রাশিদ রিয়াজ : ওয়াল স্ট্রিটে বিতর্কিত ট্রেডিং অ্যাপ রবিনহুডকে শেয়ারবাজারে লাখ লাখ বিনিয়োগকারীর আর্থিক ক্ষতির জন্যে ৭ কোটি ডলার জরিমানা করেছে বাজার নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ। এটি ওয়াল স্ট্রিট বাজার নিয়ন্ত্রকদের পক্ষ থেকে এটি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ পরিমানে জরিমানা। রবিনহুডের বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ তুলেছেন মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়ায় ব্যবসায়ীকভাবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রবিনহুড অ্যাপের বিরুদ্ধে বাজার তদারকিতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন বিনিয়োগকরারীরা। সিএনএন
যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি ফিনান্সিয়াল ইন্ডাস্ট্রি রেগুলেটরি অথরিটি বা এফআইএনআরএ’র বাস্তবায়ন বিভাগের প্রধান জেসিকা হপার এক বিবৃতিতে বলেছেন গত বছর মার্চে ওই অ্যাপ প্লাটফর্মটির বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়ায় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে অ্যাপটিকে ৫৭ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করা ছাড়াও হাজার হাজার ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের প্রায় ১২.৬ মিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার করে তা সুদ সহ পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে। রবিনহুডের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্বীকার বা অস্বীকার কোনটিই করা হয়নি। তবে রবিনহুডের সিলিকন ভ্যালি রুটের কর্মকর্তা হুপার বলেন এফআইএনআরএ’র নিয়ম মেনে চলা বাধ্যতামূলক নয়। এক বিবৃতিতে রবিনহুড উল্টো দাবি করেছে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ সমর্থন দেওয়া হয়েছে। আমরা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় বরং আরো বেশি মনোযোগী হচ্ছি। কিন্তু এফআইএনআরএ’র তদন্ত বলছে রবিনহুডের ভুল তথ্যে বিনিয়োগকারীদের অন্তত ৭ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে। ২০১৩ সালের শেষের দিকে যখন রবিনহুড অপশন ট্রেডিং চালু করে তখন এধরনের পরিশীলিত লেনদেন অনুমোদনের আগে অ্যাপটি যথাযথভাবে বাজার যাচাই করেনি। বেমানান বা অযৌক্তিক তথ্যের ভিত্তিতে রবিনহুড বিনিয়োগকারীদের প্র্রায়শঃ ব্যবসায়ীক বিকল্পের অনুমোদন দেয় এমন অনুমানের ওপর নির্ভর করে। এমনকি রবিনহুড শেয়ার ব্যবসার ক্ষেত্রে যে প্রযুক্তির উপর নির্ভর করেছিল তা যুক্তিসঙ্গতভাবে তদারকি করতে ব্যর্থ হয়েছিল।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ওয়াল স্ট্রিট শেয়ারবাজার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। এসএন্ডপি৫০০ বাজারে শেয়ার মূল্য রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। নাসডাক শেয়ার মূল্যস্ফীতি ঘটেছে ১০ শতাংশ। ফেসবুক, অ্যামাজন, অ্যাপেল, মাইক্রোসফট, নেটফ্লিক্স ও গুগলের শেয়ার দর বেড়েছে। গত এক মাসের তুলনায় এসব কোম্পানির শেয়ার বৃদ্ধি পেয়েছে ৬ শতাংশ। গত তিনমাসে তা বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ শতাংশ। ডাও জোন্স শিল্প সূচক শেয়ার মূল্যস্ফীতি ঘটেছে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড স্বাস্থ্য বিধি বেশি কিছুটা শিথিল হওয়ায় এবং টিকাদান কর্মসূচি অনেকটা এগিয়ে যাওয়া এর ইতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়তে শুরু করেছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। বাজার বিশ্লেষক সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাকস এর আগে মার্কিন শেয়ারবাজার প্রবৃদ্ধি এবছর ১৪ শতাংশ ঘটবে বললেও তা আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে বলে দাবি করছেন বিশ্লেষকরা। থিংকমারকেটের বিশ্লেষক ফাওয়াদ রাজাকজাদা ফক্স নিউজকে বলেন লকডাউন শিথিল হওয়ার প্রভাব মার্কিন শেয়ারবাজারে পড়তে শুরু করেছে। যদিও মার্কিন অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি এখন এক বড় ভয়ের কারণ হয়ে আছে তবে কোভিডের ডেল্টা বা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট যাতে ফের সংক্রমণের বিস্তৃতি না ঘটাতে পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে। আমরা আশা করছি ভোক্তা পণ্যের দামও সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।
আপনার মতামত লিখুন :