কামাল আহমেদ: সজীব করপোরেশনের কারখানায় আগুনের বিষয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের ভাষ্যগুলো থেকে যে কটি তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। [১] ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত করেছে ভবনটি আইন অনুযায়ী হয়নি, যে কারণে জরুরি বেরুনোর জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক সিঁড়ি ছিল না। [২] প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম ছিল না। [৩] প্রধান কারখানা পরিদর্শকের দপ্তরের কর্মকর্তা বলেছেন কারখানা চালুর পর তা পরিদর্শন করা হয়নি এবং গত দশ বছরে বারবার অনুরোধ জানিয়েও পরিদর্শনের অনুমতি মেলেনি। তারপরও তাঁরা কারখানা পরিচালনার অনুমতি বার্ষিকভিত্তিতে নবায়ন করে এসেছেন।
[৪] নিহতদের মধ্যে শিশুদের লাশ উদ্ধার প্রমাণ করে কোম্পানিটি শিশুশ্রম আইন ভঙ করে আসছিল। [৫] শ্রমিকরা জানিয়েছেন তাঁরা গত মাসের বেতন পাননি এবং কিছুদিন আগে ছয়মাসের বকেয়ার জন্য তাঁরা সড়ক অবরোধ করেছিলেন। অর্থাৎ, বেতন-ভাতা পরিশোধেও মালিকপক্ষ কোনো নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করেন না। [৬] প্রতিষ্ঠানটির মালিক ক্ষমতাসীন দলের টিকিটে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ২০১৮ সালেও মনোনয়ন চেয়েছিলেন। [৭] কোম্পানিটি পাকিস্তানের সেজান কর্পোরেশনের লাইসেন্সে তাতের ফর্মুলায় জুস তৈরি করে দেশে বাজারজাত করা ছাড়াও বিদেশে রপ্তানি করে।
এসব তথ্য থেকে আলামত মেলে যে ক্ষমতাসীন দলের সদস্যপদ এবং রপ্তানিমুখী শিল্পের অজুহাত ব্যবহার করে তারা গত এক দশক ধরেই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আসছে। সুতরাং এটিকে যেমন নিছক দুর্ঘটনা বলার অবকাশ নেই, তেমনি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইলে আগে বলতে হবে আইনের শাসনের কথা। আইনের শাসন চাইতে হলে যে গণতন্ত্র প্রয়োজন সেকথাটি অবশ্য আমরা অনেক আগেই বিস্মৃত হয়েছি। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :