গাজী নাসির উদ্দিন আহমেদ: কমিউনিটি ফোরাম আর নিউজ পাবলিশার এক জিনিস নয়। উদাহরণ দিই, ফেসবুক একটি কমিউনিটি ফোরাম। তার জন্য আইন এক রকম। নিউইয়র্ক টাইমস নিউজ পাবলিশার। তার জন্য অন্য আইন। ফেসবুক কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলে বলে দাবি করে। তাদের দাবিতে শুভংকরের ফাঁকি আছে। কারণ তাদের এলগোরিদম টার্গেটেড ইনডিভিজুয়াল বা কমিউনিটিকে ফেক নিউজ বা ডিজইনফরমেশন দিয়ে ম্যানিপুলেট করতে পারে। উদাহরণ, ক্যাম্ব্রিজ অ্যানালিটিকা। এলগোরিদমের মাধ্যমে ফ্যাক্টস দিয়েও নিউইয়র্ক টাইমস চাইলে তার অডিয়েন্সকে ম্যানিপুলেট করতে পারে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ এখনো উঠেনি। একটা পার্থক্য আছে। ফেসবুকের কন্টেন্ট কোনো প্রকার এডিটোরিয়াল ওভারসাইট ছাড়া প্রকাশ করা হয়। নিউইয়র্ক টাইমস সেটা পারে না। বার্নার্ডশ’র সেই পুরান কথা। আর্মস অ্যান্ড দ্যা ম্যানের কথা। ট্যাঙ্ক চালায় মানুষ। এই গৌরচন্দ্রিকার হেতু আছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস ইন্ডিপেন্ডেন্ট এডিটোরিয়াল লিডারশিপে চলে। অনেক সমালোচনা সত্ত্বেও সে ৯৫ শতাংশ সত্য প্রকাশ করতে পারে। আমাদের দেশে এডিটোরিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্স নেই। এ বস্তু খায় না মাথায় দেয় তাও আমরা অনেকে জানি না।
প্রেস ফ্রিডম প্রেসের যা ইচ্ছে তা বলার স্বাধীনতা না। জনগণের কল্যাণ বা স্বার্থের নিমিত্তে ল অব দ্য ল্যান্ড যাকে বলা হয় সেই সংবিধান প্রেসকে শর্ত সাপেক্ষে স্বাধীনতাটা দেয়। আমাদের যেমন আর্টিকেল থার্টি নাইন। আমরা নিউইয়র্ক টাইমস হইতে পারি না কেন? আমাদের এডিটোরিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্স নেই। আমাদের যথেষ্ট বিনিয়োগ নেই। আমাদের দক্ষতা নেই। পেশাদারিত্ব নেই। যে নেইগুলো বললাম সেগুলো অর্জন করলে আমাদেরও হবে। ভালো এডিটোরিয়াল লিডারশিপ লাগবে। বিনিয়োগ মুনাফা বা সামাজিক-রাজনৈতিক-ব্যবসায়িক মতলবের বাইরে করলে হতে পারে। দক্ষতা, পেশাদারিত্ব শিক্ষণ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হতে পারে। তাহলে দেখবেন আমরাও একালের যুধিষ্ঠির হতে পারবো।
বিঃদ্রঃ বৃহত্তর রাজনৈতিক স্বার্থ শেষ বিচারে জনগণের কল্যাণেই কাজ করে বলে আমার বিশ্বাস। তাই বৃহত্তর রাজনৈতিক স্বার্থ সত্য প্রকাশের অন্তরায় নয় বলে আমি মনে করি। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :