শাহীন খন্দকার: [২] মঙ্গলবার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান বলেন, বুধবারের (২১ জুলাই) ঈদ উল আজহাকে কেন্দ্র করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীদের পাশাপাশি মশক নিধন কর্মীরাও দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে যে, আমরা নির্ঘুম রাত কাটাই বলে নগরবাসী নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারেন। সেই ধারা ঈদের মৌসুমেও অব্যাহত থাকবে। ১১ হাজারের অধিক কর্মী বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় থাকবে। তাদের পাশাপাশি মশক নিধন কর্মীরাও থাকবে।
[৩] এদিকে মশা নিধনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) পরিচালিত চিরুনি অভিযান শেষ হয়েছে সোমবার (১৯ জুলাই)। এ অভিযানে ১০১টি পৃথক মামলায় মোট জরিমানা আদায় করা হয়েছে ১০ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। ডিএনসিসি বলছে, জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনে আবারও হবে বিশেষ অভিযান। গেল সপ্তাহের শনিবার (১১ জুলাই) মশা নিধনে চিরুনি অভিযান শুরু করে ডিএনসিসি। মাঝের এক শুক্রবার বাদ দিয়ে অভিযান চলে আট দিন। ডিএনসিসি আওতাধীন ৫৪টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
[৪] অভিযানকালে মোট ৮৮ হাজার ৬১৬টি বাড়ি-ঘর ও অন্যান্য স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়। এগুলোর মধ্যে ৫৮২টি স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এসব লার্ভা স্থানের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থাপনায় লার্ভা প্রজননে সক্ষম পরিবেশ পাওয়া গেলে সেগুলোও ধ্বংস করে দেয় ডিএনসিসি। ৬৫ হাজার ২৬২টি স্থাপনায় লার্ভিসাইড স্প্রে করা হয়।
[৫] ডিএনসিসির অভিযান সংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পানির মিটার, ফুলের টব, পানির রিজার্ভার, গ্যারেজ, বালতি, ভাঙা মগ, ডাবের খোসা, কৌটা, প্লাস্টিকের ফ্যান-বোতলসহ বিভিন্ন দ্রব্য, বাড়ির পেছনের ড্রেন, খালি প্লট, ডোবাসহ বাসাবাড়ির ভেতরেও এডিস মশার লার্ভা ও লার্ভা প্রজননে সহায়ক পরিবেশ পাওয়া গেছে।
[৬] এডিস মশার লার্ভা সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির অপরাধে ১২টি নিয়মিত এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৮৯টি মামলা দায়ের করা হয়। মোট ১০১টি মামলার বিপরীতে মোট ১০ লাখ ৮৯ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য ও আদায় করে ডিএনসিসি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মামলা দায়ের ৩ নম্বর অঞ্চল থেকে। এই অঞ্চলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৩৮টি মামলা দায়ের করা হয়। জরিমানা আদায় করা হয় তিন লাখ ৩১ হাজার ৯০০ টাকা। তবে সবচেয়ে বেশি জরিমানা আদায়
[৭] করা হয় ২ নম্বর অঞ্চল থেকে। এই অঞ্চলে ১০টি নিয়মিত মামলা এবং ১৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের দায়ের করা মামলা থেকে মোট তিন লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়াও অঞ্চল-১-এ ভ্রাম্যমাণ আদালতের ২৪টি মামলায় দুই লাখ তিন হাজার ৫০০ টাকা, অঞ্চল-৫-এ দুটি নিয়মিত এবং একটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলা থেকে এক লাখ টাকা এবং অঞ্চল-৬-এ ভ্রাম্যমাণ আদালতের ১৩টি মামলা থেকে ৭১ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় ও ধার্য করা হয়।
[৮] এ ধরনের অভিযান ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসছে দাবি করেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, এ অপারেশনগুলো ভালো হচ্ছে। ইতিবাচক ফলাফল দিচ্ছে। তবে মানুষের ভেতর সচেতনতা বাড়াতে আরও কাজ করতে হবে। আমরা মাইকিং করছি, লিফলেট বিতরণ করছি, রেডিও টেলিভিশনে সচেতনামূলক বিজ্ঞাপন দিচ্ছি। মানুষ যদি সচেতন হয় তাহলে পানি জমা হবে না বিশেষ করে বৃষ্টির পানি জমবে না, মশাও উৎপন্ন হবে না। সম্পাদনা : ভিকটর রোজারিও
আপনার মতামত লিখুন :