শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৩ জুন, ২০২১, ০৬:২২ সকাল
আপডেট : ২৩ জুন, ২০২১, ০৬:২২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বীর মুক্তিযোদ্ধার চূড়ান্ত তালিকায় স্বীকৃতি পেয়েছে ৩ হাজার ৬৬৫ জন

সমকাল: বীর মুক্তিযোদ্ধার চূড়ান্ত তালিকায় তিন হাজার ৬৬৫ জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। তারা সবাই ২০০২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বেআইনিভাবে গেজেটভুক্ত হয়েছিলেন। তবে আইনের আওতায় পুনঃযাচাই-বাছাইয়ের পর কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তাদের বীর মুক্তিযোদ্ধার চূড়ান্ত তালিকায় স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে।

গত ১৫ জুন রাজধানীর স্কাউট ভবনে জামুকার ৭৫তম সভায় তাদের স্বীকৃতির বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া সভায় একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের চিকিৎসায় বিশ্রামগঞ্জ হাসাপাতালে নিয়োজিত আট কর্মচারী, ২৩ জন বীরাঙ্গনা, মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী ২৯ জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই তাদের নামে গেজেট প্রকাশ করা হবে। গেজেট প্রকাশের পর তারা মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য হবেন।

জামুকার সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি এ বিষয়ে বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় কাজ করেছে। তিন দফায় ইতোমধ্যে দেড় লাখের (১,৬৬,৬৪১) বেশি মুক্তিযোদ্ধাকে ওই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আরও তিন হাজার বেসামরিক (বিভিন্ন বাহিনীর) গেজেটভুক্ত ব্যক্তিকে পুনঃযাচাই-বাছাইয়ের পর বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে জামুকার গত সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ মাসেই ওই তালিকা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। মন্ত্রী জানান, বেসামরিক গেজেটভুক্ত যারা পুনঃযাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন তাদের আপিলের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আপিল কমিটিই তাদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জামুকার ৭৫তম সভায় বেআইনিভাবে গেজেটভুক্ত হওয়া দেশের ৫৫টি উপজেলার প্রায় চার হাজার ৭৬৬ জনকে পুনঃযাচাই-বাছাইয়ের পর তিন হাজার ৬৬৫ জনকে বীর মুক্তিযোদ্ধার চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন তাদের তথ্য মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে (এমআইএস) সন্নিবেশ করা হবে। এটি চূড়ান্ত হলে ওয়েবসাইটে বীর চূড়ান্ত তালিকায় তাদের নাম প্রকাশ করবে মন্ত্রণালয়।

জামুকা সূত্র জানায়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন, ২০০২ অনুযায়ী কোনো মুক্তিযোদ্ধা প্রার্থীর তথ্য সংবলিত আবেদন প্রথমে নিজ উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের মাধ্যমে যাচাই হয়। উপজেলা কমিটির সুপারিশে প্রাথমিকভাবে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হলে ওই তালিকা জামুকায় পাঠানো হয়। জামুকার সভায় তদন্ত ও অনুমোদনের পর সংশ্নিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাকে গেজেটভুক্ত করে মন্ত্রণালয়। কিন্তু ২০০২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে আইন ও বিধিবহির্ভূতভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটভুক্ত করা হয়েছে, যা মন্ত্রণালয়ের নথিপত্রে উঠে এসেছে। যার সংখ্যা ৩৬ হাজার ৬৯৭ জন। এর মধ্য থেকে দুই দফায় প্রায় ১৮ হাজার এ পর্যন্ত পুনঃযাচাই-বাছাইয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। অন্যদের আপিলের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। গত ৩০ জানুয়ারি ও ৬ ফেব্রুয়ারি দেশের ৪৯৫টি উপজেলা ও মহানগরে বেআইনিভাবে গেজেটভুক্ত হওয়া প্রায় সাড়ে ৩৬ হাজার ব্যক্তির যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় এবং মহানগর পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এই যাচাই-বাছাই কার্যক্রম পরিচালনা করে জামুকা মনোনীত চার সদস্যের কমিটি।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, দেশে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৩৮৭ জন গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা থাকলেও বর্তমানে চূড়ান্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে। এ জন্য প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার নথিপত্র এবং মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির জন্য আবেদনকারীদের যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এর আওতায় গত ২৫ মার্চ, ৯ মে ও ৭ জুন তিন ধাপে এক লাখ ৬৬ হাজার ৬৪১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ করা হয়। গত ১৫ জুন জামুকার সভায় যে তিন হাজার ৬৬৫ জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাদেরও বীর মুক্তিযোদ্ধার এই চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়