শিরোনাম
◈ গাজীপুরে হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু  ◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সেই সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০৪ জুলাই, ২০২১, ০২:১৭ রাত
আপডেট : ০৪ জুলাই, ২০২১, ০২:১৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী: লকডাউনে হতদরিদ্রদের খাদ্যে সংস্থান এবং চিকিৎসার সুব্যবস্থা জরুরি

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী: ১ জুলাই থেকে সরকার ঘোষিত ৭ দিনের দেশব্যাপী লকডাউন তথা কঠোর সরকারি বিধিনিষেধ চলছে। এর আগে এসব ঘোষণা ঢিলেঢালা ভাবে পালিত হওয়ার কারণে সংক্রমণ রোধে সরকারের উদ্দেশ্য খুব একটা সফল হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, সত্যিকার অর্থেই কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করা ছাড়া, করোনার বর্তমান ঢেউ থেকে জাতিকে সহজে রক্ষা করা যাবে না। কারণ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণে গোটা ভারত যেভাবে বিধ্বস্ত হয়েছিলো, সেটি আমাদের সকলেরই খুব কাছে থেকে দেখা দৃশ্য। ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে প্রবেশ করায় সমগ্র পশ্চিামঞ্চলের জেলাগুলোতে গত ঈদের পর থেকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার পরও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ রোধ করা যায়নি। সরকারের নানান বিধিনিষেধ, আহ্বান সব শ্রেণির মানুষ সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে উপলব্ধি যেমন করেনি, প্রতিপালনও করতে উদ্যোগ নেয়নি। ফলে অতিমারি এই ভ্যারিয়েন্টটি দ্রুত গ্রাম, উপজেলা, জেলাশহর এবং বিভাগ ছাড়িয়ে অন্য বিভাগ এবং খোদ রাজধানীতেও প্রবেশ করেছে।

আগে বাংলাদেশের গ্রামে করোনা সংক্রমণ সেভাবে ঘটেনি। ফলে মানুষ করোনা নিয়ে যেমন আতঙ্ক প্রকাশ করেনি, বিধিনিষেধও মানেনি। এরই ধারাবাহিকতায় এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি উপেক্ষা করার পরিণতি গ্রামাঞ্চলের মানুষদেরও দেখতে হচ্ছে। এই অবস্থায় প্রতিদিন সাধারণ মানুষ যেমন সংক্রমিত হচ্ছে মৃত্যুবরণও করছে। গ্রামাঞ্চলের বহু মানুষ তাদের করোনা আক্রমণের বিষয়টি বুঝতে পারছেন না, চিকিৎসাও নিচ্ছেন না। ফলে আপনা-আপনি মৃত্যুবরণও করছে। কিছু সচেতন মানুষ লক্ষণ বুঝে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে ছুটছেন। ভাগ্যক্রমে কেউ চিকিৎসা পেয়ে বেঁচে উঠছেন, আবার অনেকে জটিল আকার ধারণ করায় বাঁচতে পারছেন না। এ কারণেই এবার করোনা সংক্রমণের ব্যাপ্তি, বিস্তার ও মৃত্যু নিয়ে হাহাকার ভয়ভীতি আগের তুলনায় অনেকগুণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। লকডাউন ছাড়া এই সংক্রমণ কমিয়ে আনা সম্ভব নয়। কিন্তু লকডাউনের ফলে দরিদ্র ও অসহায় মানুষ জীবন-ঝুঁকিতে পড়ে এটিও বাস্তব সত্য।

২০২০ সালে প্রথম লকডাউন প্রায় ২ মাস কার্যকর ছিলো। তবে সেই সময় দরিদ্র এবং অসহায় মানুষদের পাশে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা এবং ব্যাক্তি মুক্তহস্তে দাঁড়িয়েছিলো। সে কারণে সাধারণ মানুষ খাদ্য এবং অর্থাভাবে খুব বেশি কষ্ট পায়নি। কিন্তু এক বছরের ও বেশি সময় ধরে করোনা সংক্রমণ ওঠানামা করায় মানুষের জীবন-জীবিকায় বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। বিশেষত বেসরকারি ও ব্যক্তিউদ্যোগে পরিচালিত আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক ব্যবসা-বাণিজ্য, ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প, মার্কেট, শিক্ষা, সামাজিক সাংস্কৃতিক নানান ধরনের উৎপাদন ও আয়মুখী কার্যক্রম অনেকটাই স্বাভাবিক শক্তি হারিয়েছে। ফলে এ বছর অনেকেই সাধারণ মানুষের পাশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে দাঁড়াতে পারছেন না, সেটি দেখাও যাচ্ছে না। সরকারও গেলো বছর যেভাবে নানান ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা ও প্রণোদনা দিয়ে সব শ্রেণি পেশার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলো, প্রমাণও রেখেছিলো। এবার কিন্তু সেটি এখনও দৃশ্যমান হচ্ছে না, তবে একটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়, সেটি হচ্ছে এ বছর ধানের ফলন গেলো বছরের চাইতে ভালো হওয়ায় এবং প্রবাসীদের রেমিটেন্স প্রবাহ ঊর্ধ্বমুখী থাকায় দেশে খাদ্য সংকট কিংবা অর্থনৈতিক সংকটে গ্রামীণ বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রচণ্ড কোনো সংকট হাহাকার শোনা যায় না। তবে শহরেরর ছোট ছোট বেসরকারি চাকরি ও কর্মজীবী মানুষের পরিবারে অর্থনৈতিক সংকট আগের তুরনায় বেড়ে গেছে। অনেকেই কর্মহারা হয়ে শহর ছেড়ে গ্রামে কৃষি কাজে বা অন্য কোনো কাজ করার জন্য চলে গেছে। আবার অনেকেই সেই সুযোগ না থাকায় শহরে থেকে যেতে বাধ্য হচ্ছে। তারা পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে আছেন। এই অবস্থায় লকডাউন কার্যকর ৭ দিনে শেষ হবে না। কমপক্ষে আরও ৭ দিন এটি বৃদ্ধি করা হতে পারে। সে কারণে সরকারকে দ্রুত বেছে বেছে শহরে বসবাসকারী হতদরিদ্র কর্মহারা মানুষদের খাদ্যের যোগান দেওয়ার ব্যবস্থা করা জরুরি। গার্মেন্টসগুলো খোলা রেখেছে কিন্তু শ্রমিকদের বড় অংশই চাকরি হারানোর ভয়ে করোনা টেস্ট করাচ্ছে না। এদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা করোনা ঝুঁকি সত্যি সত্যি বিস্ফোরিত হলে গার্মেন্টস মালিকগণ ওইসব শ্রমিকের দায়িত্ব কতোটা নেবেন তা বলা মুশকিল। এ সময়ে গ্রামাঞ্চলে সংক্রমিত হতদরিদ্র ব্যক্তিদের খাদ্য ও চিকিৎসার আর্থিক সংকট তীব্রতর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অর্থের অভাবে অনেকেই করোনা চিকিৎসা নিতে পারছে না। এদের পাশে সরকার এবং বিত্তবানদের এখুনি দাড়ানো দরকার, তবে সেভাবে দাড়ানোর অভাবটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দ্রুত সরকারকে আগে বেছে বেছে করোনায় আক্রান্ত হতদরিদ্র মানুষদের চিকিৎসা ও খাদ্যের সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। সেটি দেখেই অন্যরা হাত প্রসারিত করতে পারে। আমরা তেমনটি এই লকডাউনকালে দেখতে পাব বলে আশা রাখি। পরিচিতি: শিক্ষাবিদ

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়