শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ৩০ জুলাই, ২০২১, ০৭:১৪ বিকাল
আপডেট : ৩০ জুলাই, ২০২১, ০৭:১৪ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

স্বাদ আর ঐতিহ্য ধরে রেখেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী

তৌহিদুর রহমান : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী খাবার এটি। এখানকার তৈরি ছানামুখীর সুনাম রয়েছে দেশ ও দেশের বাইরে। ওপরে হালকা চিনির আবরণ। ভেতরের পুরোটাই দুধের ছানা।

দেখতে চতুর্ভুজ আকারের ছোট ছোট টুকরা এই মিষ্টান্নের নাম ছানামুখী।বগুড়ার ঐতিহ্যের সঙ্গে যেমন দই, কুমিল্লার যেমন রসমালাই, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, মুক্তাগাছার মণ্ডা, টাঙ্গাইলের চমচম, নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তেমনিই ছানামুখী। জেলা তথ্য বাতায়নে পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী খাবার হিসেবে উল্লেখ আছে এই ছানামুখীর নাম। এক কেজি ছানামুখী তৈরিতে গাভির সাত–আট লিটার দুধ লাগে। প্রতি কেজি ছানামুখীর দাম ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা।

কথা বলে জানা যায় মুখরোচক এই খাবারের পুরানো ইতিহাস, এই মিষ্টির প্রবক্তার নাম মহাদেব পাঁড়ে। বাড়ি তাঁর ভারতের কাশিধামে। বড় ভাই দুর্গা প্রসাদের হাত ধরে আজ থেকে প্রায় শতবর্ষ আগে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। বড় ভাইয়ের মিষ্টির দোকানে কাজ শুরু করেন মহাদেব। একসময় ঘুরতে ঘুরতে চলে আসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে।

বর্তমান জেলা শহরের মেড্ডায় তখন শিবরাম মোদকের একটি মিষ্টির দোকান ছিল। তিনি নিজের দোকানে মহাদেবকে আশ্রয় দেন। মহাদেব আসার পর শিবরামের মিষ্টির সুনাম ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। মৃত্যুর সময় শিবরাম মিষ্টির দোকানটি মহাদেবকে দিয়ে যান। মহাদেব দুটি মিষ্টি বানাতেন। একটি লেডি ক্যানিং বা লেডি ক্যানি, অন্যটি ছানামুখী। এখন জেলায় বেশ কয়েকটি দোকানে ছানামুখী মিষ্টি তৈরি হয়।

এখন আদর্শ মিষ্টান্ন ভান্ডার ছাড়াও জেলা শহরের মধুরাজ মিষ্টান্ন ভান্ডার, মাতৃ মিষ্টান্ন ভান্ডার, মহাদেব মিষ্টান্ন ভান্ডার, ভোলাগিরি মিষ্টান্ন ভান্ডার, ভোলানাথ মিষ্টান্ন ভান্ডার, আনন্দময়ী মিষ্টান্ন ভান্ডারের ছানামুখী প্রসিদ্ধ।

দুলাল চন্দ্র পাল নামে ছানামুখীর এক কারিগর জানান, ৭ থেকে ৮ লিটার দুধের সঙ্গে এক কেজি চিনি দিয়ে তৈরি হয় এক কেজি ছানামুখী। তিনি ছানামুখী তৈরির কয়েকটি ধাপের কথা বললেন। প্রথমে গাভির দুধ জ্বাল দিতে হবে। এরপর গরম দুধ ঠান্ডা করে ছানায় পরিণত করতে হবে। অতিরিক্ত পানি ঝরে যাবে এমন একটি পরিচ্ছন্ন টুকরিতে ছানা রাখতে হবে।

পরে ওই ছানাকে কাপড়ে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখতে হবে, যাতে সব পানি ঝরে যায়। এভাবে দীর্ঘক্ষণ ঝুলিয়ে রাখলে ছানা শক্ত হবে। শক্ত ছানাকে ছুরি দিয়ে ছোট ছোট টুকরায় কাটতে হবে। এরপর চুলায় একটি কড়াই বসিয়ে তাতে পানি, চিনি ও এলাচি দিয়ে ফুটিয়ে শিরা তৈরি করতে হবে। এরপর ছানার টুকরাগুলো চিনির শিরায় ছেড়ে নাড়তে হবে। সব শেষে চিনির শিরা থেকে ছানার টুকরাগুলো তুলে একটি বড় পাত্রে রাখতে হবে। ওই পাত্রকে খোলা জায়গা বা পাখার নিচে রেখে নেড়ে শুকাতে হবে। এতেই প্রস্তুত হয়ে যাবে ছানামুখী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষেরা সব সময় নিজেদের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি হিসেবে ছানামুখীর নাম উল্লেখ করে থাকেন। দেশের যে প্রান্তের মিষ্টি ভিলাসী মানুষেরা যখন বেড়াতে তাদের আপন জনের জন্য সার্ধ্যমত এই মুখরোচক মিষ্টি কিনে নিয়ে যান। এছাড়া দেশের বাহিরে অনেকে যাওয়ার সময় ছানামুখী নিয়ে যান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়