শিরোনাম
◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০৮ জুলাই, ২০২১, ০৫:০৩ বিকাল
আপডেট : ০৮ জুলাই, ২০২১, ০৫:০৩ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] এভাবে চলতে থাকলে তো না খাই মরমু

রুবেল মজুমদার : [২] দু-এক বেলা না খেয়ে থাকলেও পেটকে বোঝানো যায়, কিন্তু সপ্তাহে কিস্তিওলারা তো মানবেন না। যেভাবেই হোক তাদের টাকা জোগাড় করে দিতে হবে। করোনায় সরকার লকডাউন দেওয়ার পর থেকে বেচাকেনা নেই।কয়েকদিন পর ঈদ,টানা একমাস পর মঙ্গলবার দোকান টা খুললাম,পুলিশ একটু পরপর দৌড়ানি দেয়। তাই টুকটাক কাজ করে কিস্তির টাকা জোগাড় করি।এর মাঝেও দোকান খোলার অপরাধে জরিমানা দিতে হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেট কে।আমরা কই যামু,এবাবে চলতে থাকলে তো না খেয়ে মরবো।কথা গুলো বলছেন কুমিল্লায় নগরীর চকবাজার এলাকায় ২০ বছর ধরে কামার পেশা সাথে জড়িত পিন্টু কর্মকার ।

[৩] বৃহস্পতিবার (০৮জুন) সকালে কুমিল্লায় নগরীর চকবাজার, শাসনগাছা, আমতলী, কামারপট্টি এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, সুজন কর্মকার , বেনু কর্মকার, বাবুচন্দ্র, কৃষ্ণপালরা অবসর সময় পার করছেন। ঝিমানো দূর করতে একটু পর পর চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছেন চকবাজার কামার পল্লীর ৮৬ বছরের বৃদ্ধ সুজন কর্মকার ।তার দোকানে হরপ্রসাদ ও শ্যামল দাস উত্তপ্ত লোহায় হাতুড়ি আর হামারের বাড়ি দিচ্ছেন। গ্রেন্ডার মেশিনে আলতো পরশে লোহার মরিচা দূর করছেন বাবুচন্দ্র।

[৪] প্রতি বছর ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বাড়তি আয়ের আশায় দিনরাত পরিশ্রম করে থাকে। কোরবানির পশুর মাংস কাটার সরঞ্জাম তৈরির কাজে কামার পল্লীতে সবসময় ব্যস্ত থাকলে এবার দেখা গেছে ভিন্নতা। এবছর পল্লীজুড়ে ক্রেতা শূনত্যা ,জেলার বৃহত্তর চকবাজার বাজারের কামারপাড়া এলাকায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ৩২ টি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে।একমাত্র কামারের কাজ করে তারা পরিবারের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে এই পেশায় নিয়োজিত থেকে দিনরাত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে থাকে। কামার পল্লীতে তারা লোহা পুড়িয়ে লাল করে হাতুড় দ্বারা পিটিয়ে ছুরি, দা, বটি ও চাপাতি তৈরি করে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করে থাকে।একই চিত্র নগরী আরো ছোট ছোট কয়েকটি কামার পল্লীর ।

[৫] কামারিরা ১ মাস আগে থেকে কোরবানির পশুর মাংস কাটতে শতশত ছোট, বড় ছুরি, চাপাতি গরু জবাই ও মাংস কাটার জন্য মজুুদ করে রাখত। প্রতিটি বড় ছুরি ৭শত টাকা, ছোট ছুরি ২০ টাকা ও চাপাতি ৩শত টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করা হত। তাদের তৈরি করা এসব সরঞ্জাম কিনতে দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা আসত। কিন্তু এবছর করোনায় লকডাউন কারনে পরিবহনের না থাকায় পাইকাররা না আসায় বিক্রি একেবারেই কম হওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের।

[৬] চকবাজারের শ্যামল কর্মকার জানান, ইদের আর কয়েকদিন বাকী কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সব কামারররা পূঁজি বিনিয়োগ করে। গত বছর করোনা ও কঠোর লকডাউন থাকার বিক্রি করতে পারি নি ।সারা বছর আমরা কস্ট দিনযাপন করছি। এ বছর তিনিও ৫০ হাজার বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু বাজারের অবস্থা খুবই খাবার । সারাদিন মাত্র তিন ক্রেতা আসছে ।গত বছরে মতো যদি এমন অবস্থা চলমান থাকে তাহলে আমাদের একটা বাপ-দাদার এই পেশা পরিবর্তন করে অন্য কাজ খুঁজতে হবে। আমরা খুবই মানবেতর জীবন যাপন করা ছাড়া উপায় থাকবে না।কেউ আমাদের সহযোগিতা করছে না ।

[৭] চকবাজার কর্মকার সমিতির সভাপতি মধুসুধন কর্মকার বলেন দা, ছুরি, বটি, চাপাতিসহ পশু কোরবানি ও গোশত কাটার জন্য যে সব ধারালো তৈজসপত্র লাগে তারা তৈরি করেন। গত কয়েক বছর কামারপল্লী ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না।মানুষ এখন বিদেশি আধুনিক জিনিসপত্র দিকে ঝুঁকছে এর মাঝে গত বছরের মতো এ বছর করোনা নিয়ে পার করতে হচ্ছে কোরবানির ঈদ। বাজার আবস্থা তো আপনারও নিজ চোখে দেখলেন ।

[৮] এ বিষয় কুমিল্লা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক এ,এস,এম জোবায়েদ বলেন, সমগ্র জেলা কামার জনগোষ্ঠীদের আমরা বিভিন্ন সময় একাধিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি। সম্প্রতি এই জনগোষ্ঠীদের জন্য সরকারে একটি প্রকল্প আমাদের হাতে রয়েছে। আমাদের প্রকল্পটি কাজ শুরু করবো। এছাড়া কিছুদিন আগেও আমরা প্রতিজন কামারদের ছয়মাসের প্রশিক্ষণসহ ১৮,০০০ টাকার দিয়েছি।সরকারি সহযোগিতা আসলে আমরা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা তাদের কাছে পাঠাবো। সম্পাদনা : সাদেক আলী

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়