আশরাফুল নয়ন: [২] নওগাঁর মান্দায় প্রসাদপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে সাংবাদিক নির্যাতনের মামলায় এজাহারভুক্ত ৪ জন আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। রোবাবার (১৩ জুন) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নওগাঁর ২নং আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিকাশ কুমার বসাক এ নির্দেশ দেন।
[৩] আসামীরা হলেন, প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন রানা (৩০), সভাপতি এরশাদ আলী (৫০), সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার (৪৫) এবং খাদেমুল ইসলাম (৫৫)।
[৪] আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন, অ্যাডভোকেট হারুনুর রশীদ এবং রাষ্ট্রপক্ষের ছিলেন সহকারী উপ-পরিদর্শক (সিএসআই) মামুনুর রশীদ। পরবর্তী শুনানী হবে আগামী ০৯/০৮/২০২১ ইং।
এদিকে শনিবার (১২ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের দাওইল গ্রাম থেকে দলিল লেখক সমিতির সদস্য মিজানুর রহমান নামে একজনকে আটক করে পুলিশ রোববার দুপুরে তাকে জেল হাজতে পাঠায়। বর্তমানে ৫ জন আসামি জেলহাজতে রয়েছেন।
[৫] উল্লেখ্য, নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতি সদস্যরা সাধারণ মানুষদের সাথে প্রতারণা করে দীর্ঘদিন থেকে অতিরিক্ত চাঁদা আদায় করে আসছেন। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে হয়রানি শিকারসহ ও জমি রেজিস্ট্রি বন্ধ করে দেন তারা।
[৬] গত ৮ জুন দৈনিক যুগান্তর ও জাগোনিউজের জেলা প্রতিনিধি আব্বাস আলীর বড় ভাই আসাদ আলী তার পারিবারিক জমি রেজিস্ট্রি করতে প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতিতে যান। সেখানে দলিল লেখকের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে ১২ লাখ টাকা মূল্যের একটি জমি রেজিস্ট্রি করতে চান। দলিল লেখক সমিতির সাধারন সম্পাদক বাবুল আক্তার ১০.৫ টাকা শতকরা হারে ১২ লাখ টাকার দলিলে ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা দাবি করেন। যা সরকারি মূল্যের চাইতে ৪৮ হাজার টাকা বেশি।
[৭] বিষয়টি আসাদ আলী তার ছোট ভাই সাংবাদিক আব্বাস আলীকে জানালে তিনি স্ব-শরীরে সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তারের সঙ্গে দেখা করে খরচ কিছু কমানোর অনুরোধ জানান। সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার কোন কম হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। দলিল রেজিস্ট্রিতে সরকারি খরচের বিষয় জানতে চাইলে তারা আব্বাস আলীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারমুখী আচরণ করে দলিল লেখক সমিতি চত্বর থেকে বের করে দেয়। পরে তিনি বিষয়টি সাব-রেজিস্ট্রিারের সঙ্গে আলোচনা করতে তার এজলাস কক্ষে যান। এসময় দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার ও সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন রানার নেতৃত্বে ১০-১২ জন এজলাস কক্ষ থেকে শার্টের কলার ধরে আবারও টেনে হিচড়ে বের করে বারান্দায় নিয়ে সংগবদ্ধভাবে তাকে কিলঘুষি মেরে আহত করে কাছে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।
[৮] যার মধ্য জমি রেজিস্ট্রি বাবদ নগদ তিন লক্ষ টাকা, একটি ভিডিও ক্যামেরা ও একটি ল্যাপটপ ছিল। পরে স্থানীয় কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। ঘটনায় ভুক্তভোগী আব্বাস আলী ওই দিন সন্ধ্যায় বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
সম্পাদনা: মারুফ হাসান
আপনার মতামত লিখুন :