ইমরুল শাহেদ: চলচ্চিত্রের মর্যাদাপূর্ণ আসর কান চলচ্চিত্রের আঁ সার্তে রিগার্দ (আন সার্টেন রিগার্ত) বিভাগে স্থান পেয়েছে চলচ্চিত্রকার আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের দ্বিতীয় ছবি ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। এর আগে সাদ নির্মাণ করেছেন ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’। কানের প্রতিযোগিতা বিভাগের পরই এই বিভাগের স্থান। বাংলাদেশের কোনো ছবি এবারই প্রথম এতে জায়গা করে নিলো। অবশ্য এর আগে ২০০২ সালে তারেক মাসুদ পরিচালিত ‘মাটির ময়না’ এই মর্যাদাপূর্ণ উৎসবে মনোনয়ন পেয়ে একটি বিভাগে পুরস্কার জয় করে। ৬ জুলাই থেকে ফ্রান্সের কান শহরে এই উৎসব শুরু হবে।
এ ছবিটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন। তিনি বলেন, ‘আমাদের এতোদিনের কষ্ট আর অপেক্ষার ফলাফল আজ হাতে পেলাম। আমরা গর্বিত এই উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশনে বাংলাদেশ নামটি যুক্ত করতে পেরে। আমাদের সকল কষ্ট সার্থক।’ তিনি জানান গত সাড়ে তিন বছর থেকেই এ ছবিটি নিয়ে তারা স্বপ্ন দেখছেন।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় (বাংলাদেশ বিকাল ৩টায়) ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের ইউজিসি নর্ম্যান্ডি প্রেক্ষাগৃহে কান উৎসবের ৭৪তম আসরে নির্বাচিত ছবির তালিকা ঘোষণা করা হয়। এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন উৎসবের জেনারেল ডেলিগেট থিয়েরি ফ্রেমো ও সভাপতি পিয়েরে লেসকিউর। সংবাদ সম্মেলনটি সরাসরি দেখানো হয় কানের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে।
আয়োজকদের ঘোষণার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনন্দনে সিক্ত হচ্ছেন আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ। নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কী দারুণ খবর! ভালোবাসা রইলো সাদ।’ তার স্ট্যাটাস শেয়ার দিয়েছেন নির্মাতা আদনান আল রাজীব ও অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন।
আশফাক নিপুণের কথায়, ‘বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ও বাংলাদেশের জন্য কী অসাধারণ দিন! সাদ ও তার ছবির সদস্যদের জন্য অনেক অভিনন্দন। আপনারা আমাদের গর্বিত করেছেন।’
নূহাশ হুমায়ূন লিখেছেন, ‘বাংলা ভাষার ছবির জন্য এটি অবিস্মরণীয় খবর। এমন চমৎকার ব্যাপারের জন্য বাংলাদেশি হিসেবে গর্ব হচ্ছে।’
ছবিটির প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নির্মাতা জানান, প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের একজন শিক্ষক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করেই এই সিনেমার গল্প। যেখানে রেহানা একজন মা, মেয়ে, বোন ও শিক্ষক হিসেবে জটিল জীবনযাপন করে। এরমধ্যে এক সন্ধ্যায় কলেজ থেকে বেরোনোর সময় রেহানা একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী হয় রেহানা। এরপর থেকে সে এক ছাত্রীর পক্ষ হয়ে সহকর্মী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ঘটনার প্রতিবাদ করতে শুরু করেন এবং ক্রমশ একরোখা হয়ে ওঠেন। কিন্তু একই সময়ে তার ৬ বছর বয়সী মেয়ের বিরুদ্ধে স্কুল থেকে রূঢ় আচরণের অভিযোগ করা হয়। এমন অবস্থায় অনড় রেহানা তথাকথিত নিয়মের বাইরে থেকে সেই ছাত্রী ও তার সন্তানের জন্য ন্যয় বিচারের খোঁজ করতে থাকেন।
পোটোকল ও মেট্রো ভিডিও’র ব্যানারে ছবিটি প্রযোজনা করেছেন সিঙ্গাপুরের প্রযোজক জেরেমী চুয়া, নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক বাবু এবং সহ-প্রযোজনা করেছেন রাজীব মহাজন, আদনান হাবিব, সাঈদুল হক খন্দকার। ছবিটির সিনেমাটোগ্রাফার তুহিন তমিজুল। ১ ঘন্টা ৪৭ মিনিটের এই ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন আফিয়া জাহিন জাইমা, কাজী সামি হাসান, আফিয়া তাবাসসুম বর্ণ, ইয়াছির আল হক, সাবেরী আলমসহ অনেকে।
আপনার মতামত লিখুন :