রাশিদ রিয়াজ : এটি যুদ্ধ জাহাজ হিসেবে তৈরির জন্যে ২শ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু এ জাহাজটিতে এখন আর কোনো যুদ্ধাস্ত্র বা গোলা বারুদের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে না। থাকছে না ক্ষেপণাস্ত্র। এমনিতে ব্রিটেনের সশস্ত্র বাহিনীতে ১৭ বিলিয়ন পাউন্ডের তহবিল নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন তুলেছেন ব্রিটিশ এমপিরা। তাই এই ব্রিটিশ রণতরীটি নির্মাণের সময় রুপান্তরিত করা হবে বাণিজ্যিক জাহাজে। ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেচ বলেছেন জাহাজটি বরং গোলাবারুদ বহনের পরিবর্তে বাণিজ্যিক কাজেই ব্যবহার করা হবে। অথচ এ জাহাজের জন্যে প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র ও ক্রুদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল।
জাহাজটির নাম রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ‘ডিউক অব এডিনবার্গ’। কিন্তু ব্রিটেনের রাজপরিবারও এখন আর তা চাচ্ছেন না। তবে ব্রিটেনের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী টোবিয়াস এলউড বলেছেন এ ঘটনা রাজকীয় নৌবাহিনীর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে। বরং টাইপ ২৩ ফ্রিগেট হিসেবে জাহাজটিকে ব্যবহার করাই সহজ ছিল। ব্রিটেনের পার্লামেন্টে প্রতিরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান টুইটে বলেছেন যুদ্ধ জাহাজের এধরনের বাণিজ্যিক রুপান্তর বরং অতিরিক্ত বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ বছরের শুরুতে ওয়েস্টমিনিস্টারের পাবলিক এ্যাকাউন্ট কমিটি সতর্ক করে বলে যুদ্ধ জাহাজের চেয়ে বরং জাহাজটি ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্যিক সুবিধার কাজে ব্যবহার করা সঙ্গত হবে।
আগামী বছর জাহাজটির নির্মাণ কাজ শুরু হওফার পর বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগাতে চার বছর লেগে যাবে। রাজকীয় নৌবাহিনী এ জাহাজটি কমপক্ষে ৩০ বছর ব্যবহার করতে পারবে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জাতীয়পতাকাবাহী এ জাহাজটি দেশটির অর্থনীতিতে নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করবে। অবশ্য নতুন এক জরিপে দেখা গেছে ব্রিটিশ নাগরিকরা নতুন জাহাজ তৈরিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তারা বলছেন এধরনের বরাদ্দের কোনো প্রয়োজন নেই। গত এপ্রিলে ইউগভ যে জরিপ করে তাতে ৫১ শতাংশ জাহাজটির রুপান্তরের বিরুদ্ধে এবং ২৫ শতাংশ অবশ্য রুপান্তরের পক্ষেই সায় জানিয়েছেন। ৫৭ শতাংশ নতুন করে জাহাজটি খরচের কোনো মানে হয় না বললেও ২৬ শতাংশ বলছেন খরচ করা যেতে পারে।
এধরনের জাহাজ বাণিজ্যিক মেলা, কূটনীতিক বা মন্ত্রীদের বিভিন্ন সম্মেলনে ব্যবহার বা রপ্তানি বৃদ্ধিতে কাজে লাগাতে চায় ব্রিটিশ সরকার। তবে বাজেট ঘাটতির কারণেই কি ব্রিটিশ রণতরী বাণিজ্যিক জাহাজে রুপান্তর করার এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে কী না সাংবাদিকদের এধরনের প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দেয়নি ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট। ব্রিটেনের বাণিজ্যমন্ত্রী কোয়াসি কাওটেং বলেছেন যে কাজেই ব্যবহার করা হোক না কেনো জাহাজটি ব্রিটেনের প্রতীক হিসেবে শোভা পাবে। আমরা বাণিজ্যিক যাত্রায় জাহাজটির নোঙ্গর তুলব।