শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ সাভারে শো-রুমের স্টোররুমে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ২ ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ২৬ জুন, ২০২১, ০৪:৫২ দুপুর
আপডেট : ২৬ জুন, ২০২১, ০৪:৫২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] মাদক পাচার রোধে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সুজন কৈরী: [২] মাদকদ্রব্যের পাচার একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এ সমস্যার কারণে বাংলাদেশ চরম হুমকির মুখে পড়েছে। মাদকের কুচক্রীদের বিরুদ্ধে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মাদকদ্রব্যের পাচাররোধে পার্শবর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছে বলে জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

[৩] শনিবার দুপুরে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস-২০২১ উপলক্ষে ভার্চুয়ালি এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অনলাইন জুম মিটিংয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। বাংলাদেশে মাদক উৎপাদন হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে পাচার হয়ে মাদক ঢুকছে। কিছু কুচক্রী মহল দেশে মাদকের বাজার তৈরি ও বিস্তারের পাঁয়তারা করে আসছে।

[৪] স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবসে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত বছর আমরা দিবসটি ব্যাপকভাবে পালন করতে পারিনি। এবারও সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আজকের আলোচনাসভাটি সীমিত পরিসরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

[৫] স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে যেমন আমরা জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছি, জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে সম্পূর্ণ দমন করতে না পারলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। ঠিক তেমনভাবে মাদকের বিরুদ্ধে সমাজের সবাইকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। তবেই মাদক নির্মূলের মাধ্যমে সুন্দর সমাজ গড়া সম্ভব।

[৬] মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটা সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ঠুঁটো জগন্নাথ হিসেবে ছিল। তখন এর কিছুই ছিল না। প্রাধনমন্ত্রীর নির্দেশনায় এ অধিদপ্তরে বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয় তৈরি করে জনবল নিয়োগ, একটি সুন্দর কর্মপরিকল্পনা, অবকাঠামো করে এবং বিভিন্ন সাপোর্ট দিয়ে এর গতি বাড়ানো হয়েছে। এখন এই অধিদপ্তরটি মাদক নিয়ন্ত্রণে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। আমরা ইয়াবা, ফেন্সিডিল, হেরোইনসহ অন্যান্য মাদক সম্পর্কে জানি। কিন্তু বর্তমানে নতুন নতুন মাদকের আবির্ভাব হচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মাঠে নজররদারি করছে।

[৭] তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে মাদকের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করার জন্য কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন। এ জন্য তিনি সংবিধানের ১৮ নম্বর অনুচ্ছেদ সংযুক্ত করেন। সংবিধানের এই অনুচ্ছেদে ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ শিরোনামে অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে বলা হয়েছে। এটি ছিল জাতির পিতার দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়কোচিত ভাবনার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বর্তমান সময়ে সারাবিশ্বে মাদক নিয়ে যে তোলপাড় হচ্ছে, তা বাংলাদেশের জন্মলগ্নেই জাতির পিতার চিন্তায় প্রতিফলিত হয়েছিল।

[৮] বাংলাদেশে কোনও মাদকদ্রব্য উৎপন্ন হয় না জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পাশের দেশ ও অন্যান্য মাদক উৎপাদনকারী দেশের উৎপাদিত মাদক পাচার হয়ে আমাদের দেশে আসে। ফলে অবৈধ মাদক পাচার রোধে আমরা প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। চুক্তি অনুযায়ী ওই দেশ দুটির সঙ্গে আমরা নিয়মিত বৈঠক করছি। পাশাপাশি মাদক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গেও আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

[৯] মাদক নিরাময় কেন্দ্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মাদক নিরাময় ও পূর্নবাসন কেন্দ্র রয়েছে। আগে একটি অচল ছিল। পরে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট করা হয়েছে। এখন এটি ১৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। আমরা প্রতিটি বিভাগ ও জেলায় একটি করে মাদক নিরাময় কেন্দ্র তৈরির বিষয়ে কাজ করছি।

[১০] স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ডোপ টেস্ট কার্যক্রম শুরু করেছি। ইতোমধ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে এটি চলমান রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এটি সকল পর্যায়ে চলবে। তবে আপাতত এটি বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের হাতে দিচ্ছি না।

[১১] সর্বস্তরে ডোপ টেস্ট জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষাজীবন থেকে শুরু করে চাকরিজীবনে চাকরিতে প্রবেশের শুরুতে সর্বক্ষেত্রে যদি ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়, তবে মাদকের আগ্রাসন কমে যাবে।

[১২] তিনি বলেন, ডোপ টেস্টের দুটি প্রস্তাব আমি দিয়েছিলাম। ডোপ টেস্টের একটি কর্তৃপক্ষ তৈরি করতে পারলে ভালো হবে। নয়তো ডোপ টেস্ট কে করবে? এর জন্য বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ইনস্টিটিউড অথবা বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং অথোরিটি এ দুটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

[১৩] অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শামসুল হক টুকু বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বৈশ্বিক মাদক কারবারি চক্রগুলো বাংলাদেশে মাদকের বাজার তৈরি করতে পাঁয়তারা চালাচ্ছে। যে কারণে দেশে মাদক পাচার হয়ে আসছে। দেশের সীমান্তে ও অর্ভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাদক প্রতিরোধে কাজ করছে। আমরাও সৈনিক হিসেবে মাদকের বিরুদ্ধে চেষ্টা চালাচ্ছি।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়