ডেস্ক রিপোর্ট: চুপ থাকা নিয়ে চমৎকার একটি মিশরীয় প্রবাদ আছে। কোলাহল যদি রূপার তৈরি হয়, নীরবতা তবে সোনার তৈরি!
♦️আরবী প্রবাদটাও অসাধারণ-
‘তুমি তখনি কথা বলো, যখন তা চুপ থাকার চেয়েও সুন্দর!’
🔸চুপ থাকাকে কেন এতো গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে? কারণ জিহ্বা দ্বারা সংশ্লিষ্ট গুনাহগুলো আমাদের ভালো আমলগুলোকেও নষ্ট করে দিচ্ছে। আমরা সারাদিনে যত কথা বলি, তার বেশিরভাগই অপ্রয়োজনীয়, মিথ্যাচার ও গিবতে পরিপূর্ণ। অথচ মুখ নিঃসৃত প্রতিটি শব্দই লিপিবদ্ধ হচ্ছে।
♦️মহান আল্লাহ্ বলেনঃ
‘মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করুক না কেন, তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে।’
(সূরা কাফঃ১৮)
♦️হাশরের ময়দানে দেখা গেল- আমাদের পূণ্যের চেয়ে পাপের পাল্লা ভারি। অবাক কান্ড! কখনো কারো ক্ষতি করিনি, কারো প্রতি অন্যায় করিনি, তারপরো এ অবস্থা কেন? তখন উত্তর আসবে, এগুলো তোমার মুখ নিঃসৃত পাপের ফল!
এজন্যই আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘অধিকাংশ মানুষ জিহ্বা দ্বারা সংঘটিত পাপের কারণে জাহান্নামে যাবে।’
(তিরমিযিঃ১৬১৮)
🔸তাহলে করণীয়? এর সমাধানও রাসূলুল্লাহ (সা.) দিয়ে গেছেন- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে নতুবা চুপ থাকে।’ (মিশকাত)
♦️জেনে নেওয়া যাক জিহ্বা দ্বারা সৃষ্ট কবিরা গুনাহসমূহঃ
🔸১. মিথ্যা কথা বলা,
🔸২. মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া,
🔸৩. মিথ্যা শপথ করা,
🔸৪. গিবত করা,
🔸৫. পরনিন্দা করা,
🔸৬. অভিশাপ দেওয়া,
🔸৭. খোঁটা দেওয়া,
🔸৮. চোগলখোরি করা।
♦️যেমন হওয়া উচিত আমাদের কথা বলার নীতিঃ
🔸১. কথা বলার আগে সালাম দেওয়া।
(সূরা নূরঃ৬১)
🔸২. সতর্কতার সঙ্গে কথা বলা (কেননা প্রতিটি কথা রেকর্ড হয়)।
(সূরা ক্বফঃ১৮)
🔸৩. সুন্দরভাবে ও উত্তমরূপে কথা বলা।
(সূরা বাক্বারাহঃ৮৩; বুখারীঃ১৪১৩)
🔸৪. অনর্থক ও বাজে কথা পরিহার করা।
(সূরা নূরঃ৩; বুখারীঃ৩৫৫৯)
🔸৫. কন্ঠস্বর নিচু করে কথা বলা। (সূরা লুকমান:১৯, সূরা হুজুরাতঃ২-৩)
🔸৬. বুদ্ধি খাটিয়ে কথা বলা।
(সূরা নামলঃ১২৫)
🔸৭. সঠিক কথা বলা ও পাপ মোচনের দুয়ার উন্মুক্ত করা।
(সূরা আহযাবঃ৭১-৭২)
🔸৮. গাধার মতো কর্কশ স্বরে কথা না বলা।
(সূরা লুকমানঃ১৯; তিরমিযীঃ৪৮৫৯)
🔸৯. উত্তম কথা বলে শত্রুকেও বন্ধুতে পরিণত করা।
( সূরা হা-মীম সাজদাহ্ঃ৩৪)
🔸১০. উত্তম কথায় দাওয়াত দেওয়া। (সূরা হা- মীম সাজদাহ্ঃ৩৪)
🔸১১. ঈমানদারদের কথা ও কাজ এক হওয়া। (সূরা ছফঃ২)
🔸১২. পরিবারের সদস্যদের প্রতি ক্ষমার নীতি অবলম্বন করা । (সূরা আরাফঃ১৯৯)
🔸১৩. মেয়েরা পরপুরুষের সঙ্গে আকর্ষণীয় ও কোমল ভাষায় কথা না বলা। (সূরা আহযাবঃ৩২)
🔸১৪. ছেলেরা পরনারীর সঙ্গে আকর্ষণীয় ও কোমল ভাষায় কথা না বলা।
🔸১৫. মূর্খ ও অজ্ঞদের সাধ্যমত এড়িয়ে চলা।
(সূরা ফুরকানঃ৬৩)
🔸১৬. হাসি মুখে কথা বলা।
♦️আমরা আমাদের জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি তো? নাকি জিহ্বাই আমাদের নিয়ন্ত্রণ করছে? আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন।
আপনার মতামত লিখুন :