প্রভাষ আমিন: আশ্রয়ণ প্রকল্পে যা হয়েছে, তা অস্বাভাবিক নয়; এটাই এখন বাংলাদেশের চিত্র। ঠিকাদার আর ইঞ্জিনিয়ারের যোগসাজসে নিম্নমানের সামগ্রীতে অবকাঠামো নির্মাণই বাংলাদেশের রীতি। কোনোরকমে কাজ করে বিল তুলে নিতে পারলেই হলো। উদ্বোধনের আগেই ভেঙে পড়া, রাস্তা ডেবে যাওয়া, রডের বদলে বাঁশ দেওয়ার খবরও আমরা পাই। তবে আশ্রয়ণ প্রকল্পে যারা দুর্নীতি করেছেন, তাদের সাহস দেখে আমি বিস্মিত। তারাও নিশ্চয়ই জানেন, এটা প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আগ্রহের প্রকল্প। এই প্রকল্পের সব খবর মুহূর্তেই প্রধানমন্ত্রীর কানে পৌঁছে যাবে। তারপরও যারা করেছেন, তারা আসলেই সাহসী। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তদন্ত চলছে। দাবি করছি, দায়িদের সবার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আর শুধু আশ্রয়ণ প্রকল্প নয়, সব প্রকল্পের দুর্নীতির বিরুদ্ধেই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক, যাতে উন্নয়নটা টেকসই হয়। আশ্রয়ণ প্রকল্পে দুর্নীতির খবর দেখে আমার খালি তৈলাক্ত বাঁশের অংকটা মনে পড়ছে। একটা বানর বাঁশ বেয়ে ওপরে উঠছে, কিন্তু বাঁশটি তৈলাক্ত হওয়ায় আবার নেমেও যাচ্ছে কিছুটা। ফলে তার বাঁশের আগায় ওঠতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। শত প্রতিকূলতা, বাধা ঠেলে শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু দলের ভেতরে-বাইরে অনেকগুলো অপশক্তি শেখ হাসিনার সেই অর্জনকে বিসর্জনে বদলে দিচ্ছে। ছাত্রলীগ বা যুবলীগের একেকটি অপকর্ম শেখ হাসিনার অনেক অর্জনকে ম্লান করে দেয়। এই যেমন আশ্রয়ণ প্রকল্পের মতো একটি মানবিক ও স্বাপ্নিক প্রকল্পে এখন আলোচনা হচ্ছে দুর্নীতি আর অনিয়মের খবর নিয়ে। হয়তো ১ শতাংশ ঘর ভেঙেছে। অনেকে এটুকু অনিয়মকে গ্রহণযোগ্য মাত্রাও দিতে চাইবেন। কিন্তু এক লাখের এক শতাংশ মানে একশো। আশ্রয়ণ প্রকল্পে একশো ঘর ভাঙলে সেটা অবশ্যই বড় খবর। আমরা চাই সব অনিয়মের তদন্ত হোক, ভাঙা ঘর মেরামত। হোক। শেখ হাসিনার স্বপ্ন যেন মিলে যায় ঘরহীন প্রান্তিক মানুষটির সঙ্গে। লেখক : হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ
আপনার মতামত লিখুন :