মোহাম্মদ হোসেন : [২] সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক সড়কটি প্রশস্ততকরণ কাজের চলমান রয়েছে। ডিভাইডার না থাকায় যানবাহনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
[৩] অদক্ষ চালক, ফিটনেসহীন গাড়ি আর সাধারণ মানুষের অসচেতনতার ফলে নির্মাণাধীন এ সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ঠেকানো যাচ্ছে না। তরুণ ব্যবসায়ী মাঈনুদ্দিন বলেন, সড়কটি প্রশস্ত হওয়ার ফলে কিছু মানুষের
অসচেতনতা, মহাসড়কে অদক্ষ চালকের কারনে দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
[৪] তাছাড়া এ সড়কে ব্যাটারি চালিত রিকসা,অটো-রিকসা চলাচল করায় সড়কে ভয়াবহ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। অদক্ষ চালকের কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছেই।
[৫] ট্রাফিক পুলিশ জানায়, সড়ক দুর্ঘটনার অনেক কারণ রয়েছে। আমরা ট্রাফিক আইন প্রয়োগ ও মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছি। চওড়া সড়ক, ওই সড়ক দিয়ে কী ধরনের কত সংখ্যক যান চলাচল করবে, সেটি পথচারী চলাচলের উপযোগী কিনা ইত্যাদি ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থার মাধ্যমে সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিরাপদ যান চলাচল উপযোগী সড়ক তৈরি করার উদ্যোগ নিতে ভবিষ্যত সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটা কমিয়ে আসবে।
[৬] এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রায় ৪০ শতাংশ চালকেরই বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। আবার বৈধ লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন এমন চালকদের ৩১ শতাংশ কোনো অনুমোদিত ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণ নেননি। ফলে চালকদের বেশির ভাগই ট্রাফিক আইন সম্পর্কে জানা নেই।
[৭] এক সময় ঢাকা- চট্টগ্রাম-হাটহাজারী বিভিন্ন পরিবহন মুখোমুখি সংঘর্ষের ভয়াবহ চিত্র প্রায়শই খবরের কাগজের প্রথম পৃষ্ঠায় দেখতে পাওয়া যায়। যখন প্রধান মহাসড়ক ডিভাইডারসহ চার লেনে উন্নীত করা হলো, স্বাভাবিক ভাবেই ধরে নেওয়া হয় সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যাও কমে আসবে।
[৮] কিন্ত হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি মহাসড়কটি ডিভাইডার ছাড়া তিন লাইনে উন্নতি হচ্ছে এবং বিভিন্ন স্থানে কাজ
শেষ হয়েছে,সেখানে দ্রুতগামী গাড়ি চলাচল এবং ওভার টেক করার ফলে বেড়ে গেছে সড়ক দুর্ঘটনা। অনেকেই রাস্তা পার হওয়ার সময়ে দৌড়ে পার হওয়ার চেষ্টা করেন ও দুর্ঘটনার মুখে পড়েন।
[৯] গত কয়েক দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণহানিসহ বেশি ভাগ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
দুর্ঘটনার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিভিন্ন পেশার লোকজন বলেন, "দ্রুতগতির যানবাহন গুলো বেশির ভাগ সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং ওভারটেক করার সময় পেছন দিক থেকে ধীরগতির চলন্ত গাড়ি গুলোর সাথে সংঘর্ষ হয়।"
[১০] চ.বি শিক্ষার্থী জসিম উদ্দিন জানান, সড়কটি তিন লেইনের কাজ চলমান রয়েছে,যদি সম্পুর্ণ কাজ শেষ হয় তাহলে সড়ক দুর্ঘটনায় যতোষ্ট প্রাণহানির আশংকা রয়েছে তার কারন এ সড়কে ডিভাইডার নেই। কারন পথচলাচলকারীরা ৩৪ ফুট রাস্তাটি পার হতে গিয়ে দু’পাশে সঠিক ভাবে নজর রাখতে হবে।
[১১] ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে হাটহাজারী-নাজিরহাট-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের সাড়ে ৩২ কিলোমিটার অংশে ১৮ ফুট প্রস্থের সড়ককে ৩৪ ফুট প্রস্থে সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন করেছেন সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
[১২] সড়ক ও জনপথ সূত্রে জানা গেছে, ইস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (ইবিবিআইপি)-এর আওতায় সড়কটির উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ও র্যাব আর সি এ উন্নয়ন কাজ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন
করবে। প্রকল্পের অধীনে বর্তমানে বিদ্যমান ১৮ ফুট প্রস্থের সড়কটি সম্প্রসারণ করে ৩৪ ফুটে উন্নীত করা হবে। হাটহাজারী বাসস্টেশন জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে নাজিরহাট-ফটিকছড়ির হেয়াকো-মানিকছড়ি-মাটিরাঙা-খাগড়াছড়ি পর্যন্ত ৩২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সড়কটি তিন লেনে উন্নীত করা হবে।
[১৩] নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ (সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম) এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন,৩৪ফুট প্রসস্ত হাটহাজারী –খাগড়াছড়ি মহাসড়কটি নির্মাণ কাজ চলছে,তবে ডিভাইডার হবে না। ভবিষ্যত সড়কটি ৪ লাইনে উন্নতি হলে ডিভাইডার হবে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ