মোজাফ্ফর হোসেন: হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারছি না। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর ‘গার্ড অব অনার’ দিতে পারবেন না কোনো নারী। এই দাবি আবার খোদ সংসদীয় কমিটির। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি গার্ড অব অনারে নারী ইউএনওর বিকল্প চায়। কোন যুক্তিতে? ইসলামধর্মে নারীদের জানাজায় অংশ নেওয়ার বিধান নেই এই কারণে একজন নারী গার্ড অব অনার দিতে পারবেন না। আচ্ছা, জানাজা আর গার্ড অব অনার কী এক? গার্ড অব অনার কী ইসলামি সংস্কৃতি? আবার, মুক্তিযোদ্ধা মুসলমান না হলে? কিংবা ইউএনও (নারী কিংবা পুরুষ) অন্য ধর্মাবলম্বী হলে? জানাজার কথা তুলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি প্রস্তাব করেছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে যেখানে নারী ইউএনও আছেন, সেখানে বিকল্প একজন পুরুষ কর্মকর্তা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। লক্ষ্য করুন, এই প্রস্তাব কিন্তু ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি থেকে আসেনি। শতাধিক উপজেলায় নারী ইউএনও রয়েছেন। তার জন্য বর্তমান সরকারকে আমরা বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিই। এখন, এই প্রস্তাবের মাধ্যমে তাদের চরমভাবে অপমান করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। যেখানে কয়েকটি দেশের নারীরা জানাজায় দাঁড়ানোর অধিকার নিয়ে ফাইট করছেন।
উল্লেখ্য, বছর কয়েক আগে পাকিস্তানের মানবাধিকারকর্মী আসমা জাহাঙ্গীরের জানাজায় প্রথমসারিতে তার দুই কন্যাসহ কয়েকজন নারী দাঁড়িয়েছিলেন, সেখানে বাংলাদেশে গার্ড অব অনার দেওয়ার রাষ্ট্রীয় অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা যারা করছেন তাদের এখনই রুখে দিতে হবে, না-হলে ভবিষ্যতে নারীর ইউএনও হওয়া নিয়ে যে মৌলবাদীরা প্রশ্ন তোলেন তারা প্রশ্রয় পাবে। লেখক : কথাসাহিত্যিক। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :