মনোয়ার হোসাইন: [২] শনিবার ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে মিললো ১২ বস্তা দেশি-বিদেশি মুদ্রা এবং বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও রৌপ্যালঙ্কার মেলায়।
[৩] শহরের নরসুন্দা নদী পাড়ে অবস্থিত ঐতিহাসিক এ মসজিদটিতে নতুন তিনটিসহ মোট আটটি লোহার বানানো দানবাক্স রয়েছে। প্রতি তিন মাস পরপর এসব বাক্স গুলো খোলার রেওয়াজ রয়েছে। কিন্তু; এবার করোনা কালের জন্য প্রায় সাড়ে চার মাস পর আজ শনিবার এসব দানবাক্স খুলে সবার চক্ষু চড়কগাছ!
[৪] শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে এসব দানবাক্স খুলা হয়। আর বরাবরের মতোই এসব দানবাক্স খুললে এ বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও রৌপ্যলঙ্কার মেলে।
[৫] সকাল থেকে এসব টাকা গোনার কাজে অংশ নেন ব্যাংক কর্মকর্তাসহ মসজিদ মাদ্রাসার দুই শতাধিক ইমাম, শিক্ষক এবং মসজিদ মাদ্রাসার শিক্ষক -শিক্ষার্থী।
[৬] এর আগে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি এসব দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় ২ কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ টাকা। এ ছাড়া বিদেশি মুদ্রাসহ স্বর্ণ ও রূপার অলঙ্কার। এ মসজিদটিতে বর্তমানে আটটি দানবাক্স রয়েছে।
[৭] মসজিদটির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, এসব অর্থ এ মসজিদসহ জেলার সব মসজিদ,মাদ্রাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয় ।
[৮] মসজিদের খতিব,এলাকাবাসী ও দূর-দূরন্ত থেকে আসা লোকজন সূত্রে জানা যায়, এখানে মানত করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়- এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এখানে দান করে থাকেন।
[৯] তারা নগদ টাকা-পয়সা,স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি দান করেন।বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এ মসজিদে মানত নিয়ে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের ঢল নামে।
[১০] আগতদের মধ্যে মুসলিমদের অধিকাংশই জুমার নামাজ আদায় করেন এ মসজিদে। আর এ ইতিহাস প্রায় আড়াইশ বছরেরও অধিক সময়ের বলে জানা যায়।
[১১] জেলা প্রশাসককে (ডিসি) সভাপতি করে প্রশাসন ও স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজনকে নিয়ে গঠিত কমিটি এ মসজিদটির ব্যবস্থাপনা ও দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন। আর দানের বিপুল অর্থ মসজিদ ও মসজিদ ক্যাম্পাসে অবস্থিত মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়।
[১২] আর টাকা গোনার কাজে বরাবরই অতিরিক্ত জেলা মাজিস্ট্রেট (এডিএম), নেজারত ডেপুটি কালেক্টর, নির্বাহী মাজিস্ট্রেট, রূপালী ব্যংকের এজিএম ও অন্যান্য কর্মকর্তা, ব্যবস্হাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে থাকেন। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :