শিরোনাম
◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে

প্রকাশিত : ১১ জুলাই, ২০২১, ০৬:৩৮ বিকাল
আপডেট : ১১ জুলাই, ২০২১, ০৬:৩৮ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কামরুল হাসান মামুন: প্রফেসর আব্দুস সালামের মত একটি সেন্টার আর কেউ তৈরি করতে পারেননি

কামরুল হাসান মামুন: ১৯৪৭ এর পূর্বে প্রফেসর আব্দুস সালাম যখন মেট্রিক পরীক্ষায় রেকর্ড নম্বর পেয়ে পাশ করার সংবাদ তার নিজ শহরে ছড়িয়ে পরে। ফলাফল পাওয়ার পর সে যখন সাইকেল চালিয়ে বাসায় ফিরছিল পথে পথে মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে করতালির মাধ্যমে তাকে অভিনন্দন জানায়। তখন কেউ প্রশ্ন করেনি সেতো কাদিয়ানী, সেতো মুসলমান না ইত্যাদি। অথচ ৪৭ এর পরে কদিয়ানীকে অমুসলিম ঘোষণা করে। তার কবরে লেখা ছিল মুসলিম বিজ্ঞানী সেখান থেকে "মুসলিম" শব্দটি মুছে ফেলে। সারাটি জীবন মুসলমানদের জন্য কতকিছুই না করে গেছেন।

পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটি থেকে রেকর্ড মার্ক্স্ নিয়ে মাস্টার্স করে প্রফেসর সালাম ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে যান। সেখানে পিএইচডি শেষে আবার পাকিস্তানে ফিরে আসেন। তার ইচ্ছে ছিল একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান খুলে নিজে গবেষণা করবেন এবং অন্যদের গবেষণার অনুপ্রেরণা দিবেন। তিনি প্রথমে জয়েন করেন একটি সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসাবে পরে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের প্রধান হিসাবে জয়েন করেন। সেইদুটি জায়গায় কাজ করতে গিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই বুঝতে পারেন দেশে বসে যেইরকম বিশ্বমানের কাজ তিনি করতে চান তা সম্ভব না। ঠিক তখনই তিনি আবার ইংল্যান্ডে ফিরে যান।

নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তৃতীয়বিশ্বে বিশেষ করে এই উপমহাদেশে গবেষণা করা কত কঠিন। সেটা বুঝতে পেরে তিনি ইতালিতে গড়ে তুলেন একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যাতে তৃতীয় বিশ্বের শিক্ষক গবেষকরা এসে কিছুদিনের জন্য সুন্দর পরিবেশে থেকে বিশ্বমানের গবেষকদের সাথে কাজ করার সুযোগ পায়। সেজন্য নোবেল পুরস্কার পাওয়ার অনেক আগেই জাতিসংঘ এবং ইতালির সরকারের কাছে আবেদন করেন। ইতালির সরকার তাকে জায়গা নির্বাচন করতে বলেন। সারা ইতালি ঘুরে ত্রিয়েস্ত শহরকেই তিনি বেছে নেন। সমুদ্র আর পাহাড়ের মিলনস্থলেই তৈরী করেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিওরিটিক্যাল ফিজিক্স। নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর পুরস্কারের সমস্ত অর্থও তিনি তৃতীয়বিশ্বের শিক্ষা ও গবেষণা খাতেই ব্যয় করেন। এই জন্যই আমি বলি এই পর্যন্ত ২১৬ জন পদার্থবিদ নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন কিন্তু এইরকম আর একজনকেও পাওয়া যাবে না যিনি প্রফেসর সালামের মত একটি সেন্টার তৈরী করতে পেরেছেন।

প্রফেসর সালামের একটা স্বপ্ন ছিল যে তৃতীয় বিশ্বের ছেলেমেয়েরা পিএইচডি করতে যাবার আগে উন্নত বিশ্ব আর তৃতীয় বিশ্বের লেখাপড়ার যে গ্যাপ আছে সেইটা একটা ডিপ্লোমা কোর্সের মাধ্যমে মিটিয়ে তারপর পিএইচডি করুক। উনার সেই স্বপ্নের কোর্স শুরু হয়েছে উনি অবসরে যাওয়ার পর যখন তার শরীর সত্যিই অনেক খারাপ। আমি ছিলাম সেই প্রথম ব্যাচের ডিপ্লোমা কোর্সের একজন। আমি ছিলাম কনডেন্সড ম্যাটার ফিজিক্সে আর বাংলাদেশ থেকে হাই এনার্জি ফিজিক্সে ছিল আরশাদ মোমেন। সেই ডিপ্লোমা কোর্সের ৩০ তম বর্ষ খুবই ধুমধামে উদযাপন করতে যাচ্ছে ICTP! ভাবা যায় এর মধ্যে ৩০টি বছর চলে গেছে অথচ সবকিছুই আমি গতকালকের মত করে স্মরণ করতে পারি। এই ডিপ্লোমা কোর্সই আমার জীবনের কোর্সকে পাল্টে দেয় academically এবং পার্সোনাল লাইফেও।

লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়