সাবিনা শারমিন: অতিরিক্ত সৌন্দর্য অনেকটা দশ নম্বর বিপদ সংকেত মতো! সেই বিপদে পুরুষতো বটেই, আশেপাশে অনেক কাছের নারীরাও ক্রমে ভুক্তভোগী নারীর শত্রু হয়ে ওঠে। এর কারণ সৌন্দর্যের জটিল মনস্তত্ত্বের মানুষদের আনন্দের চেয়ে পীড়া দেয় বেশি। সেই পীড়ার পাশর্^প্রতিক্রিয়া হচ্ছে চরিত্রের ওপর অসুন্দর মানুষদের বিষ্ঠার বোমা মারা। সুন্দরেরা ওই বিষ্ঠার বোমা যদি শত্রুদের মুখে মোক্ষম সময়ে ঢাল দিয়ে প্রতিহত করে ফিরিয়ে দিতে না পারে, তবে সেই বিষ্ঠা একসময় আগুনে পরিণত হয়। হতে হতে নিজের সৌন্দর্যের দাহে এক সময় সুন্দর মানুষ নিজেই এক সময় পুড়ে মরে। সেই পোড়া দেহ ঝলসে ঝলসে মানুষই মানুষকে খায়। আমরা মুনিয়ার ক্ষেত্রে তাই দেখেছি। মেয়েটি মরেও রক্ষা পায়নি। তার ছেলেমানুষি টিক টক ভিডিওগুলো দিয়ে দিব্যি ইউটিউবে ব্যবসা হচ্ছে। আফসোস খানিকটা বুদ্ধিমত্তা থাকলে মেয়েটি এই পিচ্ছিল পথ থেকে হয়তো বের হয়ে গেলেও যেতে পারতো। তাই সৌন্দর্যের সঙ্গে শিক্ষা, বুদ্ধিমত্তা আর সাহসের কোন বিকল্প নেই। অন্যথায় সম্মানের সাথে সারভাইভ করা ভীষণ কঠিন। গত কয়েকদিন আগে স্ফুলিঙ্গ ছবির একটি গান দেখেছিলাম। এই ছবির গানটিতে অভিনয় শিল্পী পরীমনিকে দেখলাম। দেখে মনে হলো অনেকদিন পর একটি ভালো গান, গানের সাথে অপূর্ব প্রেমময় এক্সপ্রেশন এবং সর্বোপরি পরীমনির সৌন্দর্য! দেখে মনে হলো বাংলাদেশে এরকম সুন্দর একজন অভিনয় শিল্পী রয়েছে, এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। তাকে দেখে ছেলেবেলায় দেখা ববিতা অথবা অলিভিয়ার মতো সুন্দর মানুষ মনে হয়েছে আমার কাছে। এরকম একজন অভিনেত্রীর শিল্পসত্ত্বা ও সৌন্দর্যকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে যথাযথ ব্যবহার করতে পারা উচিৎ । অথচ দেখুন, পরীমনির রিসেন্ট ঘটনায় আমজনতার প্রতিক্রিয়াগুলো দেখুন !
অধিকাংশ উন্নত দেশে অন্যের ক্ষতিসাধন না করে নিজ নিয়ন্ত্রণে মদ পান করা অপরাধ নয়। কিন্তু বাঙালী মদ খেলে তার ধামাচাপা দেয়া পুরুষ তন্ত্রের পঁচা বিষ্ঠা তরতর করে মাথায় গিয়ে ওঠে। সেখান থেকে ফুড়ুৎ করে মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়। মদারু বাঙ্গালকে তখন আর কেউ রক্ষা করতে পারেনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এস এম হল, লায়ন্স ক্লাব,পুলিশের বড় কর্মকর্তা , বোট ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, কিছুই তখন আর কোনো কাজে আসে না। যাহোক বোট ক্লাবের পরিচালক নাসির সাহেব এর কয়েকটি হাস্যকর তোতলানো বাক্য শুনলাম। তিনি নিজে মদ খেয়ে গালাগাল করে একজন দুর্দান্ত অভিনয় শিল্পীকে নিজের নিয়ন্ত্রণে না আনতে ব্যর্থ হয়ে বলছেন তিনি নিজেই নাকি ভিক্টিম! আহারে অসহায় অবলা নর নাসির উদ্দিন! নায়িকা আপনার শ্লীলতা হানি করেন নাইতো? তিনি আরো বলেছেন মদ কেড়ে নিতে না পেরে পরী নাকি গালাগাল আর ভাঙচুর করেছে। যাক, সায়েম সোবহান আনভীরের উপর আম পাবলিকের ক্ষোভ এখন দ্বিগুণ হারে গুনতে হবে অবলা নাসিরকে। নাসির হয়তো পুলিশ কর্মকর্তাদের ছবি দিয়ে কভার ফটো বানায়। কিন্তু সায়েমরা তো পুলিশকে মাস্ক বিতরণ করে পুলিশ পকেটে নিয়ে ঘোরে । অভিনয় শিল্পী পরীমনির সাহসকে আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা জানাই। সৌন্দর্যের সঙ্গে সঙ্গে আপন প্রতিভা এবং শাণিত ব্যক্তিত্বে তোমার লক্ষ্যে সম্মানের সাথে তুমি পৌঁছে যাও। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :