রহিদুল খান: [২] কোরবানি ঈদের পর যশোরের রাজারহাটে প্রথম চামড়ার বাজার বসে শনিবার। এদিন আনুমানিক চার কোটি টাকার চামড়া কেনাবেচা হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা বলছেন। তবে, জেলা বাজার কর্মকর্তার তথ্য, ৭০ লাখ টাকার মতো চামড়া বিক্রি হয়েছে রাজারহাটে।
[৩] শনিবার (২৪ জুলাই) সকাল থেকেই চামড়া আসতে শুরু করে। বেচাকেনা শুরু হয় আটটা বাজার সাথে সাথে। তবে, বৃষ্টি এবং লকডাউন চামড়ার হাটে প্রভাব ফেলে। লকডাউনের কারণে ঢাকার বড় বড় আড়ৎদাররা আসেননি। আর বৃষ্টির কারণে রাজারহাটে চামড়া আনতে পারেননি অনেক খুচরা বিক্রেতা। তারপরও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অন্যান্য বছরের মতো হতাশ না।
[৪] এ বছর কোরবানির ঈদ হয়েছে বুধবার। ঈদের পর শনিবার ছিল দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার বাজার রাজারহাটে প্রথমদিনের বেচাকেনা। এদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্ষুদ্র এবং মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া আনেন বিক্রির উদ্দেশ্যে।
[৫] বৃহত্তর যশোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুকুল জানান, শনিবারের হাটে গরুর ৩০ হাজার এবং ছাগলের ৩৫ হাজার চামড়া আসে। যা নগদ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আনুমানিক চার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে দাবি করেন মুকুল।
[৬] তবে, জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান জানান, ১২ হাজারের মতো গরু ও একই পরিমাণ ছাগলের চামড়া ওঠে রাজারহাটে। গরুর প্রতি পিছ ছোট এবং কাটাছেঁড়া চামড়া ২’শ ৫০ থেকে ৩’শ, মাঝারি চামড়া ৪’শ থেকে ৪’শ ৫০ এবং বড় চামড়া ৮’শ থেকে ৯’শ টাকায় বিক্রি হয়েছে। একইভাবে ছাগলের প্রতি পিছ চামড়া ২০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। সেই হিসেবে ২৪ হাজার চামড়া কেনাবেচায় আনুমানিক ৭০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
[৭] তবে, কোনো কোনো বিক্রেতা বলেন, ছাগলের চামড়া সর্বনিম্ন পাঁচ টাকা এবং গরুর চামড়া ১শ’-১শ’২০ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে।
[৮] চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির নেতা আলাউদ্দিন মুকুল দেন ভিন্ন তথ্য। তিনি বলেন, রাজারহাটে প্রথমদিনের বাজারে গরু-ছাগল মিলে ৬৫ হাজার চামড়া বিক্রি হয়েছে। যাতে লেনদেন হয়েছে আনুমানিক চার কোটি টাকা। এসব চামড়া সম্পূর্ণ নগদ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
[৯] তিনি জানান, চামড়ার বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কারণে। তার দাবি, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া চিনেন না। একইসাথে তারা চামড়া সংরক্ষণ করতে পারেন না। সময়মতো লবণ দেন না। ফলে, তাদের কেনা চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে তারা ঠিকমতো দাম পান না। তিনি মৌসুমি ব্যবসায়ীদের চামড়ার ব্যবসা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান।
[১০] কথা হয় রাজারহাটে চামড়া নিয়ে আসা উজ্জ্বল নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর সাথে। তিনি বলেন, ‘বাজার একেবারে খারাপ না।’ রফিউদ্দিন নামে আরেক ব্যবসায়ীর বক্তব্য, ‘লকডাউনের কারণে চামড়ার দাম কম ছিল। লকডাউন না থাকলে আরও বেশি দামে চামড়া বিক্রি হতো।’
[১১] খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, এ বছর কোরবানির পরপরই প্রশাসন ব্যাপকভাবে তৎপর ছিল। যাতে কোনোভাবেই রাজারহাট থেকে চামড়া পাচার না হয় সেদিকে নজর ছিল জেলা প্রশাসনের।
[১২] জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান নিজেই বিষয়টি মনিটরিং করেন বলে জানান জেলা বাজার কর্মকর্তা। তিনি বলেন, লবণের যাতে কোনো সংকট না হয়। ব্যবসায়ীরা যাতে সময়মতো লবণ পান সেদিকে কড়া দৃষ্টি ছিল প্রশাসনের। পুলিশও ছিল ব্যাপক তৎপর। ফলে, চামড়া নিয়ে কোনো রকম সমস্যার সম্মুখিন হননি ব্যবসায়ী কিংবা আড়ৎদাররা। সম্পাদনা: হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :