শিরোনাম
◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ০৯ জুলাই, ২০২১, ০৬:০৬ বিকাল
আপডেট : ০৯ জুলাই, ২০২১, ০৬:০৬ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রজনন মৌসুমে দেশি মাছ শিকারে কমছে উৎপাদন

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ বর্ষার শুরুতে নতুন পানি দেশি মাছের প্রজননের সর্বকৃষ্ট সময়। এ সময় নতুন পানিতে ভেসে আসা পোনা ও ডিমওয়ালা মা মাছ নিধনের কারনে লালমনিরহাটে কমছে দেশি মাছে উৎপাদন।

জানা গেছে, আঁষাড় শ্রাবন মাসে নতুন পানিতে ভড়ে উঠে গ্রামের সকল পুকুর-ডোবা, খাল, বিল ও নদী-নালা সব কিছুই। এ সময় সামান্য পানিতেও ভেসে আসে পোনা আর ডিমওয়ালা মাছ। এসব মাছ শিকারে মেতে উঠে পেশাদার জেলেসহ মৌসুমী জেলেরা। ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ে এসব দেশি ডিমওয়ালা মাছ। এ সময় হাট-বাজার, বিলের ধার, নদীর পাড় ও রাস্তার ধারেও প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে এসব পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ। যদিও পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ শিকার, ক্রয়-বিক্রয় আইনত অপরাধ। কিন্তু তা আইনের খাতায় ফাইল বন্দিই থাকে। কখনই বাস্তবে প্রয়োগ হয় না।

বছর ঘুরে মৎস সপ্তাহে খাতার শুন্যস্থান পুরনে এক/দুইটা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে মৎস বিভাগ দায়িত্ব শেষ করেন বলে অভিযোগ স্থানীয় সুশিল সমাজের। তাদের দাবি প্রজনন মৌসুমের দুই মাস না হলেও অনন্তত এক মাস দেশি মাছ শিকার, আহোরন, ক্রয়-বিক্রয় কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হলে দেশি মাছে ভরে উঠবে পুরো দেশ। যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানী করা সম্ভব হবে। প্রজনন মৌসুমে সাগরে ইলিশ শিকার কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রন করায় বর্তমানে দেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। প্রয়োজনে জেলেদের প্রনোদনা দিয়ে হলেও বাস্তবায়ন চান সুশিল সমাজ।

স্থানীয় জেলেরা জানান, পুঁটি, ডারকা,মলা, ঢেলা, চোপড়া, টাকি, শোল, বোয়াল, টিংড়ি, মাগুর, শিং, কৈ, টেংরা, চেলা, পাবদা, ফলি ও বাইম মাছসহ নানান জাতের দেশি মাছে ভরপুর ছিল তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদীর জেলা লালমনিরহাট। এছাড়াও অসংখ্য ছোট নালার এ জেলায় মাছের চাহিদার চেয়ে উৎপাদন প্রায় ৮/১০ হাজার মেঃটন কম। দেশের বাজারে এসব দেশি মাছের চাহিদাও প্রচুর। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কমে যাওয়ায় অনেকেই এসব মাছের স্বাদ নিতেও পারেন না। প্রজন মৌসুমে পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ নিধন বন্ধ না করা এবং আগের মত উন্মুক্ত জ্বলাশয় না ধাকায় এসব মাছে সংকট দেখা দিয়েছে। আবার কিছু প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হতে বসেছে।

এক একটি মা মাছ থেকে ২০/২৫ হাজার পোনা পাওয়া সম্ভব। এসব পোনা মাছ বড় হওয়ার সুযোগ দিলে দেশি মাছের চাহিদা পুরন করে বিদেশে রফতানি করা সম্ভব। দেশে এসব মাছের চাহিদা বেশি থাকায় ও পেটের দায়ে জেলেরা ডিমওয়া বা পোনা মাছ ধরে বিক্রি করছেন। সরকার নিষিদ্ধ ঘোষনা করে প্রনোদনা দিলে এক মাস তারা দেশি মাছ ধরা বন্ধ করতেও রাজি রয়েছেন। তবুও তারা চান পুর্বের মতই এসব মাছে দেশ ভরে উঠুক।

এসব পোনা মাছ নিধনের কারেন্ট জাল সরকারী ভাবে ক্রয়-বিক্রয়, সংরক্ষন ও পরিবহন নিষিদ্ধ হলেও লালমনিরহাটের প্রায় সকল বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। যা বন্ধে প্রশাসনের তেমন কোন উদ্যোগ নেই বললেই চলে। এজন্য ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জেল জরিমানার বিধান থাকলেও তা বাস্তবে প্রয়োগ নেই। শুধু মাত্র মৎস সপ্তাহে একদিন ভ্রাম্যামান আদালত পরিচালিত হয় জেলার বাজার গুলোতে।

এসব কারনে ডিম ছাড়ার আগেই প্রায় ৬০/৭০ শতাংশ মা মাছ জেলেদের জালে আটকে বাজারে চলে যাচ্ছে। এছাড়াও জেলার ছোট ছোট নদী ও সরকারী উন্মুক্ত জলধারা সমুহে কতিপয় অসাধু ব্যাক্তি আঁড়া-আঁড়ি বাঁধের ফাঁদ বসিয়ে মাছের স্বাভাবিক চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এসব কারনে দেশি মাছের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। কোন প্রজাতির দেশি মাছ বিলুপ্ত হচ্ছে।

জেলা মৎস অফিস জানায়, দেশি মাছের উৎপাদনের জন্য ১৪টি মৎস অভায় আশ্রম থাকলেও সংস্কারের অভাবে ১০টিতে মাছ চাষ সম্ভব হয়নি। জেলার ৫টি উপজেলা ও দুইটি পৌরসভায় মোট মাছের চাহিদা রয়েছে ৩০ হাজার ৬৫০ মেঃটন। উৎপাদন হয় মাত্র ২৩ হাজার ৭শত মেঃটন। মাছ উৎপাদনে ঘাটতি রয়েছে তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদী বেষ্টিত এ জেলায়। আধুনিক পদ্ধতিতে দেশি মাছ চাষে চাষিদের প্রশিক্ষন দেয়া হচ্ছে। জেলায় প্রায় ৭ হাজার জেলের নিবন্ধন করা হয়েছে।

জেলা মৎস অফিসার ফারুকুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন কারনে মৎস অভায়াশ্রম গুলো চাষের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ নিধনের কারেন্ট জাল জব্দে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। গত সপ্তাহে পাটগ্রামে দেড় লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। নিবন্ধিত ৭হাজার জেলেকে বর্ষার শুরু থেকে ২/৩ মাস প্রনোদনা দিয়ে মাছ আহোরন নিষিদ্ধ করলে দেশি মাছের উৎপাদন এ জেলায় ৩/৪ গুন বাড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়