আবুল কালাম : [২] করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় পাবনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে অক্সিজেন সংকটে করোনা ইউনিটে ৪ জনের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও ঈশ্বরদীতে করোনা আক্রান্ত হয়ে আরো ৪ জন মারা গেছেন।
[৩] জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক ডা. সালেহ মোহাম্মদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শেষ সময়ে একজন করোনা রোগী হাসপাতালে আসলে কিছু করার থাকে না। সে যদি আক্রান্ত হওয়ার শুরুতে আসে তাহলে তাকে ভালভাবে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। যারা মারা গেছে তাদের বেশিরভাগই করোনা আক্রান্ত হয়ে শেষ সময়ে হাসপাতালে এসেছিল। তিনি জানান, জেনারেল হাসপাতালে সেন্টাল অক্সিজেন চালু না থাকায় অক্সিজেনের ব্যাপক সংকট দেখা দিচ্ছে। হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলাও অকেজো হয়ে পরে আছে।
[৪] জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে দায়িত্বে থাকা একজন সিনিয়র চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রোববার সকাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৪ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে অক্সিজেনের ঘাটতি থাকায় ঠিকমত অক্সিজেন সরবরাহ করতে না পারায় ৪ জনের মৃত্যু হয়।
[৫] নিহত রাশিদা বেগমের বড় ছেলে মো.আলমগীর হোসাইন বলেন, তার আম্মাকে গতকাল রোববার দুপুরে ঠাণ্ডা, জ্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে সদরের করোনা ইউনিটে ভর্তি করেছিলাম। শুরু থেকেই অক্সিজেন সংকট ছিল। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পরিশেষে অক্সিজেন সংকট নিয়েই মায়ের মৃত্যু হলো। একই অক্সিজেনের অভাবে তার সামনে তিনজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
[৬] তিনি আফসোস করে আরও বলেন, অনেক আশা নিয়ে মাকে নিয়ে হাসপাতালে আসছিলাম, ভেতরে ঢুকেই দেখি ন্যুনতম কোনও চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। নার্সরা ঠিকমত ডিউটি করতে আসছে না।
[৭] করোন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীর ভাই মামুন হোসেন জানান, এই হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। অনেক ভাল রোগীকে করোনা ইউনিটে ভর্তি করে রেখেছে। আমার বোনকে ১২ দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। পরের দিন করোনা পরীক্ষার স্যাম্পুল দিলে আজ ১১ দিন অতিবাহিত হলেও কোন ফলাফল পাচ্ছি না।
[৭] ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. কেএম আবু জাফর জানান, করোনা সংক্রমণ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ায় এবং বিভিন্ন এলাকায় মানুষের নির্বিঘ্নে চলাচলের ফলে পাবনাতেও করোনা সংক্রমণ বেড়ে গিয়েছে। প্রতিদিন অনেক রোগী করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাচ্ছে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। জনগণ সচেতন না হলে স্বাস্থবিভাগের কিছু করার থাকে না বলে জানান তিনি।
[৮] পিসিআর ল্যাবের অনুমোদন হলেও এখনো তা স্থাপন হয়নি। এছাড়াও করোনা চিকিৎসায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এ অবস্থায় করোনা সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :