সুজন কৈরী: [২] হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৮ হাজার ৯৫০ পিস ইয়াবাসহ এক যাত্রীকে আটক করেছে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ (এপিবিএন)। আটক যাত্রী হলেন- সাদ্দাম।
[৩] এপিবিএন বলছে, কুমিল্লার বিভিন্ন মাদক কারবারির কাছ থেকে সংগ্রহ করে ইয়াবাগুলো সৌদি আরবে নিয়ে বেশি দামে বিক্রির উদ্দেশ্য ছিলো সাদ্দামের। বুধবার ভোরে সাদ্দামকে আটক করা হয়। সাদ্দামের বিরুদ্ধে এর আগে গত বছর মাদক আইনে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।
[৪] বুধবার বিমানবন্দরের কেনপি-১ এ আযোজিত সংবাদ সম্মেলনে এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জিয়াউল হক বলেন, সাদ্দামের বিমানবন্দর থেকে সালাম এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে করে প্রথমে ওমানের মাস্কাট এবং কানেন্টিং ফ্লাইটে করে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে যাওয়ার কথা ছিলো। বুধবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে তার ফ্লাইট ছিলো। তবে তিনি ভোর ৬টার দিকে বিমানবন্দরে আসেন। সন্দেহভাজন হিসেবে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে সাদ্দাম প্রথমে ইয়াবা থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। কিন্তু তার দেহ ও ব্যাগ তল্লাশি করে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়।
[৫] তিনি বলেন, সাদ্দামের ব্যাগ খুলে উপরে অনেক কাপড় দেখা যায়, তার নিচে সেলাই করা ব্যাগের একটি কাভার ছিল। ওই কাভারের ভেতরে কার্বন পেপার ও স্কচটেপ মোড়ানো অবস্থায় এসব ইয়ারা থাকতে দেখা যায়।
[৬] এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, সাদ্দামকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তিনি ইয়াবাগুলো ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পিস হিসেবে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন। এগুলো যদি তিনি সৌদি আরবে নিয়ে যেতে পারতেন, তবে প্রতি পিস এক থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করতেন। সেখানে প্রতি পিস ইয়াবায় তার ৮০০ থেকে ১৩০০ টাকা করে লাভ হতো।
[৭] জিয়াউল হক বলেন, সাদ্দামের বাড়ি কুমিল্লার কোটবাড়ি এলাকায়। সেখানে ইয়াবা পাচারের একটি চক্র রয়েছে। ওই চক্রটি তাকে সৌদি আরবে যাওয়ার টিকিট বা ভিসা করে দিয়েছে। জানা গেছে, এই ইয়াবাগুলো বিক্রির পর সাদ্দামও একটি লভ্যাংশ পেতেন। ইয়াবাগুলো নিয়ে তিনি সৌদি আরবের দাম্মামের এক প্রবাসীর কাছে হস্তান্তর করতেন। সাদ্দামকে জিজ্ঞাসাবাদে আমরা ইয়াবা পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত বেশকিছু সদস্যের নাম পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
[৭] অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হক বলেন, আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি, ২০২০ সালে সাদ্দাম ইয়াবা পাচারের সময় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ওই মামলায় তিনি জামিনে রয়েছেন। এরই মধ্যে ইয়াবার বড় এই চালান তিনি সৌদি আরবে পাচার করতে যাচ্ছিলেন। তিনি এই পথে নতুন নন।
[৮] সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা ইয়াবাসেবী রয়েছেন তারা এবং কিছু সৌদি আরবের নাগরিকরাও বর্তমানে ইয়াবা সেবন করছেন।
[৯] তিনি বলেন, মাদকের কারবারিরা একটি নতুন ট্রেন্ড শুরু করেছে। অতিরিক্ত লাভের আশায় ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইটগুলোর মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তারা ইয়াবা পাচারের চেষ্টা করছে। তবে আমাদের এখান দিয়ে যাওয়ার আগেই বিমানবন্দরের স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে অবশ্যই ধরা পড়বে।
আপনার মতামত লিখুন :