শিরোনাম
◈ সরকারি দপ্তরগুলোতে গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফরে কড়াকড়ি: কৃচ্ছ্রনীতির অংশ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা ◈ ২১ বছর বয়স হলেই স্টার্ট-আপ লোনের সুযোগ, সুদ মাত্র ৪%: বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা ◈ ঢাকায় একটি চায়না টাউন প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে: আশিক চৌধুরী ◈ তিন বোর্ডে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত ◈ এসএসসির ফল নিয়ে যে বার্তা দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ◈ সৈক‌তের কা‌ছে দু:খ প্রকাশ ক‌রে‌ছেন ‌বি‌সি‌বির প্রধান নির্বাচক  ◈ ভারত সরকারকে আম উপহার পাঠাল বাংলাদেশ ◈ পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১৬ কর্মকর্তা বদলি ◈ কল রেকর্ড ট্রেলার মাত্র, অনেক কিছু এখনো বাকি, অপেক্ষায় থাকুন: তাজুল ইসলাম ◈ জাতীয় নির্বাচনের সব প্রস্তুতি ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা : প্রেস সচিব

প্রকাশিত : ২৫ জুন, ২০২১, ১২:২০ দুপুর
আপডেট : ২৫ জুন, ২০২১, ১২:২০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইসলামে আত্মহত্যা নিষিদ্ধ 

মুহাম্মদ মিজানুর রহমান: আত্মহত্যা একটি মস্ত বড় অন্যায়। এরূপ করা শরিয়তে একেবারে না-জায়েজ। এর শাস্তি চিরস্থায়ী জাহান্নাম। এই অপরাধের দ্বারা ব্যক্তি আল্লাহর দেওয়া বিধানের বরখেলাপ করে নিজের মা-বাবা, ভাইবোন ও আত্মীয়স্বজন সবার উপর জুলুম করে। এতে তাদের হক নষ্ট হয়। প্রত্যেকটি আত্মহত্যার পেছনে কোনো-না-কোনো কারণ থাকে। হতে পারে তা পারিবারিক ও সামাজিক কোনো সংকট। তবুও ইসলাম কোনোভাবেই এই বিষয়টিকে স্বীকৃতি দেয়নি। বরং মানুষ যাতে এরকম মানসিক বিপর্যস্ত অবস্থায় হতাশ না হয়ে আল্লাহ কাছে সাহায্য চায়, ধৈর্য ধারণ করে সেই উপদেশই দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বলা হয়নি। মানবজীবনে ধৈর্যের চেয়ে কল্যাণকর আর কিছু নেই। আল্লাহ এই ধৈর্যশীলদের পছন্দ করেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে,‘হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে আমার সাহায্য চাও, অবশ্যই আল্লাহ ধৈর্যশীল মানুষদের সাথে আছেন।’ (সূরা আল বাকারা, আয়াত - ১৫৩)।

মানবিক অপরাধবোধ বা পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে জীবনকে বিপন্ন করে দেওয়া জীবনের সমাধান নয়। বরং এটা ব্যর্থতার কাছে মাথা নত করা। যা কখনোই একজন মুমিন-মুসলমান ব্যক্তির চরিত্র হতে পারে না। ঐ ব্যক্তিই প্রকৃত মানুষ- যে অপরাধ করেছে, নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে, আবার আল্লাহর কাছে ফিরে এসেছে। পৃথিবীর কোনো প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে, দুঃখ-যাতনা বা কষ্টে ভুগছে, তবুও নিরাশ হয়নি। আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছে। আল্লাহ-ই বলেছেন, যে-কোনো সময়ে, যে-কোনো অবস্থায় তাঁর কাছে সাহায্য চাইতে। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,‘হে আমার বান্দারা, তোমরা যারা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছো আল্লাহর রহম থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমুদয় গুনাহ মাফ করে দেবেন। অবশ্যই তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সূরা আঝ ঝুমার, আয়াত - ৫৩)।

আত্মহত্যাকারীকে সমাজে কেউ ভালোবাসে না। সমাজের জন্য তারা একটি ঘৃণ্য উদাহরণ। আল্লাহর লানত এসব মানুষের উপর। রাসূলুল্লাহ সা: কখনো এমন ব্যক্তিদের জানাজার নামাজ পড়েননি। হজরত জাবের বিন সামুরা রা: থেকে বর্ণিত, ‘রাসূলুল্লাহ সা: এঁর কাছে এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হয়েছে, যে লোহার ফলা দ্বারা আত্মহত্যা করেছিল। তিনি তার জানাজার নামাজ আদায় করেননি।’ (মুসলিম)।

জুন্দুব বিন আব্দুল্লাহ রা: রাসূলুল্লাহ সা: থেকে বর্ণনা করেন- এক ব্যক্তি জখম হয়ে আত্মহত্যা করে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,‘আমার গোলাম আমার নির্ধারিত সময়ের আগে নিজের জীবনের ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আর আমি এ কারণে তার ওপর জান্নাত হারাম করে দিলাম।’ (বুখারি)।

রাসূলুল্লাহ সা: আত্মহত্যা না-করার জন্য শাস্তির ঘোষণা দিয়ে সতর্ক বাণী উচ্চারণ করেছেন,‘কোনো ব্যক্তি যে জিনিস দ্বারা আত্মহত্যা করবে কেয়ামতের দিন সেই জিনিস দ্বারাই তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। যদি সে ব্যক্তি ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে দোজখে সে নিজ হাতে ফাঁসির শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। আর সে যদি বর্শা বা এ জাতীয় কোনো কিছুর আঘাত দ্বারা আত্মহত্যা করে, সে দোজখে নিজেকে অনুরূপভাবে শাস্তি দিতে থাকবে।’ (তিরমিজি)।

আত্মহত্যার মতো কোনো প্রাণঘাতী সিদ্ধান্তকে কোনোভাবেই গ্রহণ করা যাবে না। এতে দুনিয়ার জীবন তো নষ্ট হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে আখিরাতের জীবনকেও চিরতরে হারাতে হবে। ভোগ করতে হবে অনন্তকালীন শান্তি। যে বিষয়ে কোনোপ্রকার সন্দেহ নেই। যে উপকরণ ব্যবহার করে সে আত্মহত্যা করবে সে নিজেকেই জাহান্নামে ওভাবেই অনন্তকাল ধরে শাস্তি দিতে থাকবে। কখনোই এই আজাব থেকে মুক্তি পেয়ে সে জান্নাতের স্বাদ ভোগ করতে পারবে না।

জীবনে দুঃখ-কষ্ট যতোই আসুক, নিরাশ না হয়ে আল্লাহর সাহায্যের উপর পূর্ণ ভরসা রাখতে হবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে আল্লাহই তাঁর জন্য যথেষ্ট।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়