শিরোনাম
◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের 

প্রকাশিত : ২৭ জুন, ২০২১, ০১:৩১ দুপুর
আপডেট : ২৭ জুন, ২০২১, ০১:৩১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মঞ্জুরুল হক: ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে সরকারী গাত্রদাহের ভেতর-বাহির

মঞ্জুরুল হক: করোনাভাইরাসের ভয়াবহ দ্বিতীয় ঢেউয়ে পুরো দেশ যখন জেরবার তখন সরকার হঠাৎ করেই দেশে থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। এইসবক্ষেত্রে যেটা হয়-প্রতিপক্ষ দুর্বল এবং ক্ষমতাহীন হলে সরকার তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ২০ তারিখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রিকশার বিরুদ্ধে ‘বাণী’ দেয়ার পরদিন থেকেই বিভিন্ন শহরে রিকশা-ভ্যান আটক করে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা শুরু হয়েছে। সরকারের সুশীলগণ যখন মানবতাবাদী এবং প্রকৃতিবাদী সাজেন তখন নসিয়ত করেন। নানাবিধ উজবুকীয় মন্তব্য করেন, কিন্তু ‘অবৈধ’ তকমা দিয়ে দেশের সম্পদ নষ্ট করার বেলায় তাদের সামান্যতম কমনসেন্স কাজ করে না। একটা উদাহরণ- কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা ধরা নিষিদ্ধ। তাই ট্রলার আটক করে মণকে মণ জাটকা ধ্বংস করে ফেলে, যেমন তারা ঘটা করে ফেন্সিডিলের বোতল ভাঙে বুলডোজার দিয়ে। ওই জাটকাগুলো যে মানুষের খাবার উপযোগী সেটা মগজে আসে না। রিকশার বেলায়ও তাই করছে। লাখ লাখ টাকার ব্যাটারি ধ্বংস করছে। কিন্তু কেন? ব্যাটারিচালিত রিকশা মহামহিম সরকারের কী সমস্যা করছে?
.
সরকারের ভাষ্যঃ টাস্কফোর্সের সভায় বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্যাডেলচালিত রিকশা-ভ্যানের মধ্যে ইঞ্জিন লাগিয়ে যারা চালাচ্ছে, সেটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘রিকশার সামনের চাকায় ব্রেক আছে। পেছনের চাকায় ব্রেক নেই। এগুলোতে ইঞ্জিন লাগিয়ে চালানোর কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সারা দেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি হবে।’পেছনের চাকায় কোনো ব্রেক নেই কিংবা ব্রেকের ব্যবস্থা থাকলেও অপ্রতুল, সেগুলো যখন ব্রেক করে প্যাসেঞ্জারসহ গাড়ি উল্টে যায়। এ দৃশ্য আমরা দেখেছি। আমরা দেখেছি হাইওয়েতেও এ রিকশা চলে এসেছে। সে জন্য সারা দেশে, এ ধরনের ব্যাটারিচালিত রিকশাকে যারা ইঞ্জিন দিয়ে রূপান্তর করেছে, সেই সব রিকশা-ভ্যান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত আজকের সভায় হয়েছে।’
.
বেশ। এবার একটু আমাদের স্মৃতি ঝালাই করা যাক। এই ঘোষণার পর দিনই একটি চ্যানেলে জাপা এমপি এবং সড়ক পরিবহনের ‘গডফাদার’ মশিউর রহমান রাঙ্গা তাশরিফ রেখেছিলেন। তিনিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণীর পুনরুল্লেখ করলেন। সেইসঙ্গে বললেন- ‘ওরা সিটে বসে সামনের রডে বানানো পাদানিতে (নবাবের মত উহ্য) পা তুলে বসে থাকে।‘ সমস্যাটা কী এই পা-তুলে বসে থাকায়? নিশ্চই এভাবে ‘বেয়াদবের’ মত পা-তুলে বসে থাকাটা রাঙ্গামিয়া, ধলামিয়া, কালামিয়ারা বরদাশত করবেন না জানা কথা। সামন্ত প্রভুদের কখনই প্রজাদের জুতোর আওয়াজ পছন্দ ছিলনা। এখনও নেই।
.
এই যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন- ‘পেছনের চাকায় কোনো ব্রেক নেই কিংবা ব্রেকের ব্যবস্থা থাকলেও অপ্রতুল, সেগুলো যখন ব্রেক করে প্যাসেঞ্জারসহ গাড়ি উল্টে যায়। এ দৃশ্য আমরা দেখেছি।‘ তো খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে; আপনারা কী সড়কপথে দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে ২৫/৩০ টি মানুষের মৃত্যু দেখেননি? শোনেননি? সড়কের বাস-ট্রাক এবং অন্যান্য মোটরযান তো সামনে-পেছনে ব্রেকসহই চলাচল করে। তাদের হাইড্রোলিক ব্রেক চাপলে তো জায়গায় থেমে যাবার কথা। তারপরও দুর্ঘটনা কেন ঘটে? লঞ্চে কেন ঘটে? লঞ্চে তো ব্রেকই নেই! ট্রেনের তো মুখোমুখি ক্রস করতে হয় না। আলাদা লাইন। তার পরও কেন মুখোমুখি দুর্ঘটনা ঘটে? মন্ত্রি মোহদয়ের কাছে কি কোনো খতিয়ান আছে যে ব্যাটারিচালিত রিকশায় প্রতিদিন কত জন মারা যায়? না, নেই। আমরা পত্র-পত্রিকা পড়ে জানি এইসব রিকশা দুর্ঘটনায় যাত্রী আহত হয়। কদাচিৎ সেই উল্টে যাওয়া রিকশাকে বাস-ট্রাক চাপা দিলে সেটা ভিন্ন ব্যাপার।
.
তাহলে কেন ব্যাটারিচালিত রিকশাকে ভিকটিম বানানো হচ্ছে? এর উত্তরও সাধারণ মানুষ জানে। কারণ রিকশাচালকরা সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের মত দেশ অচল করে দেয়ার হুমকি দিতে এবং বাস্তবায়ন করতে পারে না। তাদের এমপি, মন্ত্রি, নেতা নেই। তারা রাজপথ অবরোধ করে ‘দেশ অচল’ করে দিতে পারে না। সুতরাং নরম মাটিতে তো আঙ্গুল ঢুকিয়ে মজা।
.
অথচ চরম বিস্ময়কর হলো হাইকোর্ট তিন তিনবার রিট পিটিশনের রায়ে যানবাহনের হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধ করতে নির্দেশ জারি করেছিল। সরকারের পেষক ব্যক্তিবর্গকে সময়ও বেঁধে দিয়েছিল। আপনারা কি তা প্রতিপালন করেছিলেন? না। করেননি। এই শহরটা শব্দদুষনে এখন বিশ্বের অন্যতম। স্বাভাবিক মাত্রায় শহরাঞ্চলে ৫০ থেকে ৬০ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দই যেখানে চরম ক্ষতিকর, সেখানে ঢাকায় কোথাও কোথাও ১০০ থেকে ১১০ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দদুষণ ঘটে। আকসার ঘটছে। এই শহরের প্রায় অর্ধেক মানুষ শ্রুতি প্রতিবন্ধী! আপনাদের মুরোদ হলো না সড়ক পরিবহনের কেশাগ্র স্পর্শ করার। তার বদলে কী করলেন? সচিবালয়ের আশে-পাশে হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ করলেন। যেন সচিবালয়ে অবস্থানকারীদেরই কেবল শব্দদুষণে শান্তি বিঘ্নিত হয়! শহরের বা দেশের আর কারও কানও নেই, শব্দদুষণে শ্রবণশক্তি নষ্ট হওয়ারও বিপদ নেই!
.
কখনও কখনও বলা হয় ব্যাটারিচালিত রিকশা অত্যাধিক বিদ্যুৎ খরচ করে ব্যাটারি চার্জ করে। তাই যদি সত্যি হয় তাহলে তো সারা দেশ অন্ধকারে ডুবে যাবার কথা! এবার দেখুন আপনাদের বিদ্যুতের পরিসংখ্যান- পিডিবির তথ্য অনুযায়ী, দিনের শুরুতে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ সাড়ে ৮ হাজার থেকে ৯ হাজার মেগাওয়াট। আর দিনের শেষ ভাগে (সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত, যা পিক আওয়ার নামে পরিচিত) বিদ্যুতের চাহিদা গিয়ে দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ১১ হাজার থেকে সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াট। অথচ দেশে ১৮ হাজার ৯৬১ মেগাওয়াট ক্ষমতার স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। তাই দিনরাত মিলিয়ে ১৪-১৬ ঘণ্টা গড়ে ৮ হাজার থেকে ৯ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র অলস বসে থাকছে। শীতকালে এ চাহিদা নেমে ৬ হাজার মেগাওয়াটে চলে আসে।
.
তাহলে? এই অজুহাতও টিকছে না। বেশি দামে বেসরকারী বিদ্যুৎ কিনতে বাধ্য হয়েও আপনাদের কোনো অনুশোচনা নেই। জ্বালানি, কেন্দ্রভাড়া (ক্যাপাসিটি পেমেন্ট) ও বিদ্যুতের মূল্য বাবদ বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে অর্থ দেয় সরকার। এর ফলে অলস বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকেও কেন্দ্রের ভাড়া দিতে হয়। ১০০ মেগাওয়াট একটি কেন্দ্রের ক্ষেত্রে বছরে গড়ে শুধু কেন্দ্রভাড়াই দিতে হয় ৯০ কোটি টাকার বেশি। ফলে কোনো বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন না করে বসিয়ে রাখলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কেন্দ্রভাড়া দিতে গিয়ে সরকারের লোকসান বাড়ে। তাতেও আপনাদের সমস্যা নেই। এই লোকসানের বোঝা তো জনগণই বইবে! আপনারা জনগণের ঘাড়ে পাড়া দিয়ে সেসব আদায় করেন।
.
মোদ্দা কথা হলো দুর্ঘটনা রোধ, অন্যান্য যান চলাচলে নির্বিঘ্নতা, এসব কিসসু না। আপনারা স্রেফ ওই গরিবগুর্বো রিকশাচালকদেরকে গিনি পিগ ভেবে বসে আছেন। একটি বারও ভাবলেন না একটি প্যাডেলচালিত রিকশাকে ব্যাটারিচালিত করতে কত টাকার যোগান দিতে হয়? একটি বারও তলিয়ে দেখলেন না সেই টাকা যোগাড় করতে তাদেরকে কি কি বিক্রি করতে হয়েছে? কীভাবে দাদনে টাকা নিয়ে সুদ গুনতে হয়েছে? আর রিকশা ভেঙে ফেললে সে কী করে বাঁচবে? যদিও এসব গরিব মানুষের বাঁচা-মরা নিয়ে আপনাদের টগবগে ঘিলুসমৃদ্ধ মাথা কোনো কালেও ঘামেনি, এখনও ঘামে না।
.
প্রযুক্তি মানুষের সময় এবং কায়িক শ্রম লাঘব করে। এই আধুনিক যুগে একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে গায়ের সব শক্তি দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টা কতটা অমানবিক সেটা আমরা অনেকেই উপলব্ধি করতে না পারলেও সারা বিশ্বের মানুষ আমাদেরকে যে ছিঃ ছিঃ করে সেটা কি কখনও খোঁজ নিয়ে দেখেছেন? আপনারা বিশ্বের লেটেস্ট মডেলের গাড়িতে ফুরফুরে হাওয়া খেতে খেতে চলাচল করবেন, আর এইসব দরিদ্র মানুষগুলো মাথার ঘাম পায়ে ফেলে প্যাডেল মেরে জীবীকা নির্বাহ করবে? আমাদের তো লজ্জা হওয়া উচিৎ। কলকাতা শহরে এখনও কিছু সংখ্যক হাতে-টানা রিকশা আছে ‘ঐতিহ্য’ হিসাবে। তাই দেখে আমাদের অনেকেই আহারে আহারে করেন! আর যখন একজন বৃদ্ধ তার সমস্ত শক্তি দিয়ে একটা রিকশা টেনে টেনে আপনাকে বয়ে নেয়, তখন আপনাদের কোনো আহা উহু নেই। দেশের নাকি উন্নতি সম্পন্ন হয়েছে! একের পর এক সবকিছু মেকানাইজ হচ্ছে। পালতোলা নৌকায় ইঞ্জিন বসেছে, ঘানির বদলে মেশিনের তেল ভাঙানো হচ্ছে। সুঁই-সূতোর বদলে অত্যাধুনিক সেলাই মেশিন এসেছে। তারপর কেন রিকশাচালকের প্যাডেল ঠেলে রিকশা চালাতে হচ্ছে?
.
অস্বীকার করা যাবে না এই যানগুলোর ব্রেক ব্যবস্থা নিরাপদ নয়। সেটা তো নিরাপদ করা যায়। খুব সহজেই যায়। ‘বুয়েট’ নামক ‘কুমিরছানা’কে দিলেই তো তারা বিকল্প ব্রেকের ব্যবস্থা করে দিতে পারে। তারা দিয়েছিলও। আপনারা সেটার বাস্তবায়ন করেননি। এটাও স্বীকার করতে কুণ্ঠা নেই যে একটা আধুনিক শহরে রিকশা থাকতে নেই। রিকশা অনেক সমস্যা তৈরি করে। তার বিকল্পও তো সোজা ছিল। গণপরিবহন চালু করতে পারতেন। বাংলাদেশে ‘গণপরিবহন’ যা আছে তা তো রাঙ্গামিয়া-ধরামিয়াদের মাফিয়াগিরি। এটাকে গণপরিবহন বলে? বিশ্বের আর কোনো দেশে শহরের মধ্যে এত টাকা ভাড়া দিয়ে এত নিকৃষ্ট বাস-মিনিবাসে মানুষ যাতায়াত করে না। আপনাদের শক্তিশালি অঙ্গুলি তাদের দিকে ভুলেও উঠবে না। কারণ সেই ভয়! ওরা আপনাদের থোড়াই কেয়ার করে।
.
ব্যাটারীচালিত রিকশা মাত্রই দুর্ঘটনাপ্রবণ নয়। সমস্যা হলো তিন চাকার যানে যদি ব্রেকটা সামনে থাকে তাহলে নিয়ন্ত্রণ করাটা কঠিন। যদি ব্রেকটা পিছনে থাকে তাহলে যান অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাছাড়া সরকারের অনুমতি আছে রিকশাতে ৩০ অ্যাম্পিয়ার পর্যন্ত ব্যাটারী সক্ষমতা সংযুক্ত করা , এতে গতি কিছুটা ধীর হয়। কিন্তু রিকশা মালিকরা বেশি জমার আশায় সেখানে ৯০ থেকে ১২০ অ্যাম্পিয়ার পর্যন্ত ব্যাটারী সক্ষমতা সংযুক্ত করে। আর এতেই দুর্ঘটনাগুলি ঘটে। এটা ঠেকাতে পারেননি কেন? এই যে অতি লোভী রিকশামালিক, তাদের নিয়ন্ত্রণ করেননি কেন? বাঙালি জিনগতভাবেই লোভী এবং স্বার্থপর। এটা মাথায় রেখেই তো মালিকদের নিয়ন্ত্রণ করা যেত।
.
ইতিমধ্যে করোনা মহামারিতে নতুন করে প্রায় ২.৫ কোটি মানুষ বেকার হয়েছে। বেসরকারী চাকরিজীবীরা অর্ধেক বা সিকি বেতন পায়। এই ঢাকা শহর থেকে অন্তত ৫০ হাজার দরিদ্র পরিবার শহর ছেড়ে গ্রামে চলে গেছে। তার উপর দেশের ৫০ শতাংশের ওপরে মানুষ যখন দারিদ্র্যসীমার নিচে (যদিও সেটা আপনারা বিশ্বাস করেন না), সেই সময় এমন অমানবিক সিদ্ধান্তে কর্মরত ৫০ লাখ ব্যাটারি রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক চালক যদি কর্মহীন হয়ে পড়ে তাহলে সারাদেশে এক ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে। আজকে যে হাবাগোবা রিকশাচালক রাজপথ অবরোধের কথা ভাবছে না, কালকেই তার পেটে টান পড়লে ভাবতে বাধ্য হবে। তারা যদি হাজার হাজার রিকশা দিয়ে ঢাকার রাজপথ অবরোধ করে দেয়, কয়টাকে মারবেন? গুলি চালাতে পারবেন, লাঠি দিয়ে হাড়গোড় ভাঙতে পারবেন। কিন্তু প্রশ্নটা যখন জীবন-মরণের তখন ওইসব লাঠি-গুলি-টিয়ারগ্যাসে আটকাতে পারবেন না। তাই ‘ভাত দেবার মুরোদ নেই, কিল মারার গোসাই’ না হয়ে বাস্তবসম্মত চিন্তা করুন। সেইমত সিদ্ধান্ত নিন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়