শিরোনাম
◈ সাভারে শো-রুমের স্টোররুমে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ২ ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ১৯ জুন, ২০২১, ০২:১১ দুপুর
আপডেট : ১৯ জুন, ২০২১, ০২:৩৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সৈয়দ ফায়েজ আহমেদ: মিলখার জীবন যেন এই উপমহাদেশের মানুষের প্রতিচ্ছবি

সৈয়দ ফায়েজ আহমেদ: কিংবদন্তী দৌড়বিদ মিলখা সিং আজকে মারা গেলেন।
মিলখার জীবন যেন এই উপমহাদেশের মানুষের প্রতিচ্ছবি।
রোম অলিম্পিক ১৯৬০ সালে ৪০০ মিটারে মিলখার পদক না জেতা এক অবিশ্বাস্য ট্র্যাজেডি। ভালো ট্র্যাকে দৌড়ানোর সুযোগ না পাওয়া মিলখা সেদিন প্রথম ২৫০ মিটারে সবার থেকে যোজন যোজন দুরত্বে এগিয়ে থেকেও ওর মনে ভাসে ইউরোপীয় কোচের উপদেশ। তার মনে পড়ে, একই বেগে ৪০০ মিটার দৌড়ানোটা ঠিক বিজ্ঞানসম্মত, আধুনিক নয়৷
বিভ্রান্ত মিলখা দৌড়ের গতি কমিয়ে দেন আর শেষতক ফটো ফিনিশে চতুর্থ হন।

বর্তমানে পাকিস্তানের অংশ মুজাফফরবাদে জন্ম নেয়া এই শিখ, দেশভাগের সময় নৃশংস সাম্রদায়িক গণহত্যা এড়াতে পালিয়ে দিল্লী চলে যান। সেই গণহত্যা, যাতে মিলখার বাপমা আর আটভাইবোনকে হত্যা করে উন্মত্ত রায়টকারীরা, যারা যুগ যুগ ধরে ছিলো ওদেরই প্রতিবেশী, ভাই, বন্ধু।
উদ্বাস্তু কলোনীতে আশ্রয় নেয়া, জেলখাটা, প্রতিদিনের অপমানের জীবন কাটানো মিলখা স্থির করেন তিনি ডাকাত হবেন। শোধ তুলবেন সব জ্বালার।

অবশ্য, শেষতক নিকটজনদের পরামর্শে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার আবেদন করেন আর চারবারের চেষ্টার পর নিযুক্ত হন। ছোটবেলায় যেই ছেলেটা দশ-দশ বিশ কিলোমিটার দৌড়ে স্কুলে যেত, ওর বিশেষ প্রতিভাতেই অবশেষে চাকরিটা মেলে।

এরপর যা বলা হয়, বাকিটা ইতিহাস। এর আগে কখনো অলিম্পিকের নাম না শোনা মিলখা প্রস্তুতি নিতে থাকেন সেই প্রতিযোগীতার জন্য।
আর সেটা করতে গিয়ে জিতে নেন ১৯৫৮ সালের টোকিয়ো এশিয়ান গেমসে ২০০ আর ৪০০ মিটারের স্বর্ণপদক। একই বছরে কমনওয়েলথ গেমসে ৪৪০ গজ ইভেন্টের স্বর্ণ।

এরপরেরবার ১৯৬২ সালের জাকার্তা এশিয়ান গেমসেও আবার স্বর্ণ জেতেন অলিম্পিকের ট্র্যাজেডি ভুলে।
তবে, আমরা ফিরে আসি ১৯৫৮ সালের টোকিওতে। সেদিন মিলখা ২০০ মিটারে যাকে হারান তিনি এই উপমহাদেশের কিংবদন্তী স্প্রিন্টার আব্দুল খালিক। মুসলমানের ঘরে জন্মানোয় খালিককে অবশ্য জীবন নিয়ে পালাতে হয়নি পাঞ্জাব ছেড়ে। মিলখার চেয়ে চার বছরের ছোট এই সুবেদার তাই পাকিস্তানের হয়ে দৌড়তেন। টানা দুইবার- ম্যানিলা ১৯৫৪ আর টোকিও ১৯৫৮তে হন এশিয়ার দ্রুততম মানব। তবে টোকিতে ২০০ মিটারে অল্প ব্যাবধানে, 'এশিয়ার পাখি' টাইটেল পাওয়া খালিক হেরে যান, 'উড়ন্ত শিখ' মিলখার কাছে।

এর সাত বছর পর উভয়েই আবার লড়াইয়ে নামেন, এইবার অবশ্য এথলেটিকের মতো সুন্দর নয়, অস্ত্র হাতে কদর্য লড়াই, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে।
তবে, সব ছাপিয়ে সবচেয়ে আফসোসের কথা হচ্ছে মিলখা আর খালিকের উত্তরসূরীরা এখন বিশ্ব এথলেটিক বাদ, এশিয়ান এথলেটিকেও আর শীর্ষে থাকতে পারেন না। ঘৃনা, হিংসা, হানাহানির এই নারকীয় উপমহাদেশে মিলখার মতো, খালিকের মতো মানবপাখি হয়ে স্বর্গ ছোয়া হয়ে উঠে না কারো।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়