শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ২২ জুন, ২০২১, ০২:৩৯ দুপুর
আপডেট : ২২ জুন, ২০২১, ০২:৩৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] আন্তর্জাতিক নারী পাচারের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও জড়িত : পুলিশ

মাসুদ আলম : [২] মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মো. শহিদুল্লাহ বলেন, যশোর ও নড়াইলে অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের অন্যতম হোতা নদী আক্তার ইতি ওরফে জয়া আক্তার জান্নাত ওরফে নূর জাহানসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে হাতিরঝিল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া অন্যরা হলেন- আল আমিন হোসেন, সাইফুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম, পলক মন্ডল, মো. তরিকুল ইসলাম ও বিনাশ শিকদার। নদীর টিকটক বাবু ও সাগরের ঘনিষ্ট।

[৩] তিনি আরও বলেন, পাচারের উদ্দেশ্যে আনা মেয়েদেরকে যশোর সীমান্তে বাড়িতে রেখে সুযোগ মতো ভারতে পাচার করত চক্রটি। পাচারকৃত প্রত্যেক মেয়ের জন্য স্থানীয় এক ইউপি সদস্য এক হাজার টাকা করে নিত। পাচারকালে কোনো মেয়ে বিজিবির কাছে আটক হলে সেই ইউপি সদস্য তাকে আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে আসত। ২০০৫ সালে সন্ত্রাসী রাজীব হোসেনের সঙ্গে নদীর বিয়ে হয়। ২০১৫ সালে রাজীব বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়। এরপর থেকেই নদী পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। পাচারকৃত ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নদীর দশটির মতো নাম পাওয়া যায়। নদী ভারত, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ের নারী পাচার চক্রের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করে।

[৪] ডিসি বলেন, পাচার হওয়া নারীদের কাছে সে নদী হিসেবে পরিচয় দিলেও ভারতে তাকে সবাই ইতি নামে চেনে। ভারতীয় আধার কার্ডে তার নাম জয়া আক্তার জান্নাত। বাংলাদেশি পাসপোর্টে তার নাম নূরজাহান। সাতক্ষীরা সীমান্তে তার নাম জলি, যশোর সীমান্তে সে প্রীতি নামে পরিচিত। আল আমিন হোসেন ২০২০ সালে ঈদ উল আযহার চারদিন পর নারী পাচার করতে গিয়ে বিএসএফ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হয়। পাচারের উদ্দেশ্যে আনা মেয়েদেরকে তার বাড়িতে রেখে সুযোগমতো ভারতে পাচার করত। সে নারী পাচারের পাশাপাশি মাদক ব্যবসায় জড়িত। তার নামে যশোরের শার্শা থানায় দুটি মাদক মামলা রয়েছে।

[৫] তিনি আরও বলেন, সাইফুল ইসলামের শার্শার পাঁচভূলট বাজারে মোবাইল রিচার্জ ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসা আছে। মানবপাচারে জড়িত ইসরাফিল হোসেন খোকন, আব্দুল হাই, সবুজ, আল আমিন ও একজন ইউপি সদস্য তার মাধ্যমে মানবপাচার থেকে অর্জিত অর্থ বিকাশে লেনদেন করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে সে মানবপাচারে জড়িত ব্যক্তিদের সতর্ক করে। বিকাশ ট্রানজেকশনে ব্যবহৃত মোবাইলটি জব্দ করা হয়েছে। পলক মন্ডল যশোরের মনিরামপুর ঢাকুরিয়া স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার গাহঘাটা থানার নলকড়া গ্রামে নানা বাড়িতে যায়। সেখানে আবার পঞ্চগ্রাম স্কুলে ক্লাস সেভেনে ভর্তি হয়ে মাধ্যমিক পাশ করে। পরবর্তীতে ডিগ্রি নিয়ে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শুরু করে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা নিতে আসা গ্রাম্য দরিদ্র মেয়েদেরকে ব্যাঙ্গালোরে তাসলিমা ওরফে বিউটির কাছে পাঠানোর মাধ্যমে নারী পাচারের হাতেখড়ি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত মেয়েদেরকে আধার কার্ড প্রস্তু করে দেয়ার পাশাপাশি ‘সেফ হোম’ এ অবস্থ’ান এবং ব্যাঙ্গালোরে নির্ধারিত স্থানে পাঠানোর দায়িত্ব নেয় সে।

[৬] তিনি বলেন, এছাড়াও সে ভারতীয় আধার কার্ড ও ভারতের নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত আইডি কার্ডধারী। সে উত্তর প্রদেশের গোরাক্ষপুর জেলার বড়ালগঞ্জ থানার নেওয়াদা গ্রামেও থেকেছে। তার কাছ থেকে তার ভারতীয় আধার কার্ড ভারতে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত আইডি কার্ড, ভারতীয় আয়কর বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত আইডি কার্ড, ভারতীয় সিম কার্ড ও একজন ভিকটিমের আধার কার্ড জব্দ করা হয়েছে। বিনাশ সিকদার নড়াইলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। সে বেনাপোলে বাসা ভাড়া নিয়ে পাসপোর্ট ফরম পূরণের কাজ করে। তার স্ত্রী সোনালী সিকদার ভারতীয় নাগরিক। বেনাপোলে পাসপোর্ট ফরম পূরণের কাজ করতে গিয়ে ইসরাফিল হোসেন খোকন, আব্দুল হাই সবুজ ও মানবপাচারে জড়িত আরও কয়েকজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।

[৭] সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে মানবপাচারে জড়িয়ে পড়ে। যশোর ও নড়াইল থেকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে উচ্চ বেতনে চাকরি বা প্রলোভন দেখিয়ে আনা নারীদেরকে ইসরাফিল হোসেন খোকন, আল আমিন, তরিকুল, আমিরুল ও আরো কয়েকজনের মাধ্যমে সীমান্ত পার করে ভারতীয় দালালদের কাছে পৌঁছে দেয় সে। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট এবং দুটি মোবাইল জব্দ করা হয়েছে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়