শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৮ জুন, ২০২১, ১২:২০ রাত
আপডেট : ০৮ জুন, ২০২১, ১২:২০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফজলুল বারী: রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে বাংলাদেশের কাছে এখন দুটি পথ খোলা, কী সেই পথ?

ফজলুল বারী : দিনে রাতে নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে বলেন আপনারা আওয়ামী লীগের জানের জান। আর সেই আপনারাই প্রায়ই রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে বেফাঁস স্ট্যাটাস কেনো দেনগো? ভুলে কি গেছেন এই শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কি বলেছিলেন? শেখ হাসিনা বলেছিলেন, শেখ রেহানা তাকে বলেছেন, তুমি ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারো এই কয়েক লাখ মানুষকে খাওয়াতে পারবে না। এরও আগে সীমান্তে তাদের গ্রহণ করছিলেন, জাতিসংঘ উদ্বাস্তু হাইকমিশনের কর্মকর্তা। তিনিও পুত্রবধূ। এরপর শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা যখন শরণার্থীদের কাছে চলে গেলেন তখন মায়ের মমতায় শেখ হাসিনা-শেখ রেহানা যখন তাদের কোলে জড়িয়ে ধরেছিলেন, তখন সেই ছবিগুলো নিয়ে একেকজন কি পোস্ট দিয়েছিলেন ভুলে গেছেন? এরপর দিনে রাতে লিখতেন মাদার অব হিউম্যানিটি। সেই খেতাবতো এখনও বহাল আছে ভাইগণ। খেতাবতো কেউ কেড়ে নেয়নি বা সে অবস্থাও হয়নি। কিন্তু আপনারা হঠাৎ হঠাৎ কেন বেফাঁস অবস্থা নেন?

বাংলাদেশ কিন্তু এই শরণার্থীদের দাওয়াত করে আনেনি। রোহিঙ্গারাও শখ করে বাংলাদেশে আসেনি। বাংলাদেশ আশ্রয় নেওয়ার কোনো দেশও নয়। ভারতে মুসলমানদের কতো সমস্যা হয়, তাদের কেউ কি কোনো দিন বাংলাদেশে এসেছেন? এই রোহিঙ্গারা যখন সাগরে ডুবে মারা যাচ্ছিলো, তখন বাংলাদেশ বাধ্য হয়ে তাদের আশ্রয় দেয়। বাংলাদেশে তারা থাকতেও চায় না। যে যেভাবে পারে চলে যেতে চায়। কিন্তু আপনি যেতেও দেন না। কোস্টগার্ড দিয়ে ধরে আনেন। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশে^ অর্জনও করেছে অনেক। এমন সব ফোরামে শেখ হাসিনা এখন দাওয়াত পান, বাংলাদেশ যা আগে পেতো না। বাংলাদেশের প্রতিটি পদক্ষেপ দেশে-বিদেশে দুর্নীতির কারণে সমালোচিত। শুধু রোহিঙ্গা ত্রাণ ছাড়া। সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন দক্ষতার সঙ্গে এই ত্রাণ-কার্যক্রম চালাচ্ছে। এসব নিয়ে কখনও কোনো দুর্নীতির অভিযোগ উঠেনি। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে প্রায় নানা সমস্যা হয়। কতো ছোট জায়গায় গাদাগাদি কতো মানুষ থাকেন। মানসিকভাবে কী তারা মোটেই ভালো আছেন? নিশ্চয়ই নয়। আপনি কীভাবে তাদের কাছে সুস্থ মানুষের আচরণ আশা করেন?

আপনারা কিছু আইডি দেখলে চমকে যাবেন। এরা শুধু রোহিঙ্গা নয়, ফিলিস্তিনিদেরও দেখতে পারে না। আসলে দেশহীন মানুষজনের বন্ধু কম হয় সবকালে সমসময়ে। একটু চিন্তা করেন তো একাত্তরে ভারত যদি আমাদের অস্ত্র-ট্রেনিং না দিতো তাহলে কী অবস্থা দাঁড়াতো আমাদের? রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ ভুল করেনি। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে এটাই করতেন। বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরসূরী তার মেয়েরাও ভুল করেনি। কারণ তারাও শরণার্থী জীবন কাটিয়েছেন। এই মূহুর্তে পৃথিবীতে রোহিঙ্গারাই প্রকৃত শরণার্থী। কারণ তাদের কোনো দেশ নেই। আর বাংলাদেশিরা নিজের দেশ থাকতে পৃথিবীর দেশে দেশে গিয়ে শরণার্থী সাজে। পৃথিবীর দেশে দেশে রোহিঙ্গারা এখন ঘৃণার পাত্র হওয়ার আরেক কারণ তাদের ধর্মীয় পরিচয়। এর জন্য ভারতের বর্তমান হিন্দু মৌলবাদীদের সরকার তাদের আশ্রয় দিতে রাজি হয়নি। হিন্দু রোহিঙ্গা যারা ঢলের সঙ্গে বাংলাদেশে চলে এসেছিলো তাদের চুপচাপ মিয়ানমারে তাদের বাড়িঘরে নিয়ে বসিয়ে দিয়েছে ভারত। বাংলাদেশের এই জানি দোস্ত রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘেও বাংলাদেশের পক্ষে নেই। এখন রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে বাংলাদেশের কাছে পথ আছে দুটি। তাদের তাড়িয়ে সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া অথবা বিভিন্ন দেশে পাঠানোর চেষ্টা করা। মাদার অব হিউম্যানিটি প্রথমটা করতে পারবেন না। দ্বিতীয় পন্থায় অগ্রসর হওয়ার মতো স্মার্ট আমলাতন্ত্র বাংলাদেশের নেই।

আটকেপড়া পাকিস্তানিদের একজনকেও বাংলাদেশ ফেরত পাঠাতে পারেনি। তাদের বুদ্ধিমানরা নিজেরা নিজেরা পাকিস্তানে বা বিভিন্ন দেশে চলে গেছেন। বাকিদের নাগরিকত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ। স্মার্ট রোহিঙ্গারাও বাংলাদেশ থাকবে না। কোনোভাবে এরা ইউরোপ-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছতে পারলেই আশ্রয় মাস্ট। কারণ উন্নত বিশ্ব জানে তাদের দেশ নেই। তাই তারা তাদের মিয়ানমারগামী বিমানে ডিপোর্ট করতে না পেরে আশ্রয় দেয়। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়