মাহা মির্জা: কয়েকজন প্রকৌশলী বন্ধুর সঙ্গে আলাপ করে যা জানলাম, অটোরিকশা নিষিদ্ধ করার সেই 'রাজসভা'য় বুয়েটের দুজন প্রফেসর উপস্থিত ছিলেন। আরো ছিলেন চায়না থেকে নতুন মডেলের অটোরিকশা আমদানি করার লাইসেন্স পাওয়া এক কোম্পানির প্রতিনিধি। অতঃপর, বিষয়টা বোঝা গেলো।
কোম্পানির প্রতিনিধি নিয়ে কিছু বলার নেই। তারা নিজেরা আমদানি করবে, তাই মন্ত্রী মিনিস্টারদের সঙ্গে 'সুসম্পর্ক' রেখে ব্যবসা করাই তাদের কাজ। খারাপ লাগে প্রফেসরদের জন্যে। তারা রোবট বানাবে, ড্রোন বানাবে, দুইদিন পর মিসাইলও বানাবে। কিন্তু ৫০ লাখ মানুষের জীবন জীবিকার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা একটি জরুরি বাহনের অটোমেশন বা আধুনিকায়নের সামান্য কাজটা তারা করবেনা। কারণ ঐটা 'ক্ষ্যাত'।
জনবিচ্ছিন প্রকৌশল বিদ্যা এলিট ক্লাব তৈরী করে। নিউক ক্লাবও তৈরী করে। খুব স্বাভাবিক। ফাইনাল ডেস্টিনেশন যার সিলিকন ভ্যালি, আমার দেশের রহিম করিমের জন্যে নিরাপদ এবং আধুনিক রিক্সার ডিজাইন করা তার স্বপ্নের তালিকায় থাকবেনা, সেটাই সাভাবিক। সে রোবটই বানাবে।
তার কি দোষ? লেবার ইনটেনসিভ দেশে, ছয়কোটি গ্রামীণ তরুনের দেশে, জবলেস গ্রোথের দেশে, বিজ্ঞ প্রফেসর তাকে মাটির কাছাকাছি স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন? এই দেশের ঘামের কষ্ট, রোদে পোড়া কালো চামড়ার কষ্ট তার টেক্সট বই গুলো বোঝে? কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার যে বিলিয়ন ডলার ইন্ডাস্ট্রি তার পিছনে আছে কলোনিয়াল লেগাসি, আছে ধনীর আরো ধনী হওয়ার রাজনীতি, ইঞ্জিনিয়ার মানুষ এইসব বুঝে কি করবে!
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব করবে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে দুনিয়া চেইঞ্জ করে দিবে, কিন্তু আমার দেশের সবচেয়ে পরিশ্রমী মানুষটিকে গর্ত থেকে রিক্সা তোলায় সাহায্য করতে একটা সস্তা গিয়ার ডিজাইন করে দিতে বলেন--বলবে, ফান্ড নাই। আমাদের এক জার্নালিস্ট বন্ধু একবার জিজ্ঞেস করেছিলেন, স্যার ধোলাইখালে কি ফান্ড আছে? (ফেইসবুক থেকে সংগৃহিত)
আপনার মতামত লিখুন :