আকতার বানু আল্পনা: একদিন আমার বাসার সামনের রাস্তার পাশের ড্রেনে শাপলা ফুলের গাছ দেখে বেশ অবাক হলাম। কারণ এর আগে কখনো ড্রেনে জলজ ঘাস ছাড়া আর কিছু দেখিনি। ড্রাইভার দেখে বললো, কেউ বাগান পরিষ্কার করে আগাছা ড্রেনে ফেলেছে হয়তো। পানিতে ভেসে এসেছে। গাছটা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকলো। কিছুদিন পরে দেখি, সুন্দর দুইটা কলি ধরেছে। তবে কলি দেখে শাপলার রঙটা বুঝতে পারছিলাম না। ফোটার পরে দেখলাম বেগুনি সাদা পাপড়ি। মাঝখানে হলুদ। অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে। বিকেলে গিয়ে দেখি, ফুলটা নেই। রাস্তার ধারে ড্রেন। কেউ ফুলটা ছিঁড়ে নিয়ে গেছে।
মন খারাপ হলো। চলে গেলাম টবের দোকানে। মাটির বড় একটা চাড়া কিনে আনলাম। তাতে মাটি ভরে ড্রেন থেকে কিছুটা মাটিসহ পুরো গাছটা তুলে এনে চাড়াতে লাগালাম। বেশি করে পানি দিলাম। ক’দিন পরে ছোট কুঁড়িটাও ফুটলো। কী যে সুন্দর। কিন্তু বিধি বাম। আমার বাসার ভেতরের ড্রেনের পানিতে পোকা ধরে খাওয়ার জন্য বকসহ নানা পাখি আসে। একটা সাদা বক ফুলটা খেয়ে ফেললো। তারপর কেন জানি ধীরে ধীরে গাছটাও মরে গেলো। আমি হাল ছাড়তে নারাজ। আমার মালিকে দিয়ে জুবেরীর পুকুর থেকে একটা গাঢ় গোলাপী রঙের শাপলার গোড়া তুলে এনে আরেকটা বড় চাড়াতে লাগালাম। এই গাছটাও ধীরে ধীরে মরে গেলো। আমি খুবই মর্মাহত হলাম। পরে দুটো টবেই অন্য গাছ লাগালাম। এবছর বৃষ্টি শুরু হওয়ার কিছুদিন পরেই দেখছি, দুটো চাড়াতেই শাপলার পাতা গজাচ্ছে। তারমানে গাছ দুটো আসলে মরেনি! আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে। মোর্যাল অফ দ্য স্টোরী : গাছ হোক বা সম্পর্ক, কোনোকিছু শেষ হয়ে গেলো নিরাশ হবেন না। শেষ থেকেও অনেক কিছু শুরু হতে পারে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :