সুজন কৈরী: [২] রাজধানীর মুগদা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুটি কিশোর গ্যাংয়ের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মুগদা থানা পুলিশ। গ্যাং দুটি হচ্ছে- চাঁন-জাদু ও ব্যান্ডেজ গ্রুপ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- চাঁন-জাদু গ্রুপের নেতৃত্বদানকারী জাদু, রবিন ও নয়ন ইসলাম শুভ। ব্যান্ডেজ গ্রুপের সদস্য হিরা ও রিপন।
[৩] পুলিশ বলছে, এই দুই কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা দলবেঁধে চলাফেরা করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করত। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারিও করত তারা।
[৪] বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. আবদুল আহাদ বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য বিশ্লেষণ করে আসামিদের তালিকা তৈরির পর মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুই গ্রুপের ৩২ কিশোর সদস্য রয়েছে। বাকিদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
[৫] তিনি বলেন, এই দুই কিশোর গ্যাং সদস্যরা স্মার্টফোন ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ করত। রাস্তায় চলাচলরত নারীদের উত্যক্ত করা, ছিনতাই, মাদক সেবন, ইভটিজিং, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও তারা প্রায়ই এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার জন্য দলবদ্ধ হয়ে সংঘাত সৃষ্টি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে।
[৬] ডিসি আবদুল আহাদ আরও বলেন, তারা গ্যাং কালচারের নামে নিজেদের হিরোইজম প্রদর্শন করতো। তারা পরিবারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও সমাজে অরাজকতা তৈরি করতো। এ গ্যাং ২টির সদস্যরা বিভিন্ন অনলাইন গেমের নামে সমবয়সী কিশোরদের সংঘবদ্ধ করে জুয়া খেলতে উৎসাহ প্রদান করে। গ্যাংয়ের সদস্যরা চুরি, ছিনতাই ও সিঁধেল চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত হয়।
[৭] ডিসি মো. আবদুল আহাদ বলেন, বিভিন্ন জনবিরল এমনকি জনসমাগমপূর্ণ স্থানেও তারা একাকী পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে। এরপর আশপাশের কেউ বুঝে ওঠার আগেই অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মানিব্যাগ, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যেত। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মুগদা থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
[৮] সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের ইন্ধনদাতা হিসেবে যদি প্রভাবশালী কেউ, এমনকি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের কেউ জড়িত থাকেন তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা আমরা এরইমধ্যে কমিয়ে এনেছি। এই চক্রের সদস্যরা এর আগেও তিন বার কারাগারে গেছে। কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে এরা একই কাজ করে আসছে।
আপনার মতামত লিখুন :