মিরাজুল ইসলাম : একদা পুরো মহাভারতজুড়ে ছিলো দক্ষ তীরন্দাজের ছড়াছড়ি। বাংলাদেশেও তার ব্যতয় ঘটলো না। পৌরাণিক মহাভারতে ছিলেন দ্রোণাচার্য, অর্জুন কিংবা কর্ণের মতো বীর তীরন্দাজ। তবে আমার ব্যক্তিগত আবেগ অনার্য একলব্যকে ঘিরে। যিনি তীরন্দাজ হওয়ার সাধনার ডান হাতের বুড়ো আঙ্গুল বিসর্জন দিয়েছিলেন গুরু দ্রোণের কাছে। যা ছিলো আর্য গোত্রের শঠতা। কিন্তু চার আঙ্গুল দিয়েও একলব্যের বীরত্ব ঠেকিয়ে রাখা যায়নি।
আরও অনেক হাজার বছর পরে আমাদের প্রতিবেশী সাঁওতালীরা তীর ধনুক নিয়ে আগ্রাসনের বিপক্ষে লড়াই করেছিলেন। দেশি সৈন্যরাও যুদ্ধ করেছিলো সুলতানী বা মুঘল আমলে কিংবা ইংরেজদের বিরুদ্ধে তীর ধনুক নিয়ে। সেই গল্পগুলো হারিয়ে গেছে। রোমান সানা পুরাণ থেকে বাস্তবে আমাদের ফিরিয়ে নিলেন। একজন বাংলাদেশি ‘একলব্য’ তিনি। আগামী ২৭ জুলাই সানা লড়বেন ব্রিটেনের টি হলের বিপক্ষে। অলিম্পিকে বিশ্ব তীরন্দাজদের এলিট গ্রæপে লড়বেন সানা। বর্তমানে তার অবস্থান ১৭ নম্বরে। প্রতিদ্ব›দ্বী টি হল আছেন ৪৭ নম্বরে।
অলিম্পিকে প্রথম একটি পদক পেতে সানাকে আরও কয়েকটি ধাপ পার হতে হবে। একলব্য শেষ যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন যাবতীয় কৌশলের কাছে। আর্যগণ চেয়েছিলেন একলব্য যেন অর্জুনের চেয়েও শক্তিশালী না হন। হেরে গেছেন অবশেষে। সানা কি পারবেন নিজের জাতি পরিচয়ের উর্ধ্বে উঠতে! বাংলাদেশের যাবতীয় দুবর্ল অবকাঠামোগত অবস্থানের ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক কালের একলব্য হিসেবে সবাইকে অবাক করে দিতে?
সানার একটি পদকের মূল্যমান বোঝার ক্ষমতা সম্ভবত আমাদের এখনো হয়নি। যদি সানা ব্যর্থ হন তাও আগাম শুভ কামনা। বাঙালির তীরন্দাজ হিসেবে খ্যাতি নতুনভাবে পরিচয় করাবার জন্য। লেখক ও চিকিৎসক
আপনার মতামত লিখুন :