শিরোনাম
◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট

প্রকাশিত : ০৫ জুলাই, ২০২১, ০৩:১০ রাত
আপডেট : ০৫ জুলাই, ২০২১, ০৩:১২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জীবন বদলায়’

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: শতবর্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গর্বের জায়গা দুটি : [১] ১৯৪৭ আগের বিশ্বমানের যুগান্তকারী কিছু গবেষণা ও গবেষক নিয়ে। [২] ১৯৫২-র ভাষা আন্দোলন আর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা। সত্যিই একটি দেশ সৃষ্টিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন জোরালো ভূমিকা রেখেছে বিশ্বে এমন আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় পাওয়া যাবে কিনা আমার সন্দেহ। অর্থাৎ ’৪৭ সালের আগে শিক্ষা ও গবেষণায় এবং ’৪৭ সালের পর থেকে ’৭১ পর্যন্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গর্ব করা যায়। আজ কি এই দুটির কোনোটি নিয়ে গর্ব করার ছিটেফোঁটাও অবশিষ্ট আছে? যেই বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ নামক দেশটির সৃষ্টিতে এতো জোরালো ভূমিকা রাখলো সেই স্বাধীন দেশটি যারা চালালো তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কী প্রতিদান দিলো? সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা আজ ঘুমানোর জন্যই জায়গা পায় না। যেই রুমে ৪ জনের থাকার কথা সেখানে ৪০ থেকে ৫০ জন থাকে। যাদের লাইব্রেরির ভেতরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বিশ্বমানের গ্রাজুয়েট ও আন্ডারগ্রাজুয়েটের বই এবং গবেষণা প্রবন্ধ পড়ার কথা তারা লাইব্রেরির বাইরে যত্রতত্র টেবিল বিছিয়ে চাকরির প্রত্যাশায় গাইড বই পড়ছে। এসব নিয়ে কারও কোনোরূপ উৎকণ্ঠা আছে?

দেখলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৮৩১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা হয়েছে। প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্বে এতো বড় বিশ্ববিদ্যালয় খুব কমই আছে। এর চেয়ে অনেক ছোট অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগের বাজেটও ৮৩২ কোটি টাকার অনেক বেশি। যেই বিশ্ববিদ্যালয় এই রাষ্ট্র সৃষ্টি করলো সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এতো অমানবিক ভাবে রাখতে রাষ্ট্র যারা চালায় তাদের লজ্জা লাগে না? যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত ঐতিহ্য হলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন করা সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা আজ এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাবি পর্যন্ত জানায় না। বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই অবর্ণনীয় মানবেতর আবাসিক জীবন নিয়েও নস্টালজিক হয়। এটাকেও তারা মিস করে। এই গণরুম এবং নিম্নমানের খাবার নিয়ে শিক্ষার্থীরা স্ট্যাটাসও দেয়। নীলিমা আখতার নামের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আসলেই বিশ্ববিদ্যালয় নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার চেয়ে অনেক বেশি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু চাকরির বাজারের জন্য গ্র্যাজুয়েট তৈরি করে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জীবন বদলায়। এমনই যে পেছনে তাকিয়ে দেখলে দেখা যায়, জীবনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সময়টাই স্বর্ণ সময়। সীমাবদ্ধতা তো আছেই। কিন্তু একটি নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের সরকারের টাকায় চলে এ বিশ্ববিদ্যালয়। গণরুমের বদনাম শুনি। আমি গণরুমে থেকেছি। কোনো আক্ষেপ নেই।’ দেখুন কী সাংঘাতিক কথা। গণরুমে থেকেছে কিন্তু কোনো আক্ষেপ বা দুঃখবোধ কিংবা রাগ কিছুই নেই। আসলে আমাদের শিক্ষার্থীরা ভোঁতা হয়ে গেছে। জানেই না আমাদের শিক্ষার্থীদের সঠিক একটা পরিবেশ দিলে আজকে ভিন্ন এক বাংলাদেশ হতো। যেই স্বপ্নে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছিলো সেই বাংলাদেশ হতো। অথচ শিক্ষার ন্যূনতম পরিবেশের অনুপস্থিতিতে মান সম্পন্ন শিক্ষার অভাবে আমরা জর্জরিত। গ্লোবাল নলেজ ইনডেক্সে এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আমরা তলানিতে। আমরা আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য যোগ্য কর্মী তৈরি করতে না পারার কারণে বড় বড় চাকরিগুলো আজ বিদেশিদের হাতে চলে যাচ্ছে। অথচ আমরা তৃপ্তির ঢেকুর তুলি। লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়