সৌরভ ঘোষ: [২] মহামারী করোনাভাইরাসের প্রার্দূভাব ও কঠোর বিধিনিষেধ চলাকালীন সময়ে তিস্তা নদীতে আবারো পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ভাঙ্গন দেখা দেওয়ায় বির্ঘুম রাত কাঁটাচ্ছে কুড়িগ্রামের রাজারহাটের নদীর তীরবর্তী মানুষজন।
[৩] নিরুপায় হয়ে পড়েছে উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের তিস্তা নদী পাড়ের প্রায় ২ শতাধিক পরিবারের সহস্রাধিক মানুষ। ইতোমধ্যে উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাব খাঁ, বড়দরগা, বুড়িড়হাট সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বসত বাড়ি, বাগান, পুকুরসহ আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে চরম অনিশ্চয়তায় ও অনাহারে, অর্ধাহারে কাঁটাচ্ছেন শিশু, বৃদ্ধসহ অসহায় মানুষ।
[৪] বুধবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙ্গন কবলিত পরিবারগুলোর আহাজারিতে নদীপাড়ের আকাশ, বাতাস ভারী হয়ে আছে। নিজের বসত-ভিটার শেষ সম্বল টুকু রক্ষায় পরিবারের সবাই ব্যস্ত। কারো সাথে কথা বলার সময়টুকু নেই।
[৫] অনেক কষ্টে কথা হয় বড়দরগা ও বুড়িরহাট এলাকার প্রবীন ব্যক্তি আব্দুস ছাত্তার (৭০) এর সাথে। তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন, তিস্তা আমাদের সব শেষ করেদিল বাহে, আজ দেখা ছাড়া হামার করার কিছুই নাই। ছেলে বয়স থেকে কয়েকবার বাড়ি ঘর সরিয়ে নিয়ে ১৯৭৪ সালে এই জায়গায় বাড়ি করছি, এই বাড়ি আবার ভাঙ্গছে, হামরা এখন কোথায় যাই।
[৬] এসময় হায়দার আলী (৪৫), আশরাফুল (৩৪), আাছির উদ্দিন (৫৫), আবুল হোসেন (৬০), রফিকুল (৩০), ছামাদ (৭০) বলেন , চোখের সামনে হামার শেষ সম্বলটুকু নদীতে গেল, হামার কষ্ট দেখার কেউ নাই, হামার করারও কিছু নাই। এখন কারো কাছে একটু জায়গা নিয়া থাকা লাগবে। এছাড়া এলাকায় ২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি মসজিদ, বুড়িরহাট বাজার সহ কয়েকটি গুরুত্বপুর্ণ স্থাপনা ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে।
[৭] স্থানীদের অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়সারা দায়িত্ব পালনে প্রতিবছর এই এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দেয়।
[৮] গত মঙ্গলবার বিকালে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ১ শত পরিবারকে খাদ্য ও নগদ অর্থ বিতরণ করেছেন।
[৯] পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, নতুন করে পাহাড়ী ঢলের কারণে তিস্তা ব্রক্ষ্মপুত্র, ধরলা নদীতে পারি বাড়ছে। প্রবল স্রোতে নদীগুলোর বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় বালুর বস্তা ফেলে ডাম্পিং করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :