদ্দ রয়েছে, যার প্রেক্ষিতে ২৫০০ শিক্ষক গবেষণা প্রস্তাব লিখেছেন এবং এগুলোর মূল্যায়ন সাপেক্ষে তাদের আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। আগামী কয়েকমাসের মধ্যে ফান্ডেড স্কলারশিপ প্রোগ্রাম চালু করা হবে। এর আওতায় দেশী-বিদেশী শিক্ষার্থীরা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে পিএইচডি-এমফিলে ভর্তি হতে পারবে। এর আওতায় তারা টিচার এ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবেও কাজ করতে পারবে। তারা নির্ধারিত সময়ে পিএইচডি শেষ করবে এবং মানসম্পন্ন জার্নালে দুই বা ততোধিক প্রকাশনা করতে হবে।

বিভাগগুলোতে চাকরির বাজারের চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় করে শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যাপারে আলোচনা চলছে বলেও জানান অধ্যাপক মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, চাকরি ক্ষেত্রে যে বিভাগগুলোর গ্র্যাজুয়েটদের চাহিদা কম সেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমানো হবে। এতে তাদের বেকার থাকতে হবে না।

তিনি আরও জানান, যারা দেশে পড়ালেখা শেষ করে বর্তমানে উন্নত দেশগুলোতে শিক্ষকতা বা গবেষণা করছেন তাদেরও একটি তালিকা প্রণয়ন করতে যাচ্ছি। বিভাগগুলো নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী এই তালিকা থেকে খন্ডকালীন, অনারারী বা ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবে। এর বাইরেও শিক্ষা গবেষণায় জড়িত উন্নত দেশের কোন নাগরিক ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে ঢাবিতে সুনির্দিষ্ট সময়ের জন্য গবেষণা ও শিক্ষকতা করার সুুযোগ দেয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান বলেন, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি, শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়ন, গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ ও পরিধি বৃদ্ধিকরণের লক্ষ্যে এসব উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক পরিবেশ, বৈশ্বিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পৃক্ত করা- এ ধরনের কাজগুলো ক্রমান্বয়ে করার পরেই র‌্যাঙ্কিং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতি হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়