হারুন-অর-রশীদ : [২] গত দুদিনের প্রবল বর্ষণে ফরিদপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে চরম দূর্ভোগে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের তথা পদ্মাচড়ের মানুষ।
[৩] সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ফরিদপুরের চরমাধবদিয়া, ডিক্রীরচর, নর্থচ্যানেল, অম্বিকাপুরের নিম্নাঞ্চল এবং উপশহরের মডেল টাউনের রাস্তাঘাটসহ আশপাঁশের বাসা বাড়ীতে হাঁটুর উপর হতে কোমর পরিমাণ পানির জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষ । গত ২ দিনের টানা বর্ষণে জনজীবন থমকে গেছে।
[৪] তার সাথে হু হু করে বাড়ছে পদ্মার পানি। এক নাগাড়ে থেমে থেমে এমন বর্ষণ চলতে থাকলে প্লাবিত হবে আরো অনেক নিচু এলাকা।
[৫] সরোজমিন গিয়ে দেখা যায়, চরমাধবদিয়া, নর্থচ্যানেল এলাকার পাটের ক্ষেতে প্রায় কোমর আবার কোথাও বুক সমান পানিতে ডুবে গেছে শত শত বিঘা পাটের ক্ষেত।
[৬] পদ্মায় আসছে উজান থেকে ধেঁয়ে আসা পানি। চরের নিম্নাঞ্চলে প্রবল বর্ষণের কারণে অসময় পাট কাটতে বাধ্য হচ্ছে চাষীরা।
[৭] কিছুদিন আগেও প্রচণ্ড খরার মুখে পড়ে সমস্ত পাট ক্ষেত ফেঁটে চৌচির হয়ে ছিল। বহু পাট ক্ষেত, তিল, তিষির ডাটা, ঢেঁড়স ক্ষেত পুড়ে গিয়ে চরম ক্ষতির মুখে পড়ে খেটে খাওয়া পদ্মাচড়ের সামন্য আয়ের মানুষ। সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠার আগেই আবার ক্ষতির মুখে পড়লো অঁজপাড়াগা ও পদ্মাচড়ের কৃষকরা।
করোনার কারণে মিলছে না কাজের মানুষ বা জোন খাটানোর লোক।
[৮] এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, পরিবহন সেক্টরসমগ্র বন্ধ থাকায়, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ এলাকার কামলারা ফরিদপুর অঞ্চলে আসতে পাড়ছে না। ফলে কামলার (শ্রমিক) বহু অভাব পড়ছে। যদিও অল্পসংখ্যক কাজের লোক পাওয়া যাচ্ছে তাদের কাজের মজুরী প্রায় ৩ গুণ।
[৯] তথা ৪০০ টাকার কামলার মূল্য এখন হাজার টাকা। এত টাকা খরচ দিয়েও কামলা মিলছে না। পাঁশাপাশি কামলাদের তিন বেলা খাবার দেওয়ার জন্য সময় মত মিলছেনা তরিতরকারি ও কাঁচাবাজার। চর এলাকার হাজার হাজার বিঘা সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে বানের পানিতে। অল্প সংখ্যক সবজি ক্ষেত শহর রক্ষার বাঁধের অভ্যন্তরীণ বুকে থাকলেও সেখানে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় ঐ ক্ষেতও তলিয়ে গেছে।
[১০] এতে চর এলাকার মানুষ তাদের নিজেদের সবজি ক্ষেতের সবজি দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনটাও মিটাতে পাড়ছেন না। এটা কৃষকদের জন্য অসময়ে বিরাট একটা আর্থিক ক্ষতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
[১১] অপরদিকে, প্রবল বর্ষণে সালথা, নগরকান্দা, মধুখালী, আলাফাঙ্গা,সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার একর পাটের ক্ষেত জলাবদ্ধ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। ঐ এলাকার কৃষকরাও প্রাণপণ চেষ্টা করছেন তাদের পাট কেটে পঁচানোর জন্য। কিন্ত কি আর করার? আর কিছুদিন পর পাট কাটলে পাট যেমন লম্ব হতো তেমনি মোটাও।
[১২] এতে সোঁনালী আঁশ চাষীদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হবে বলে চরের কৃষক মজিদ, কাবল, রহমান ও কাইয়মুদ্দীন এই প্রতিনিধিকে জানালেন। কোথাও হা্ঁটু পানিতে নেমে পাট কাটার যুদ্ধে নামছেন কৃষকরা।