লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ [২] মেহেদী হাসান (৩২)। তার প্রাইভেট ছাত্রীর মা দুই সন্তানের জননী এক নারীর সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। পরে সেই প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়েও যান মেহেদী হাসান। তাদের সেই প্রেমে বাধ সাজে ওই নারীর স্বামী। তার স্ত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করা হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে স্ত্রীর প্রেমিক মেহেদী হাসান ও তার পিতা-ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই নারীর স্বামী।
[৩] সেই মামলা পুত্রের পরকীয়া প্রেমের খেসারত দিতে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন জেল হাজতে মেহেদী হাসানের বৃদ্ধ পিতা হামিদুল ইসলাম ও বড় ভাই হাবিবুর রহমান। এমন ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীখাতা গ্রামে।
[৪] পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, দলগ্রাম বাজারের এক চা বিক্রেতার সাথে একই এলাকার হামিদুল ইসলামের পুত্র মেহেদী হাসানের বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। সেই সুবাদে ওই চা বিক্রেতার সন্তানকে মেহেদী হাসান প্রাইভেট পড়াতেন। এতে ওই বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াতের এক পর্যায়ে বন্ধুর স্ত্রী ও প্রাইভেট ছাত্রী’র মায়ের সাথে মেহেদী হাসানের পরকীয়া প্রেম শুরু হয়। গত ১৯ জুন মেহেদী হাসান তার পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। ২২ জুন ওই নারী তার স্বামীকে তালাক দিয়ে সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। পরে আদালতের আশ্রয় নিয়ে প্রেমিক মেহেদী হাসানকে বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করেন ওই নারী। কিন্তু ২৫ জুন ওই নারীর আগের স্বামী দাবি করেন, তার স্ত্রীকে মেহেদী হাসান, তার পিতা হামিদুল ইসলাম ও ভাই হাবিবুর রহমান বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করেন। এমন অভিযোগে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করলে ওই মামলায় মেহেদী হাসান তার পিতা হামিদুল ইসলাম ও ভাই হাবিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে জেল-হাজতে প্রেরণ করেন পুলিশ।
[৫] ওই এলাকায় সড়ে জমিনে গেলে জানা যায়, পুত্রের পরকীয়া প্রেমে পিতা ও বড় ভাইকে জড়ানো এবং তাদের গ্রেফতার করে জেল-হাজতে প্রেরণের বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, মেহেদী হাসান অপরাধী হলে তার শাস্তি হোক। কিন্তু তার অপরাধের খেসারত কেন তার বৃদ্ধ পিতা ও বড় ভাইকে দিতে হবে ? পিতা ও বড় ভাই তাদের পুত্র ও ছোট ভাইকে পরকীয় প্রেমের মত নিকৃষ্ট কাজে সহযোগিতা করেছেন এটা কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য ? স্থানীয়রা বলছেন, মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, মেহেদী হাসানের সাথে ওই নারীর পুর্বের একটি সর্ম্পক রয়েছে। সেটা যদি সত্য হয় তাহলে অপহরণ হবে কেন ? ওই পরিবারকে হয়রানী করতেই পিতা ও বড় ভাইকে জড়িয়ে এ অপহরণের মামলা দায়ের করা হয়েছে। মেহেদী হাসানের পরিবারকে হয়রানী করতে এ ঘটনায় কলকাঠি নাড়ছেন ওই এলাকার একজন উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
[৬] এ বিষয়ে ওই নারীর সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অপহরণ মামলার বাদী ওই নারীর স্বামী জানান, বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে মেহেদী হাসান আমার এতবড় ক্ষতি করেছেন। আমি ওই পরিবারকে এমন শিক্ষা দিতে চাই কেউ যেন আমার মত আর কারো ক্ষতি করতে না পারে।
[৭] কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) আরজু সাজ্জাদ হোসেন জানান, মেহেদী হাসানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা হয়েছে। ৩ জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষ যাতে ন্যায় বিচার পান সেই লক্ষে তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :