শিরোনাম
◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের  ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল

প্রকাশিত : ১৬ জুন, ২০২১, ০৫:৫২ বিকাল
আপডেট : ১৬ জুন, ২০২১, ০৫:৫২ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] লক্ষ্মীপুরে তিন লক্ষাধিক মানুষের আতংক অস্বাভাবিক জোয়ারে!

রিয়াজ মাহমুদ : [২] লক্ষ্মীপুরের মেঘনা উপকূলীয় কমলনগর-রামগতি উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ১১ টি ইউনিয়নের তিন লক্ষ মানুষের নিকট এক আতংকের নাম অস্বাভাবিক জোয়ার। প্রতিনিয়ত মেঘনানদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হচ্ছে এসব এলাকায়। এ অস্বাভাবিক জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাছের ঘের, ফসলী জমি, রাস্তাঘাট, পুল কালভার্ট, বাড়িঘর, পুকুর এবং গবাদি পশু-পাখি। প্রচন্ড সংকটে পড়ে সুপেয় পানি। জোয়ারের লোনা পানির প্রভাবে হাজার হাজার একর জমির ফসল (রবি শস্য) নষ্ট হয়ে গেছে। লোনা পানির প্রভাবে অনাবাদি থাকছে কৃষি জমি।

[৩] বসত ঘরে প্রবেশ করছে বিষাক্ত সাপ-বিচ্ছু এবং পোকামাকড়। বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো ভাংগনের শিকার হওয়ায় উপকূলীয় এলাকার বেশ কয়েকটি বসত বাড়িতে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বিদ্যুত সংযোগ।অতিরিক্ত জোয়ার ও টানা কয়েকদিনের বর্ষায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে রামগতি থেকে বিবিরহাট সড়ক। চলাচলের এ প্রধান সড়কটির কোরের বাড়ি সংলগ্ন রাস্তার মোড় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড় চররমিজ ইউনিয়নের ছোট বড় বেশ কয়েকটি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

[৪] একাধিক সড়ক ভেঙে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, কমলনগর উপজেলার চরফলকন, পাঠারিরহাট, সাহেবের হাট, চরলরেন্স, কালকিনি ও চরমার্টিন এবং রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার, চরআলগী, চররমিজ, বড়খেরী, চরগাজী ইউনিয়ন ও রামগতি পৌরসভা মেঘনা উপকূলের নিকটবর্তী হওয়ায় এসব ইউনিয়নের প্রায় তিন লক্ষ মানুষ প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানিতে যুদ্ধ করে টিকে আছে। জোয়ারের তীব্রতায় ভাংগনের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে।

[৫] গত দুই বছরে দক্ষিন চরআলগী, বালুরচরের সবুজ গ্রাম, আসলপাড়া, বড়খেরীর বিস্তীর্ণ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।ঐতিহ্যেবাহী মুন্সিরহাট বাজারটি নদী গর্ভে বিলীন। ভাংগনের মুখে রয়েছে বাংলাবাজার আলিম মাদরাসা, জনতা বাজার, রঘুনাথপুর পল্লী মঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়সহ সরকারি ও বেসরকারি বহু স্থাপনা। অন্যদিকে কমলনগর উপজেলার কাদির পন্ডিতের হাট, হাজিগন্গ মতিরহাট, মাতাববর হাট, সাহেবের হাট, তালতলী বাজার,লুধুয়া বাজার,বাঘারহাট সহ ছোট বড় কয়েকটি হাটবাজার স্কুল মাদরাসা ও মসজিদ সহ অসংখ্য স্থাপনা নদীর পেটে চলে গেছে বহু আগেই।

[৬] উপজেলার মুন্সিরহাট (জনতাবাজার) এলাকার মো: ইমাম হোসেন,চরমার্টিন এলাকার আনিছুর রহমান জানান, টেকসই এবং স্থায়ী বেড়ীবাঁধ না থাকায় প্রায় সময় জোয়ারে হানা দেয়। লোকালয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে নানামুখী দুর্ভোগ দেখা দেয়। ভাংগনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় দু উপজেলার তিন লাখ মানুষ চরম আতংকে রয়েছে। চররমিজ ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক গোলাম ছারওয়ার ও চরকালকিনি ইউপি চেয়ারম্যান মাষ্টার সাইফুল্লাহ জানান, প্রতিবারই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক গুলোর তালিকা পাঠাই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। ইউনিয়র পরিষদের সংষ্কার বিষয়ক বরাদ্ধের অপ্রতুলতার কথা তুলে ধরে বলেন এ বিশাল ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার মত সামর্থ পরিষদের নেই।

[৭] ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক গুলোর ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে। কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান বলেন,নদীর প্রচন্ড আঘাত ও জোয়ারের পানি প্রবেশ করে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল জনপ্রতিনিধিদেরকে সজাগ থাকতে বলেছি। খবর পেলেই সাথে সাথে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

[৮] রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মোমিন বলেন, রামগতি উপজেলাটি মেঘনানদীর একেবারে নিকটবর্তী হওয়ায় এ উপজেলার জীবনমান নদী ও জোয়ারের পানির সাথে লড়াই করে টিকে আছে। যে কোন দুর্যোগ মুহুর্তে উপজেলা প্রশাসন প্রতিনিয়ত ছুটে যাচ্ছে বিভিন্ন গ্রামে। প্রশাসন সব সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর পাশে আছে। উল্লেখ্য যে, চলতি ১ জুন সরকার একনেকের বৈঠকে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর-রামগতির মেঘনানদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের ৩১ কিলোমিটার এলাকার জন্য ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে । সম্পাদনা: সাদেক আলী

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়